বুরকিনা ফাসোতে আল-কায়েদা সংশ্লিষ্ট একটি জঙ্গিগোষ্ঠী কয়েক ঘণ্টার মধ্যে গুলি চালিয়ে ৬০০ জনকে হত্যা করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে গত আগস্ট মাসে দেশটির একটি শহরে কিন্তু দীর্ঘ দিন গণমাধ্যমে এ তথ্য আসতে দেওয়া হয় নাই।
শুক্রবার (৪ অক্টোবর) মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিএনএনের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
ফরাসি নিরাপত্তা মূল্যায়ন অনুসারে সিএনএন’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আল-কায়েদা-সংশ্লিষ্ট জঙ্গি গোষ্ঠী জামা’আত নুসরাত আল-ইসলাম ওয়াল-মুসলিম’র (জেএনআইএম) হামলায় নিহতের সংখ্যা প্রায় ৬০০ জন।
যাদের সবাই বেসামরিক নাগরিক এবং বেশিরভাগই নারী ও শিশু। তবে জাতিসংঘের অনুমান সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর হামলায় ২০০ জন নিহত হয়েছে।
হত্যাকারী গোষ্ঠী জেএনআইএমেরও দাবি, তারা দেশটির সেনাবাহিনীর সাথে যুক্ত বিভিন্ন গোষ্ঠীর ৩০০ জন সদস্যকে হত্যা করেছে। নিহতদের কেউই বেসামরিক নয়।
তবে হত্যাকাণ্ড থেকে বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিরা জানান, সেনাবাহিনীর নির্দেশ অনুযায়ী বারসালাঘোর শহরের চারপাশে একটি বিশাল পরিখা খনন করছিলেন তারা। সে সময়ই জেএনআইএমের বন্দুকধারীরা হামলা চালায়। সাম্প্রতিক দশকগুলোর মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক ও ভয়াবহ হামলার মুখোমুখি হয়েছে আফ্রিকার দেশ বুরকিনা ফাসো। জামা’আত নুসরাত আল-ইসলাম ওয়াল-মুসলিম (জেএনআইএম)-এর জঙ্গিরা মালি ভিত্তিক আল কায়েদার সহযোগী এবং বুরকিনা ফাসোতে সক্রিয়।
হামলা থেকে বেঁচে যাওয়া এক ব্যক্তি জানান, হামলাকারীরা মোটরসাইকেল দিয়ে এসে গুলি চালিয়ে গ্রামবাসীদের হত্যা করেছিল। এই হামলায় তার পরিবারের দুই সদস্য নিহত হয়েছেন। তিন দিন পর তাঁদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সোশ্যাল মিডিয়াতে জেএনআইএম’র অ্যাকাউন্টগুলো থেকে পোস্ট করা গত ২৪শে আগস্টের হামলার বেশ কয়েকটি ভিডিও অনুসারে, পরিখার মধ্যে পড়ে থাকা মৃতদের মধ্যে অনেকেই নারী ও শিশু। ভিডিও ফুটেজে স্বয়ংক্রিয় বন্দুকের আওয়াজ এবং ভিকটিমদের চিৎকারের শোনা যাচ্ছিল।
জঙ্গিদের থেকে নিরাপদে থাকতে সম্প্রতি বারসালোঘো শহরে পরিখা খননের নির্দেশ দিয়েছিল বুরকিনা ফাসোর সেনাবাহিনী। সেখানেই ভয়ঙ্কর এই ঘটনা ঘটে এবং মৃতের সংখ্যা ফরাসি সরকারের মূল্যায়নে নিশ্চিত করা হয়েছে।
মালি, বুর্কিনা ফাসো এবং নাইজারজুড়ে একের পর এক অভ্যুত্থানের ফলে ফরাসি ও আমেরিকান বাহিনী সেখান থেকে চলে যায়। এর পরেই পরিস্থিতি আরো খারাপ হচ্ছে। ফরাসি নিরাপত্তা এক কর্মকর্তার সিএনএন-কে দেওয়া মূল্যায়নে বলেছে, ‘দেশটির জান্তাদের দখল জোরদার করার জন্য রুশ ভাড়াটে বাহিনী তলব করলেও একটি শূন্যতা রয়ে গেছে, ফলে সেখানে জিহাদিরা সক্রিয় হয়ে উঠেছে।’
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেসামরিক জনসংখ্যা বা প্রতিরক্ষা এবং নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে বড় আকারের মারাত্মক আক্রমণ কয়েক সপ্তাহ ধরে এমন হারে ঘটছে, যা থেকে বোঝা যাচ্ছে সরকার টেকসই নয়। ফরাসি কর্মকর্তা সিএনএনকে বলেন, বুরকিনা ফাসোতে নিরাপত্তা পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য অবনতি হয়েছে। যেখানে সশস্ত্র-সন্ত্রাসী দলগুলো ক্রমবর্ধমান স্বাধীনতা উপভোগ করছে। এর কারণ নিরাপত্তা বাহিনী মোকাবেলা করতে অক্ষম।
অর্থসূচক/ এএকে



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.