ইউনিয়নের বোর্ড পুনর্গঠনের পরেও টাকা তুলেছে এস আলম গ্রুপ

দেশের বেশ কয়েকটি ব্যাংক দখলে রেখেছিলো বিতর্কিত এস আলম গ্রুপ। তবে রাজনৈতিক পট-পরিবর্তনের পর সেসব ব্যাংক দখলমুক্ত করা হয়। এস আলম গ্রুপকে হটিয়ে গত ২৭ আগস্ট ইউনিয়ন ব্যাংকে নতুন পর্ষদ গঠন করে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এরপরেও প্রভাব খাটিয়ে ব্যাংকটি থেকে টাকা তুলে নিয়েছে।

সম্প্রতি আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংকের এক পরিদর্শনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।

পরিদর্শন দল দেখতে পায়, চট্টগ্রামভিত্তিক ব্যবসায়িক গ্রুপ এস আলম ও এর সহযোগী কোম্পানিগুলো কেলেঙ্কারি ও অনিয়মের মাধ্যমে ইউনিয়ন ব্যাংক থেকে ১৭ হাজার ২২৯ কোটি ১০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে, যা মোট বিতরণকৃত ঋণের ৬৭ শতাংশ।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ইউনিয়ন ব্যাংকের আর্থিক বিবরণীর ভিত্তিতে পরিদর্শন পরিচালনা করে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকটির বকেয়া ঋণের পরিমাণ ছিল ২৫ হাজার ৫০৭ কোটি টাকা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিদর্শন প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউনিয়ন ব্যাংকের পান্থপথ শাখা প্রধান কার্যালয়ের কোনো অনুমোদন ছাড়াই এক গ্রাহককে ১১৮ কোটি ৬৩ লাখ টাকা ঋণ দিয়েছে।

পরিদর্শন দল অ্যাকাউন্ট খোলার ফর্মে একটি মোবাইল ফোন নম্বর খুঁজে পেলেও সেটি বন্ধ ছিল। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্যাংকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী যে গ্রাহক ঋণ পেয়েছেন তিনি এস আলম গ্রুপের একজন কর্মচারী।

ইউনিয়ন ব্যাংক এস আলম গ্রুপের ২৪৭ জন সুবিধাভোগীকে ১১ হাজার ৪২৩ কোটি টাকা ঋণ অনুমোদন করেছে। এখন কোম্পানিগুলোর বকেয়া ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৭ হাজার ২২৯ কোটি টাকা।

গত ২৭ আগস্ট বেসরকারি খাতের ইউনিয়ন ব্যাংকের পর্ষদ পুনর্গঠন করেছে আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক। এর আগে এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে ছিলো ব্যাংকটি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা যায়, গত আগস্টে এস আলমের ভাই মো. রাশেদুল আলম চট্টগ্রামের কদমতলী শাখা থেকে ৮ কোটি টাকা উত্তোলন করে বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করেন; এস আলমের আত্মীয় আরশাদ মাহমুদ চট্টগ্রামের লিচুবাগান শাখা থেকে ৪ কোটি ২২ লাখ টাকা উত্তোলন করেছেন। এ ছাড়াও এস আলম গ্রুপের একটি ট্রেডিং হাউস খাতুনগঞ্জ ও আগ্রাবাদ শাখা থেকে ১২ কোটি ২৯ লাখ টাকা উত্তোলন করেছে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তদন্তে উঠে এসেছে।

ব্যাংকটির কর্মকর্তারা বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা লঙ্ঘন করে অর্থ উত্তোলন এবং স্থানান্তর করতে সহায়তা করেছিলেন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

অর্থসূচক/ মো. সুলাইমান/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.