ইরান ও ইরান সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্টীগুলোর আক্রমন থেকে ইসরায়েলকে রক্ষার জন্য ক্ষেপণাস্ত্র–প্রতিরোধী ব্যবস্থা ও তা চালাতে সেনা পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
রবিবার (১৩ অক্টোবর) পেন্টাগনের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
পেন্টাগন বলেছে, দূরপাল্লার ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্রবিধ্বংসী ব্যবস্থা ও সামরিক ক্রু পাঠানো হচ্ছে।
পেন্টাগনের প্রেসসচিব প্যাট রাইডার এক বিবৃতিতে বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের নির্দেশ অনুযায়ী টার্মিনাল হাই–অ্যাল্টিটিউড এরিয়া ডিফেন্স (থাড) ব্যাটারি মোতায়েন ও সামরিক সদস্যদের ইসরায়েলে পাঠানো হচ্ছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জানান, ‘ইসরায়েলকে সুরক্ষা দিতে’ সেনা ও প্রতিরক্ষাব্যবস্থা মোতায়েনের এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ১ অক্টোবর প্রায় ইসরায়েল অভিমুখে প্রায় ১৮০টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে ইরান। এই হামলার জবাব দিতে ইসরায়েলের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।
কর্মকর্তাদের মতে, যুক্তরাষ্ট্র চাইছে ইসরায়েল এমন ভাবে ইরানের হামলার জবাব দিক, যাতে মধ্যপ্রাচ্যে বড় আকারে সংঘাতের বিস্তার এড়ানো যায়। ইতোমধ্যে ইরানের পারমাণবিক শক্তি উৎপাদনের অবস্থানগুলোতে হামলার বিরোধিতা করেছেন বাইডেন। এমন কী, জ্বালানি উৎপাদনকেন্দ্রে হামলার বিষয়ে তিনি তার উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন।
অপরদিকে ইরান কঠোর হুশিয়ারি দিয়েছে, দেশটির ওপর আর কোনো হামলা এলে কড়া জবাব দেবে তারা।
পেন্টাগনের মুখপাত্র মেজর জেনারেল প্যাট্রিক রাইডার জানান, গত কয়েক মাস ধরেই মার্কিন সেনাবাহিনী ইরান ও ইরান সমর্থিত সংগঠনের হামলা থেকে ইসরায়েলকে সুরক্ষা দিতে বেস কিছু উদ্যোগ নিয়েছে।
সেনা ও প্রতিরক্ষাব্যবস্থা মোতায়েনের সাম্প্রতিক এই উদ্যোগকে নিয়মিত কার্যক্রমের অংশ হিসেবেই বর্ণনা করেন তিনি।
তবে যৌথ মহড়া ছাড়া ইসরায়েলে মার্কিন সেনা মোতায়েনের ঘটনা বেশ বিরল। বিশেষত, ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর শক্তিমত্তার বিচারে। সাম্প্রতিক সময়ে মার্কিন সেনারা ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীকে রণতরী ও যুদ্ধবিমানের মাধ্যমে সহায়তা দিয়েছে। তবে এসব কার্যক্রম ইসরায়েলের বাইরে থেকে পরিচালিত হয়েছে।
তবে সরাসরি ইসরায়েলি ভূখণ্ডে সেনা মোতায়েনের ঘটনা গত এক বছরের সংঘাতের মধ্যে এটাই প্রথম।
থাড (টিএইচএএডই) বা টার্মিনাল হাই অলটিচিউড এরিয়া ডিফেন্স সিস্টেম যুক্তরাষ্ট্রের আকাশ হামলা প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ইসরায়েলের ‘আয়রন ডোম’ ইতোমধ্যে বেস কার্যকর আকাশ হামলা প্রতিরক্ষাব্যবস্থা হিসেবে স্বীকৃত। এর সঙ্গে থাড যোগ হলে ইসরায়েল ‘দুর্ভেদ্য’ হবে বলেই ভাবছেন বিশ্লেষকরা।
একটি থাড ব্যাটারি পরিচালনা করতে অন্তত ১০০ সেনা প্রয়োজন হয়। এতে ছয়টি মিসাইল লঞ্চারসহ ট্রাক রয়েছে। প্রতিটি লঞ্চাহের আটটি ইন্টারসেপ্টর ও একটি শক্তিশালী রাডারযুক্ত থাকে।
রোববার ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি যুক্তরাষ্ট্রের এই উদ্যোগের প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র বিধ্বংসী ব্যবস্থা পরিচালনার মার্কিন সেনাদের পাঠিয়ে যুক্তরাষ্ট্র তাদের জীবনকে ঝুঁকির মুখে ফেলছে।’
‘আমরা এ অঞ্চলে সর্বাত্মক যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে অসামান্য উদ্যোগ নিয়েছি। তবে আমি স্পষ্ট করে বলছি, আমাদের স্বার্থ ও জনগণকে সুরক্ষিত রাখতে কোনো লাল রেখা (সীমারেখা) টানবো না’, যোগ করেন তিনি।
অর্থসূচক/ এএকে



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.