দেশের ব্যাংকগুলোর বিদেশি শাখায় মুনাফা বেড়েছে

দেশের তিনটি ব্যাংক সোনালী, জনতা ও রুপালী ব্যাংকের ৭টি শাখা রয়েছে বিদেশে। এ শাখাগুলো ২০২৩ সালে নিট মুনাফা করেছে ৯৪ লাখ ডলার, যা এর আগের বছরের তুলনায় ৪১ লাখ ডলার বেশি।

সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এমন চিত্র উঠে এসেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, আরব আমিরাত ও ভারতের বিভিন্ন এলাকায় রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংক পিএলসি, জনতা ব্যাংক পিএলসি এবং বেসরকারি খাতের এবি ব্যাংক পিএলসির সাতটি পূর্ণাঙ্গ বিদেশি শাখা রয়েছে। ২০২৩ সালে এ শাখাগুলোর নিট মুনাফা হয়েছে ৯৪ লাখ ডলার।

এসব শাখাগুলোর গ্রাহকদের আমানত ৮ দশমিক ৫৮ শতাংশ বেড়েছে। আলোচ্য বছর শেষে তিন ব্যাংকের বিদেশি শাখাগুলোতে আমানত দাঁড়িয়েছে ৩৭ কোটি ৩১ লাখ ডলার। ২০২২ সাল শেষে আমানতের পরিমাণ ছিলো ৩৪ কোটি ৩৬ লাখ ডলার।

প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে আরও দেখা যায়, ২০২৩ সাল শেষে ২১টি বাংলাদেশী ব্যাংক ২৪টি এক্সচেঞ্জ হাউস, ৫টি প্রতিনিধি অফসি এবং ৬টি সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে রেমিট্যান্স সংগ্রহ করেছে। পাশাপাশি এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিদেশে ব্যাংকিং সেবা প্রদান করেছে।

অপরদিকে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসির সংযুক্ত আরব আমিরাতে দুটি শাখা রয়েছে, যদিও তারা এখনও কার্যক্রম শুরু করতে পারেনি বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

এদিকে উচ্চ খেলাপি ঋণ, ভঙ্গুর মূলধন কাঠামো আর অদক্ষ ব্যবস্থাপনায় দেশের মধ্যে ক্রমেই দুর্বল হচ্ছে দেশি ব্যাংকগুলো। মুনাফা কমে যাওয়ার পাশাপাশি ব্যবসাও সংকুচিত হয়ে আসছে দেশের অনেক ব্যাংকের। দেশি ব্যাংকের ব্যর্থতার সুযোগে ব্যবসা ও মুনাফা বাড়ছে বিদেশি ব্যাংকগুলোর। ২০২৩ সালে দেশে কার্যক্রম চালানো প্রায় সবক’টি বিদেশি ব্যাংকই রেকর্ড মুনাফা পেয়েছে।

দেশে কার্যক্রম চালানো বিদেশি ব্যাংকগুলোর নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে রেকর্ড ২ হাজার ৩৩৫ কোটি টাকা নিট মুনাফা করেছে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক। দেশের ব্যাংক খাতের ইতিহাসে এর আগে কোনো ব্যাংকই এ পরিমাণ নিট মুনাফা করতে পারেনি। ২০২২ সালেও বহুজাতিক ব্যাংকটির নিট মুনাফা হয়েছিল ১ হাজার ৬৫৫ কোটি টাকা। সে হিসাবে গত বছর ব্যাংকটির নিট মুনাফায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪১ শতাংশ। নিট মুনাফায় ৭০ শতাংশেরও বেশি প্রবৃদ্ধি পেয়েছে হংকং অ্যান্ড সাংহাই ব্যাংকিং করপোরেশন লিমিটেড (এইচএসবিসি)। বহুজাতিক ব্যাংকটি ২০২৩ সালে ৯৯৯ কোটি টাকা নিট মুনাফা করেছে। এর আগের বছর এইচএসবিসির নিট মুনাফা ছিল ৫৮৭ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নিয়ে দেশে কার্যক্রম পরিচালনা করছে নয়টি বিদেশি ব্যাংক। এর মধ্যে যুক্তরাজ্যভিত্তিক স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ও এইচএসবিসির ব্যবসা ও কার্যক্রমই বেশি বিস্তৃত। এছাড়া শ্রীলংকার কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলন, যুক্তরাষ্ট্রের সিটিব্যাংক এনএ, দক্ষিণ কোরিয়ার উরি ব্যাংক ও ভারতের স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ারও উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কার্যক্রম রয়েছে। এক্ষেত্রে কিছুটা পিছিয়ে পাকিস্তানভিত্তিক ব্যাংক আল ফালাহ্ ও হাবিব ব্যাংক। এর মধ্যে দেশে ব্যাংক আল ফালাহ্‌র কার্যক্রম অধিগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বেসরকারি খাতের ব্যাংক এশিয়া। আর খেলাপি ঋণের ভারে বিপর্যস্ত ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান এখন প্রায় দেউলিয়া দশায়।

অর্থসূচক/এমএইচ/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.