প্রথম চার দিন মিলিয়ে খেলা হয়েছে মাত্র ১২০ ওভার। তবুও ম্যাচটি সাত উইকেটে জিতল ভারত। শেষ দিনে কিছুটা কঠিন পরীক্ষা দিলো বাংলাদেশ। দুই উইকেটে ২৬ রান নিয়ে শেষ দিন শুরু করে প্রথম সেশন ব্যাটিং করে ১৪৬ রানে অলআউট হয়েছে নাজমুল হোসেন শান্তর দল। সাদমান ইসলাম, শান্ত এবং মুশফিকুর রহিম ছাড়া এ দিন লড়তে পারেননি কেউই। ভারতকে ৯৫ রানের লক্ষ্য দেয় দলটি। সহজেই সেই লক্ষ্য তাড়া করে ভারত। ফলে ২-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ হলো বাংলাদেশ।
লক্ষ্য তাড়া করতে নামা ভারতের ইনিংসের তৃতীয় ওভারেই উইকেট পায় বাংলাদেশ। রোহিত শর্মাকে ফেরান মেহেদী হাসান মিরাজ। আগ্রাসী খেলতে থাকা রোহিত সুইপ শটে বাউন্ডারি পার করতে চেয়েছিলেন, হাসান মাহমুদের মুঠোবন্দী হয়ে ফিরে যান তিনি। সাত বলে আট রান আসে তার ব্যাটে। শুভমান গিলকেও স্থায়ী হতে দেননি মিরাজ। তাকে লেগ বিফোর উইকেটের ফাঁদে ফেলেন এই স্পিনার। রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি গিল। ১০ বলে ৬ রান করে ফিরে যান তিনি। এরপর বিরাট কোহলিকে সঙ্গে নিয়ে সহজেই দলকে জেতান ইয়াশভি জায়সাওয়াল। ৪৩ বলে হাফ সেঞ্চুরি করেন তিনি।
ম্যাচ শেষের আগমুহূর্তে অবশ্য ফিরে যান জায়সাওয়াল। তাইজুল ইসলামের বলে ফিরে যাওয়ার আগে ৪৫ বলে ৫১ রান করেন তিনি। কোহলি ৩৭ বলে ২৯ এবং ঋষভ পান্ত ৫ বলে ৪ রানে অপরাজিত থাকেন।
কানপুরে এর আগে বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংসে শুরু থেকে দাপট দেখায় ভারতের বোলাররা। পঞ্চম দিনের প্রথম ওভারে লেগ স্লিপ রাখেননি রোহিত শর্মা। রবিচন্দ্রন অশ্বিনের সেই ওভারে পাঁচ রান নেয় বাংলাদেশ। জসপ্রীত বুমরাহর করা দ্বিতীয় ওভারেও পাঁচ রান নেয় বাংলাদেশ। মুমিনুলের জন্য অশ্বিনের করা দ্বিতীয় ওভারে লেগ স্লিপ রাখেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা।
দিনের তৃতীয় ওভারে পছন্দের সুইপ শট খেলতে গিয়ে মুমিনুল ধরা পড়েন সেখানেই। দুর্দান্ত এক ক্যাচ নেন লোকেশ রাহুল। দুই রান করে ফিরে হলো প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান মুমিনুলকে। মুমিনুল ফেরার পর বেশ ইতিবাচকভাবেই খেলছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। এই দুজনের ব্যাটে লিড পায় বাংলাদেশ। কিন্তু সাদমান ইসলামের সঙ্গে ৫৫ রানের জুটি গড়ার পর ফিরে যেতে হয় বাংলাদেশের অধিনায়ককে। শেষ দিনে রবীন্দ্র জাদেজার করা প্রথম ওভারে রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়ে বোল্ড হওয়ার আগে ১৯ রান করেন শান্ত।
শান্ত ফেরার ওভারেই হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন সাদমান। যদিও ভারতের মাটিতে প্রথম বাংলাদেশী ওপেনার হিসেবে হাফ সেঞ্চুরি করার পর বেশীক্ষণ উইকেটে থাকতে পারেননি তিনি। ১০১ বলে ৫০ রান আসে তার ব্যাটে। হাফ সেঞ্চুরির পর আকাশ দীপের পরের ওভারে অফ সাইডের অনেক বাইরের বল খেলতে গিয়ে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন সাদমান। দারুণভাবে ক্যাচটি নেন ইয়াশভি জায়সাওয়াল।
৯১ রানে চতুর্থ উইকেট হারানো বাংলাদেশ সপ্তম উইকেট হারায় ৯৪ রানে। শেষ দিনে নিজের দ্বিতীয় ওভারে উইকেট নেন জাদেজা। শেষ বলে লিটন দাসকে ফেরান এই অলরাউন্ডার। তার বাউন্স করা দ্রুতগতির বলটি লিটনের গ্লাভসে লেগে উইকেটরক্ষক ঋষভ পান্তের মুঠোয় চলে যায়। ফেরার আগে আট বলে এক রান করেন লিটন। এই দিনে নিজের তৃতীয় ওভারে আবারও উইকেট নেন জাদেজা। সাকিব আল হাসানকে কট এন্ড বোল্ড করে বিদায় করেন জাদেজা। শূন্য রানে ফিরে যান সাকিব।
মাত্র তিন রানের ব্যবধানে চার উইকেট হারিয়ে মুশফিকুর রহিম ও মেহেদী হাসান মিরাজের ব্যাটে এগিয়ে যেতে থাকে বাংলাদেশ। দলীয় শতরান পার করান এই দুজন। এরপর অবশ্য জসপ্রীত বুমরাহর ফাঁদে পড়ে বাংলাদেশ। দারুণ এক ডেলিভারিতে মিরাজকে ফেরান তিনি। বুমরাহর বলে খোঁচা মেরে উইকেটরক্ষক পান্তের কাছে ক্যাচ দেন ১৭ বলে ৯ রান করা মিরাজ। একটু পর তাইজুল ইসলামকেও ফেরান বুমরাহ। তাকে লেগ বিফোর উইকেটের ফাঁদে ফেলেন বুমরাহ। শেষ উইকেট হিসেবে বিদায় নেন মুশফিকুর রহিম। ৬৩ বলে ৩৭ রান করে বুমরাহর বলে বোল্ড হয়ে ফিরে যান এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার। ভারতের হয়ে বুমরাহ ১৭ রানে, জাদেজা ৩৪ রানে এবং অশ্বিন ৫০ রানে তিনটি করে উইকেট নেন।
অর্থসূচক/এএইচআর
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.