রাশিয়ার তেলের দাম কম। সেই সঙ্গে যেসব রুশ কোম্পানির কাছ থেকে তেল কেনায় নিষেধাজ্ঞা নেই, ভারত তাদের কাছ থেকে তেল কেনা অব্যাহত রাখবে। ভারতের তেলমন্ত্রী হরদীপ সিং এ কথা বলেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের হিউস্টনে গ্যাসটেক সম্মেলনের ফাঁকে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেছেন হরদীপ সিং।
ইউক্রেনের ওপর যুদ্ধ চাপিয়ে দেওয়ার কারণে পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার ওপর বিভিন্ন বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো, রাশিয়ার অপরিশোধিত তেলের দাম বেঁধে দেওয়া। তবে ভারত যার কাছ থেকে সস্তায় তেল পাবে, তার কাছ থেকেই তেল কিনবে বলে জানিয়েছে দেশটির তেলমন্ত্রী।
মঙ্গলবার ভারতের তেলমন্ত্রী বলেন, কোনো কোম্পানির কাছ থেকে তেল কেনায় নিষেধাজ্ঞা না থাকলে এবং তারা যদি সস্তায় তেল দিতে পারে, তাহলে ভারত অবশ্যই তাদের কাছ থেকে তেল কিনবে। সবচেয়ে সস্তা দরে যারা তেল দেবে, তাদের কাছ থেকে তেল কেনা হবে। তিনি আরও বলেন, ইউরোপের দেশ ও জাপানের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কিনছে, ভারত একাই কিনছে না।
ভারত বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ তেল আমদানিকারী দেশ। চাহিদার ৮৮ শতাংশ আমদানি করতে হয় তাদের। ভারতের তেলমন্ত্রী মনে করেন, ভারতের জ্বালানির চাহিদা আরও বাড়বে। তেলের পাশাপাশি প্রাকৃতিক গ্যাস ও নবায়নযোগ্য উৎস থেকেও ভারতের জ্বালানি ব্যবহার বাড়বে।
ভারত বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম তেল আমদানিকারক। দেশটির বার্ষিক তেল পরিশোধন সক্ষমতা ২৫২ মিলিয়ন বা ২৫ কোটি ২০ লাখ মেট্রিক টন বা প্রতিদিন পাঁচ লাখ চার হাজার ব্যারেল। দেশটি তেল পরিশোধন সক্ষমতা বৃদ্ধির চেষ্টা করছে।
ভারতের তেলমন্ত্রী বলেন, এখন তেল পরিশোধন সক্ষমতা ৩০০ মিলিয়ন বা ৩০ কোটি মেট্রিক টন পর্যন্ত উন্নীত করার লক্ষ্যে প্রকল্প চলমান আছে। তিনি আরও বলেন, তেল পরিশোধন সক্ষমতা ৪০ থেকে ৪৫ কোটি মেট্রিক টনে উন্নীত করা সম্ভব হবে কি না, তা নিয়েও চিন্তাভাবনা চলছে।
রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে হরদীপ সিং বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার তেলের দাম বেঁধে দিয়েছে এবং ভারত যেকোনো উৎস থেকে সর্বনিম্ন দামে তেল ও গ্যাস কিনতে প্রস্তুত।
ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের পর দাম ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় ভারতের তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস কেনার গতি কমে গেছে। বর্তমানে জ্বালানির মাত্র ৬ শতাংশ গ্যাস ব্যবহার করে তারা। ২০৩০ সালের মধ্যে তারা সেটিকে ১৫ শতাংশে উন্নীত করার চিন্তা করছে, যদিও বিষয়টি নির্ভর করছে দামের ওপর।
হরদীপ সিং বলেন, গ্যাসের দাম স্থিতিশীল হলে বা কমলে জ্বালানি ব্যবহারে গ্যাসের অনুপাত বাড়বে। এদিকে ভারতের রাষ্ট্রীয় ও বেসরকারি কোম্পানিগুলো তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস প্রকল্পে বিনিয়োগ করেছে এবং বিশ্বব্যাপী বিনিয়োগের নতুন সুযোগ খুঁজছে। তেলমন্ত্রী আরও বলেন, ভারত গায়ানার সঙ্গে আলোচনা করেছে, যেখানে ১২ বিলিয়ন বা ১ হাজার ২০০ কোটি ব্যারেলেরও বেশি পুনরুদ্ধারযোগ্য তেলসম্পদ আছে।
অর্থসূচক/
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.