উপদেষ্টা ফারুকীর অপসারণ দাবিতে জাহাঙ্গীরনগরে বিক্ষোভ

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নতুন উপদেষ্টা নিয়োগের বিরুদ্ধে ক্ষোভ-বিক্ষোভ চলছেই। এবার সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা চলচ্চিত্র পরিচালক মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ হয়েছে। রোববার রাতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা এ বিক্ষোভ করেছেন।

বিক্ষোভকারীদের দাবি, মোস্তফা সরয়ার ফারুকী পতিত আওয়ামীলীগ সরকারের দোসর। বিভিন্ন সময়ে তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ নানা উপায়ে শেখ হাসিনা সরকারের প্রশংসা করেছেন, সমর্থন যুগিয়েছেন। এছাড়া সজীব ওয়াজেদ জয়ের ঘনিষ্ট সাবেক তথ্য প্রযুক্তিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলকসহ ফ্যাসিস্ট সরকারের একাধিক নেতার ঘনিষ্ট ছিলেন ফারুকী।

রোববার (১০ নভেম্বর) সরকার নতুন তিনজন উপদেষ্টা নিয়োগ করেছে। তারা হচ্ছেন-আকিজ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সেখ আকিজ উদ্দিনের সন্তান ব্যবসায়ী সেখ বশির উদ্দিন, চলচ্চিত্র পরিচালক মোস্তফা সরয়ার ফারুকী ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম। এদিন সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে তারা শপথ গ্রহণ করেন। এদের মধ্যে সেখ আকিজ উদ্দনকে শিল্প মন্ত্রণালয় এবং মোস্তফা সরয়ার ফারুকীকে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়।

নতুন উপদেষ্টা নিয়োগের খবরে রোববার সন্ধ্যায় সেখ বশির উদ্দিনকে উপদেষ্টা নিয়োগের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেন গণঅধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীরা। তারা বঙ্গবভনের সামনে অবস্থান নিয়ে ম্লোগান দিতে থাকেন।

গণঅধিকার পরিষদের অভিযোগ গণ অধিকার পরিষদের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, সেখ বশির উদ্দিন আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি আফিল উদ্দিনের ভাই। আফিল উদ্দিন ২০০৯ থেকে টানা চারবার আওয়ামী লীগের এমপি হিসেবে জয়ী হয়েছেন। এমন ব্যক্তির ভাইকে উপদেষ্টা পরিষদে কোনোভাবে মেনে নেয়া হবে না। কিসের ভিত্তিতে হাজারো প্রাণের বিনিময়ে আসা অন্তর্বর্তী সরকারে বশির উদ্দিনের ঠাঁই হলো, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেন দলটির নেতাকর্মীরা।

অন্যদিকে রোববার রাত সাড়ে ১০টায় মোস্তফা সরয়ার ফারুকীকে উপদেষ্টা নিয়োগের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একাংশ। তারা বটতলা এলাকা থেকে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে বটতলায় গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা।

বিক্ষোভে শিক্ষার্থীদের ‘আমার ভাই কবরে, মুজিববাদী সরকারে’, ‘মুজিববাদের গদিতে, আগুন জ্বালো একসঙ্গে’, ‘মুজিববাদ মুর্দাবাদ, ইনকিলাব জিন্দাবাদ’, ‘এক দুই তিন চার, ফারুকী তুই গদি ছাড়’ স্লোগান দিতে দেখা যায়।

সমাবেশের বক্তব্য বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জাবি শাখার সমন্বয়ক তৌহিদ সিয়াম বলেন, বিগত সরকার মুজিববাদকে পুঁজি করে একটি ফ্যাসিস্ট শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেছিল। সেই শাসনের প্রতীক হয়ে উঠেছিল ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়ি এবং টুঙ্গিপাড়ার মাজার। গণঅভ্যুত্থানের পর মোস্তফা সরয়ার ফারুকী ৩২ নম্বর বাড়ি সংস্কারের প্রস্তাব দিয়েছিলেন, যা আমাদের দৃষ্টিতে সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য। আমরা মনে করি, স্বাধীনতার পর সেই ভেঙে দেওয়া বাড়ি রেখে দেওয়া উচিত, যেন তা ফ্যাসিস্ট শাসন ভেঙে দেওয়ার প্রতীক হয়ে থাকে।

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.