ডিসেম্বরের মধ্যে ৫.২৫ লাখ টন চাল আমদানি করবে সরকার

চলতি অর্থবছরে দেশে চালের দাম স্থিতিশীল রাখা ও পর্যাপ্ত খাদ্য মজুত নিশ্চিত করতে সরকার ১০.৫০ লাখ টন চাল আমদানির পরিকল্পনা করেছে। ডিসেম্বরের মধ্যে এই লক্ষ্যমাত্রার ৫০ শতাংশ চাল দেশে আনার পরিকল্পনা করছে খাদ্য মন্ত্রণালয়।

মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভিয়েতনাম ও মিয়ানমার থেকে সরকার-টু-সরকার (জিটুজি) চুক্তির মাধ্যমে চাল আমদানি করা হবে। এছাড়া, ভারত থেকে উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে চাল আমদানির প্রক্রিয়া শুরু করেছে সরকার।

খাদ্য সচিব মো. মাসুদুল হাসান গণমাধ্যমে জানান, ডিসেম্বরের মধ্যে বেসরকারি খাতের মাধ্যমে অন্তত ২ লাখ টন এবং জিটুজি চুক্তির মাধ্যমে আরও ৩ লাখ টন চাল আমদানি করা হবে।

কর্তৃপক্ষের মতে, স্থানীয় বাজারে চালের দাম সাম্প্রতিককালে বেড়েছে। আমন মৌসুম শুরু হলেও, চালের দাম বাড়ছে এবং সরকারি খাদ্য মজুতও কমে আসছে। এই সমস্যা মোকাবিলায় সরকার আমদানি শুল্ক ও কর সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করেছে, যাতে সরবরাহ বাড়ানো এবং পর্যাপ্ত মজুত নিশ্চিত করা যায়।

তবে এসব পদক্ষেপের পরও বাজারে চালের দামের ওপর প্রভাব পড়েনি, কারণ ব্যবসায়ীরা আমদানিতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না।

সম্প্রতি খাদ্য ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে খাদ্য সচিব মো. মাসুদুল হাসান জানান, বেসরকারি খাতে চাল আমদানির জন্য ১৩৪ জন ব্যবসায়ীকে ১০ দশমিক ৫২ লাখ টন চাল আমদানির লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে।

কিন্তু এখন পর্যন্ত মাত্র ৯ হাজার ৫০০ টন চালের জন্য এলসি (লেটার অব ক্রেডিট) খোলা হয়েছে এবং এই এলসির বেশিরভাগ চাল ইতোমধ্যে দেশে পৌঁছে গেছে বলে তিনি জানান।

কর্মকর্তারা জানান, ২৯ অক্টোবর ট্যারিফ কমিশন আন্তর্জাতিক বাজারে চালের মূল্যবৃদ্ধির বিষয়টি তুলে ধরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) ৬২ শতাংশ আমদানি শুল্ক মওকুফের সুপারিশ করে।

এরপর, ৩১ অক্টোবর অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ থেকে জারি করা এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সিদ্ধ ও আতপ চালের আমদানিতে সব শুল্ক তুলে দেওয়া হয়। এরপর খাদ্য মন্ত্রণালয় বেসরকারি খাতে চাল আমদানির জন্য ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত সময়সীমা নির্ধারণ করে।

খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার সংবাদ সম্মেলনে জানান, আন্তর্জাতিক বাজারে চালের দাম বেশ চড়া। এ কারণে মিয়ানমারসহ প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সরকারের চালের দাম কমানোর বিষয়ে আলোচনা চলছে।

বাংলাদেশের ভিয়েতনাম ও মিয়ানমারের সঙ্গে চাল আমদানির চুক্তি রয়েছে, যা আগের প্রশাসনের আমলে করা হয়েছিল। ভারতের সঙ্গেও একই ধরনের একটি চুক্তি করা হলেও, এখন তা শেষ হয়ে গেছে।

আলী ইমাম বলেন, বন্যার কারণে ফেনী, নোয়াখালীসহ কয়েকটি অঞ্চলে চাল উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রাথমিকভাবে কৃষি মন্ত্রণালয় ১০ লাখ টন উৎপাদন ঘাটতির আশঙ্কা করলেও, পরে সেটি কমিয়ে আনুমানিক ৬-৭ লাখ টন করা হয়।

অর্থসূচক/

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.