সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলার তদন্ত থেকে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নকে (র্যাব) সরিয়ে দিতে আবেদন করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। আবেদনে এ হত্যা মামলার তদন্তভার পিবিআইকে দিতে বলা হয়েছে।
সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকালে বিচারপতি ফারাহ মাহবুবের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে এ আবেদন করা হয়। একই সঙ্গে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন তিন সদস্যের একটি টাস্কফোর্সকে এই ঘটনার তদন্ত করতে বলা হয়েছে। আজ কিছুক্ষণ পর এ ব্যাপারে শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।
এ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল এ পর্যন্ত ১১৩ বার সময় পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। র্যাবের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খন্দকার শফিকুল আলম সর্বশেষ ৯ সেপ্টেম্বর প্রতিবেদন দাখিল করতে ব্যর্থ হওয়ায় ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম মো. মাহবুবুল হক তদন্ত প্রতিবেদন নতুন করে দাখিলের জন্য ১৫ অক্টোবর নতুন দিন ধার্য করেছেন।
এর আগে গতকাল সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরোয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যার ঘটনায় করা মামলায় নতুন আইনজীবী নিয়োগ দেওয়া হয়। মামলার বাদী মেহেরুন রুনির ভাই নওশের রোমান বিষয়টি জানিয়ে বলেছেন, এখন থেকে সাগর-রুনি হত্যা মামলার প্রকৃত রহস্য উন্মোচনে আইনজীবী শিশির মনির আইনি লড়াই করবেন।
আইনজীবী শিশির মনির বলেন, আমরা সাগর-রুনি হত্যার রহস্য উন্মোচনে কাজ শুরু করবো। এর অংশ হিসেবে তদন্ত কর্মকর্তাদের সঙ্গে খুবই দ্রুত মিটিং করবো। একইসঙ্গে হত্যার রহস্য উন্মোচনে নিম্ন আদালত ও উচ্চ আদালতে আইনি লড়াই করবো।
সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরোয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যার ঘটনায় করা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য এ পর্যন্ত ১১৩ বার সময় বাড়ানো হয়েছে। পরবর্তী শুনানির জন্য ১৫ অক্টোবর দিন ধার্য রয়েছে।
২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের ভাড়া বাসায় খুন হন সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি। তাদের একমাত্র ছেলে পাঁচ বছর বয়সী মাহির সরওয়ার মেঘ সেই সময় বাসায় ছিল। সাগর বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল মাছরাঙা টিভিতে এবং রুনি এটিএন বাংলায় কর্মরত ছিলেন। হত্যার ঘটনায় রুনির ভাই নওশের আলম রোমান শেরেবাংলা নগর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
প্রথমে মামলাটি শেরেবাংলা নগর থানার মাধ্যমে তদন্ত শুরু হয়। এরপর চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলা হিসেবে এর তদন্ত ভার ঢাকা মহানগর ডিবি পুলিশকে দেওয়া হয়। দুই মাসেরও বেশি সময় তদন্ত করে ডিবি রহস্য উদঘাটনে ব্যর্থ হয়। পরে ২০১৪ সালের ১৮ এপ্রিল হাইকোর্টের নির্দেশে হত্যা মামলার তদন্ত ভার র্যাবের ওপর ন্যস্ত করা হয়। মামলায় রুনির কথিত বন্ধু তানভীর রহমানসহ মোট আসামি আটজন।
প্রতিবেদন দিতে দেরি হওয়ায় এর আগে দুটি আদালত অসন্তোষ প্রকাশ করেন। এর আগে ২০২০ সালের ২ মার্চ আলোচিত এ হত্যা মামলার অগ্রগতি প্রতিবেদন হাইকোর্টে জমা দেয় র্যাব। প্রতিবেদনে বলা হয়. এ হত্যাকাণ্ডে দুইজন অপরিচিত পুরুষ জড়িত ছিলেন। সাগর-রুনির ব্যবহ্নত কাপড়ের সঙ্গে তাদের ডিএনএ’র মিল পাওয়া গেছে। ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের বাসায় নির্মমভাবে খুন হন মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সরওয়ার এবং এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনি। দুজনকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়। পরদিন ভোরে তাদের ক্ষত-বিক্ষত লাশ উদ্ধার করা হয়।
অর্থসূচক/এএইচআর



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.