ভারত-চীন সীমান্তে বিরোধ মিটিয়ে ফেলার ঘোষণা

সীমান্ত এলাকার বিরোধপূর্ণ ভূখণ্ড নিয়ে দীর্ঘসময় ধরে ভারত-চীন সম্পর্কে টানাপোড়েন চলছে। অবশেষে এই বিবাদের অবসান ঘটেছে। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ভারত ও চীনের কূটনীতিক এবং সামরিক মধ্যস্থতাকারীরা বিভিন্ন ফোরামে আলোচনা করেছেন। এসব আলোচনার ফলে ভারত-চীন সীমান্তের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় দুই দেশের টহল ও যেসব বিষয় নিয়ে ২০২০ সাল থেকে বিরোধের সৃষ্টি হয়েছিল, সেগুলোর বিষয়ে দুই দেশ একমত হতে সক্ষম হয়েছেন বলে এমনটাই জানিয়েছে দুই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) ভারতের গণমাধ্যম দ্য হিন্দু এই তথ্য জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ভারত ও চীন প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলএসি) সংশ্লিষ্ট ভূখণ্ডে ‘টহল বন্দোবস্ত’ ও এ অঞ্চলে দুই দেশের সেনা মোতায়েন সংক্রান্ত অচলাবস্থার অবসান ঘটেছে।

নয়াদিল্লি এই ঘটনাকে ‘অভাবনীয়’ বলে উল্লেখ করে তারা জানান, এই উদ্যোগে দেমচক ও দেপসাং অঞ্চলে বিদ্যমান বিরোধের অবসান হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ব্রিকস সম্মেলনে যোগ দিতে রাশিয়া গেছেন। তার এই সফরকে ঘিরে আয়োজিত গণমাধ্যম ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিসরি এই ঘোষণা দেন। ব্রিকস সম্মেলনে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংও যোগ দেবেন।

বিক্রম মিসরি বলেন, গত কয়েক সপ্তাহে ভারত ও চীনের কূটনীতিক ও সামরিক মধ্যস্থতাকারীরা বিভিন্ন ফোরামে আলোচনা করেছেন। এসব আলোচনার ফলে ভারত-চীন সীমান্তের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় দুই দেশের টহল ও যেসব বিষয় নিয়ে ২০২০ সাল থেকে বিরোধের সৃষ্টি হয়েছিল, সেগুলোর বিষয়ে দুই দেশ একমত হতে সক্ষম হয়েছে। দুই দেশ এখন ‘পরবর্তী উদ্যোগগুলো’ নিতে শুরু করবে।

কয়েক ঘণ্টা পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এই চুক্তির গুরুত্ব তুলে ধরে জানান, ২০২০ সালের আগে সীমান্তে যেভাবে টহল কার্যক্রম পরিচালনা করা হতো, এখন আবারও তা শুরু হবে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই ঐক্যমত ও চুক্তির বিষয়ে বিস্তারিত জানায়নি। এমন কী, টহলের প্রয়োজনে বাফার জোন অব্যাহত থাকবে কী না, সেটাও জানানো হয়নি।

এনডিটিভিকে দেওয়া আলাদা সাক্ষাৎকারে জয়শঙ্কর বলেন, ‘২০২০ সালে পরিস্থিতি যেমন ছিল, এখন আমরা আবারও সে পর্যায়ে ফিরে গেছি। এর মাধ্যমে আমি বলতে পারি, চীনের সঙ্গে সীমান্তে বিরোধের অবসান ঘটেছে।’

এর আগে ভারত সরকার জানিয়েছিল, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় স্বাভাবিক পরিস্থিতি তখনই ফিরে আসবে, যখন চীন তাদের সেনা সরিয়ে নেবে।

ব্রিকস সম্মেলন শুরুর ঠিক এক দিন আগে মোদি-শি’র বৈঠকের বিষয়টি মোটামুটি নিশ্চিত হয়েছে বলে মত দিয়েছেন বিশ্লেষকরা।

২০১৪ থেকে ২০২০ সালের মাঝে ১৪ বার মোদি-শি’র দেখা হয়েছে। ২০২২ সালে গালওয়ান উপত্যকার সংঘাতের পর মাত্র দুই বার এই দুই নেতা বৈঠক করেন। ঐ ঘটনায় ২০ ভারতীয় সেনা ও চার চীনা সেনা নিহত হয়েছিলেন।

এক নিয়মিত ব্রিফিংয়ে মঙ্গলবার চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লি জিয়ান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘ভারত-চীন সীমান্তের বিরোধিতাপূর্ণ বিষয়গুলোর সমাধানে দুই দেশ একমত হয়েছে।’

অর্থসূচক/এএকে/

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.