পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়েতে তিন বছরে বন্ধ ২৩ ট্রেন

নানাবিধ সংকটে গত তিন বছরে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের ২৩টি ট্রেন বন্ধ ঘোষণা করেছে রেল কর্তৃপক্ষ। যাত্রীখাতে অতিরিক্ত লোকসান, ক্রু, গার্ড ও ইঞ্জিন সংকটসহ বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে এসব ট্রেন বন্ধ রাখা হয়। তবে যাত্রীদের দাবি রেল সেবা নির্বিঘ্ন রাখতে প্রতিটি ট্রেন চালু খুবই জরুরী।

গত ২৮ সেপ্টেম্বর রেল পশ্চিমাঞ্চলের সহকারী চীফ অপারেটিং সুপারিনটেনডেন্ট আব্দুল আওয়াল স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে ট্রেন বন্ধের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সিরাজগঞ্জ বাজার স্টেশন ভাংচুর ও অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় কারণে গত ১৫ আগস্ট থেকে সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেন বন্ধ রাখা হয়েছে। এছাড়াও যাত্রীখাতে আয় কম হওয়ার কারণে চন্দনা/ভাঙ্গা কমিউটার ও উত্তরা এক্সপ্রেস ট্রেন এবং নাশকতা এড়াতে ঈশ্বরদী-ঢাকা রুটের লোকাল-৫৬৩/৫৬৪ বন্ধ রাখা হয়।

এদিকে ট্রেনের কোচ, ইঞ্জিন ও ক্রু এর অভাবে লোকাল-৫১৫, লোকাল-৫১১/৫১২, লোকাল-৫৪১/৫৪২, লোকাল-৫৯১/৫৯২, লোকাল-৪১১/৪১২, লোকাল-৪৫৩/৪৫৪, লোকাল-৪৩১/৪৩৪, লোকাল-৪৮১/৪৮২, লোকাল-৪১৫/৪১৬/৪২১/৪২২, মিশ্র-৪৫১/৪৫২, মিশ্র-৪৩২/৪৩৩, মিশ্র-৪১৩/৪১৪, উত্তরবঙ্গ মেইল ও পার্বতীপুর কমিউটার বন্ধ রাখা হয়। এছাড়া আন্ডার রিপিয়ার থাকার কারণে রংপুর কমিউটার ও পঞ্চগড় কমিউটার বন্ধ রাখা হয়।

তবে এসব ট্রেন বন্ধ থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন শ্রমজীবী ও স্বল্প আয়ের মানুষ। যাত্রীর চাপ বেড়েছে অন্য লোকাল ও কমিউটার ট্রেনে। আবার অনেককে যাত্রা করতে হচ্ছে দাঁড়িয়ে। আন্তঃনগর ট্রেনগুলোতেও বাড়ছে যাত্রীর ভিড়।

ঈশ্বরদী যাওয়ার জন্য রাজশাহী স্টেশনে আসা যাত্রীরা বলেন, আগের ট্রেনগুলো চালু থাকলে আমরা বসে বসে যেতে পারতাম। আমাদের জন্য খুব উপকার হত, কিন্তু এখন ট্রেন বন্ধ। বাধ্য হয়ে আন্তঃনগর ট্রেনগুলোতে যেতে হয় আমাদের। কিন্তু এসব ট্রেনে খুব বেশি সিট থাকে না। যে কারণে টিকিট কেটেও দাঁড়িয়ে যেতে হয়।

রেল পশ্চিমাঞ্চলের সহকারী চীফ অপারেটিং সুপারিনটেনডেন্ট আব্দুল আওয়াল বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, অনেক দিন থেকেই এগুলো বন্ধ আছে। ইঞ্জিন ও লোকমেটিভ (ট্রেন চালকের) সংকটের কারণে এগুলো বন্ধ আছে। মূলত রেলওয়ের প্রধান অফিস থেকে এগুলোর পরিসংখ্যান চেয়েছে। সেজন্যই এগুলোর তালিকা পাঠানো হয়েছে। আমরাও চাই বন্ধ ট্রেনগুলো চালু হোক।

রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জামাত খান বলেন, যত আইনকানুন আর বাধাবিপত্তি আসে গরিবদের উপর। সবাই তাদের উপরই জোর খাটায়। অবাক করার বিষয়, যে কারণে ট্রেনগুলো বন্ধ হয়েছে একই কারণে কিন্তু কোনো আন্তঃনগর ট্রেন বন্ধ করা হয় নি। বরং তাদের সেবার মান বাড়ানো হয়েছে। আর উল্টো গরিব-শ্রমজীবীদের ভরসা এসব লোকাল ট্রেনে। তাই অতি দ্রুত সকল বন্ধ ট্রেন চালুর জোর দাবি জানাই।

অর্থসূচক/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.