জলবায়ু ও পরিবেশ খাতে ব্যাংকগুলোর সিএসআর ব্যয় কমেছে ৫০ শতাংশ

চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে (জানুয়ারি-জুন) জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ সংরক্ষণ খাতে দেশের ব্যাংকগুলোর কর্পোরেট সোশ্যাল রেসপন্সিবিলিটি (সিএসআর) ব্যয় উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।

তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের জুলাই-ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে ব্যাংকগুলো জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ সংরক্ষণ খাতে সিএসআর ব্যয় করেছিলো ১৪ কোটি ৩২ লাখ টাকা। এর পরের ছয় মাসে আলোচ্য এ খাতে ব্যাংকগুলো ব্যয় করেছে ৭ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। অর্থাৎ এ সময়ের মধ্যে জলবায়ু ও পরিবেশ খাতে ব্যাংকগুলো সিএসআর ব্যয় কমেছে ৫০ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত দেশের ৬১টি ব্যাংকের সিএসআর ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৩০৯ কোটি টাকা, যা গত বছরের শেষ ৬ মাসে ছিল ৩৫৩ কোটি টাকা।

ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, বর্তমানে ব্যাংকিং খাত বেশ কয়েকটি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে। যার মধ্যে আছে- উচ্চ খেলাপি ঋণ, তারল্য ঘাটতি ও সুশাসনের অভাব। এসব কারণে সিএসআর কমেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জুন শেষে খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে দুই লাখ ১১ হাজার ৩৯১ কোটি টাকা, যা বিতরণ করা ঋণের ১৬ লাখ ৮৩ হাজার ৩৯৬ কোটি টাকার ১২ দশমিক ৫৬ শতাংশ। শুধু তাই নয় গত ১৬ বছরের মধ্যে বিতরণ করা ঋণ ও খেলাপি ঋণের সর্বোচ্চ অনুপাত এটি।

বেসরকারি দি প্রিমিয়ার ব্যাংক চলতি বছরের প্রথমার্ধে সর্বোচ্চ সিএসআর ব্যয় করেছে ৪৬ কোটি টাকা। এক্সিম ব্যাংক ব্যয় করেছে ২৭ কোটি টাকা। আর ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ সিএসআর-সংক্রান্ত ব্যয় করেছে মাত্র ২৬ কোটি টাকা।

এছাড়া আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক ২০ কোটি টাকা, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক ১৮ কোটি টাকা, যমুনা ব্যাংক ১৭ কোটি টাকা, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক ১৩ কোটি টাকা এবং মার্কেন্টাইল ব্যাংক ১০ কোটি টাকা ব্যয় করেছে।

নির্দেশনা অনুযায়ী, ব্যাংকগুলোকে তাদের সিএসআর তহবিলের ৩০ শতাংশ শিক্ষাখাতে, ৩০ শতাংশ স্বাস্থ্যসেবায় ও ২০ শতাংশ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন খাতে বিনিয়োগ করতে হবে।

এছাড়া তাদের সিএসআর তহবিলের পাঁচ শতাংশ প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টে পাঠাতে হবে।

চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ব্যাংকগুলো স্বাস্থ্যসেবা খাতে প্রায় ৭২ কোটি টাকা, শিক্ষা খাতে সাড়ে ৬৩ কোটি টাকা এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন খাতে ৭ কোটি ৩৫ লাখ টাকা ব্যয় করেছে। বাকি ১৬৬ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে অন্যান্য খাতে।

অর্থসূচক/এমএইচ/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.