বায়ুদূষণে নাজেহাল দিল্লিবাসী

বায়ুদূষণের ফলে দিল্লি এখনো ধোঁয়াশার চাদরে ঢাকা রয়েছে। সকাল ও রাতে যখন দূষণের পরিমাণ বাড়ে, তখন একটু দূরের জিনিসও দেখা যায় না। দেখা যায় শুধু ধোঁয়াশা। সেজন্য মঙ্গলবার সকালে আটটি বিমান হয় বাতিল করা হয়েছে বা অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হয়েছে। দিল্লিতে আসা অধিকাংশ ট্রেন বেশ কয়েক ঘণ্টা দেরিতে চলছে। একিউআই ছিল পাঁচশর বেশি।

বাড়ি থেকে বেরোলেই দূষণের প্রকোপ টের পাচ্ছেন দিল্লিবাসী। চোখ জ্বালা করছে। গলায় দূষণের প্রভাব টের পাওয়া যাচ্ছে। সর্দি-কাশি শুরু হয়ে যাচ্ছে। বাইরের থেকে দিল্লিতে এলে গলা জ্বালা করছে। মাথা ধরে যাচ্ছে। সবমিলিয়ে দিল্লির মানুষ এই ভয়ংকর বায়ুদূষণের ফলে নাজেহাল হয়ে যাচ্ছে।

ভারতের সুপ্রিম কোর্ট সোমবারই প্রশ্ন তুলেছিল, কেন দিল্লিতে বায়ুদূষণের মোকাবিলায় ব্যবস্থা নিতে দেরি করা হচ্ছে? তারপরই দিল্লির লাগোয়া দুই শহর নয়ডা ও গুরুগ্রামে নবম শ্রেণি পর্যন্ত সব ক্লাস অনলাইনে করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। দিল্লিতেও অনেক সরকারি অফিসে কাজের সময়ে সামান্য বদল আনা হয়েছে।

অবশেষে দূষণ নিয়ে নড়েচড়ে বসে রাজ্যের মুখ্যসচিবদের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। তারা বলেছে, এই দূষণের মোকাবিলায় রাজ্য সরকার যেন উদ্যোগী হয়। তারা স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে ঠিক করে রাখে। দূষণের জন্য শ্বাসযন্ত্রে দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা হতে পারে। এই বিষয়টি মাথায় রেখে হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে যেন উপযুক্ত চিকিৎসা ব্যবস্থা থাকে।

এদিকে দিল্লির দূষণ বাড়তে থাকার পরেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী আতিশি প্রায় প্রতিদিনই অভিযোগ করছেন, কেন্দ্রীয় সরকার কোনো ব্যবস্থাই নিচ্ছে না। দিল্লির প্রতিবেশী রাজ্যগুলিতে সমানে খড় পোড়ানো চলছে। কেন্দ্র তাদের কিছুই বলছে না। কেন্দ্রীয় স্তরেও দূষণ কমাবার কোনো উদ্যোগ চোখে পড়ছে না।

বিজেপি আবার পুরো দায় দিল্লির আম আদমি পার্টি (আপ) সরকারের উপর চাপিয়ে দিয়েছে। দিল্লির বিজেপি সভাপতি ও অন্য নেতারা নিয়মিত বিভিন্ন জায়গায় মাস্ক বিলি করছেন।

ভোরের দিকে বা রাতে হাইওয়েগুলিতে দৃ্শ্যমানতা খুবই কমে যাচ্ছে। মাঠ থেকে কুয়াশা উঠছে। দূষমের চাদরে তা আটকে যাচ্ছে। ফলে সামান্য দূরের জিনিসও দেখা যাচ্ছে না। এর ফলে নয়ডা এবং পশ্চিম উত্তরপ্রদেশে বিভিন্ন দুর্ঘটনায় দুইজন বাইক আরোহী মারা গেছেন এবং ৩৬ জনের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।

বুলন্দশহর ও মৈনপুরীতে ট্রাকের ধাক্কায় দুইজন বাইক আরোহীর মৃত্যু হয়েছে। দুইটি জায়গাতেই বাইক আরোহীকে ধোঁয়াশার জন্য ট্রাকচালক দেখতে পায়নি। ইস্টার্ন পেরিফেরিয়াল এক্সপ্রেসওয়েতে একটি ট্রাক খারাপ হয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়েছিল। একটি বাস ধোঁয়াশার মধ্যে ট্রাকটি দেখতে পায়নি। সেটি সোজা গিয়ে ট্রাকে ধাক্কা মারে। ১২ জন যাত্রী আহত হয়েছেন।

আগ্রার কাছে ফিরোজাবাদে এই একই কারণে পরপর ছয়টি গাড়ি একে অপরকে ধাক্কা মেরেছে। আগ্রা-লখনউ এক্সপ্রেসওয়েতেও একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। দুইটি ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। সূত্র: ডিডাব্লিউ, পিটিআই, এএনআই

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.