বিশ্বব্যাপী ট্রেডিং অ্যাপের জনপ্রিয়তা এবং বাংলাদেশে এর প্রভাব

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ট্রেডিং অ্যাপগুলো বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়তা পেয়েছে, এবং এর মাধ্যমে মানুষ পুঁজিবাজারের সাথে আরও সহজে এবং দ্রুত যুক্ত হতে পারছে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে শুরু করে বাংলাদেশের মতো উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলোতেও এই অ্যাপগুলো বিপ্লব ঘটাচ্ছে। স্মার্টফোনের মাধ্যমে শেয়ার কেনা-বেচা, পোর্টফোলিও ব্যবস্থাপনা এবং বাজারের তথ্য জানার সুযোগ থাকায় এই ডিজিটাল ট্রেডিং প্ল্যাটফর্মগুলো বিনিয়োগকারীদের কাছে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।

ট্রেডিং অ্যাপগুলোর ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতার অন্যতম কারণ হলো এর ফিচার এবং সহজলভ্যতা। পুঁজিবাজারে প্রবেশাধিকারকে এই অ্যাপগুলো সবার জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছে। বর্তমানে যেকোনো মানুষ তার স্মার্টফোনের মাধ্যমে শেয়ার কেনা-বেচা করতে পারছে, যা তরুণ এবং প্রযুক্তি সচেতন বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করছে। ২০২২ সালে অ্যালাইড মার্কেট রিসার্চ-এর একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, ২০৩১ সালের মধ্যে অনলাইন ট্রেডিং মার্কেটের আকার $১৮.৪ বিলিয়নে পৌঁছাবে এবং এই সেক্টরে ৭.৮% বার্ষিক প্রবৃদ্ধি হবে।

বিভিন্ন দেশে ট্রেডিং অ্যাপগুলোর বিস্তার পুঁজিবাজারে ব্যক্তিগত বিনিয়োগকারীদের ভূমিকা বাড়িয়ে তুলেছে। যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান, ম্যাককিনসে-এর ২০২১ সালের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে আমাদের পাশের দেশ, ভারতে ২০১৯ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে অ্যাপনির্ভর বিনিয়োগকারীদের সংখ্যা ৫০% বৃদ্ধি পেয়েছে। আগামী ৫ বছরে বাংলাদেশেও এই ধরণের প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে বাজারে বিনিয়োগকারীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। বাংলাদেশে বর্তমানে প্রায় ১৭ লাখ সক্রিয় বিও হিসাব (বেনেফিসারি ওনার্স) রয়েছে, তবে সক্রিয়ভাবে অ্যাপের মাধ্যমে শেয়ার ট্রেডিং করা লোকের সংখ্যা খুবই কম। এমতাবস্থায়, শান্তা ইজিট্রেড-এর মতো অ্যাপগুলো এই ফাঁক পূরণ করতে সামনে এগিয়ে আসছে।

শান্তা ইজিট্রেড অ্যাপটি বাংলাদেশী বিনিয়োগকারীদের জন্য বিশেষভাবে তৈরি করা হয়েছে। এই অ্যাপটি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (DSE) এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (CSE)-এ সরাসরি শেয়ার কেনা-বেচার সুযোগ দেয়। এছাড়াও, ইনভেস্টমেন্ট পোর্টফোলিও ম্যানেজ করা, নির্দিষ্ট কোনো স্টকের নিউজ দেখা, সর্বশেষ ৫২ সপ্তাহে শেয়ারের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন মূল্য দেখা, বিভিন্ন টেকনিক্যাল চার্ট এবং রিয়েল-টাইম ডেটা সরবরাহের মাধ্যমে এই অ্যাপ ব্যবহারকারীদের বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে সহায়তা করে।

শান্তা ইজিট্রেড অ্যাপটি নিরাপত্তার দিকেও বিশেষ গুরুত্ব দেয়। অ্যাপটি উন্নত এনক্রিপশন প্রযুক্তি ব্যবহার করে ব্যবহারকারীদের তথ্য এবং লেনদেন সুরক্ষিত রাখে। এছাড়াও, বায়োমেট্রিক প্রযুক্তি এবং মাল্টি-ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন ব্যবহারকারীদের অ্যাকাউন্টকে অবাঞ্ছিত প্রবেশ থেকে রক্ষা করে। মোবাইল-অপ্টিমাইজড ডিজাইনের মাধ্যমে, অ্যাপটি নবীন ও অভিজ্ঞ উভয় বিনিয়োগকারীর জন্যই সহজেই ব্যবহারযোগ্য। এই ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং ব্যবহারকারীদের জন্য সহজলভ্যতার কারণে শান্তা ইজিট্রেড বাংলাদেশে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম হয়ে উঠেছে।

বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে ট্রেডিং অ্যাপগুলোর প্রবৃদ্ধি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। শান্তা ইজিট্রেড-এর মতো প্ল্যাটফর্মগুলো শুধু বিনিয়োগকারীদের পুঁজিবাজারে অংশগ্রহণের সুযোগই তৈরি করছে না, বরং দেশের আর্থিক অন্তর্ভুক্তিকেও (financial inclusion) এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশে ট্রেডিং অ্যাপগুলোর ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তা দেশের অর্থনীতিকে বৈশ্বিক পর্যায়ে উন্নীত করতে সহায়তা করছে, এবং পুঁজিবাজারে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণের মাধ্যমে দেশের আর্থিক ব্যবস্থার স্থিতিশীলতা ও বিকাশ নিশ্চিত করতে সহায়তা করবে।

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.