বুলডোজার জাস্টিস স্থগিত করেছে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট

ভারতের সুপ্রিম কোর্ট দেশটিতে যে কোনো জায়গায় অননুমোদিতভাবে ব্যক্তিগত সম্পত্তি, যৌথ মালিকানাধীন ব্যবসায়ীক ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করা ১ অক্টোবর পর্যন্ত স্থগিত করেছে। সেদিন বুলডোজার জাস্টিসের বিরুদ্ধে পরবর্তী শুনানি শুনবে আদালত।

ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্তদের মালিকানাধীন আবাসিক বা বাণিজ্যিক সম্পত্তি ধ্বংস করতে ভারতের কিছু রাজ্য সরকার এই বুলডোজার জাস্টিস অনুশীলন করে আসছে।

মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সর্বোচ্চ আদালতের এই সিদ্ধান্তের পর ভারত সরকারের পক্ষ থেকে সলিসিটর জেনারেল (মহাব্যবহারদেশক) তুষার মেহতা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, এই আদেশ আইন অনুমোদিত উচ্ছেদের ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলতে পারে। কিন্তু আদালত ভারত সরকারের এই উদ্বেগ খারিজ করে দেন। খবর এনডিটিভি।

বিচারপতি বিআর গাভাই ও বিচারপতি কেভি বিশ্বনাথনের বেঞ্চ ঘোষণা করেন, ‘পরবর্তী শুনানি পর্যন্ত আপনাদের হাত গুটিয়ে রাখতে বললে আকাশ ভেঙে পড়বে না।’

ক্ষুব্ধ সর্বোচ্চ আদালত এই অনুশীলনকে গৌরবান্বিত করা এবং এ নিয়ে মনোযোগ আকর্ষণ করার চেষ্টার বিরুদ্ধে সতর্ক করেন। চলিত মাসে ইতোমধ্যে দুইবার সুপ্রিম কোর্ট ‘বুলডোজার জাস্টিস’ নিয়ে কঠোর মন্তব্য করেছে।

আদালত বলেছেন, ‘পরবর্তী শুনানির তারিখ পর্যন্ত আদালতের অনুমতি ছাড়া কোনো ধ্বংস নয়।’

এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে সতর্ক করা হতে পারে বলে মন্তব্য করেছে আদালত।

আদালত একটি বয়ানে প্রভাবিত হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন মেহতা, কিন্তু তার আপত্তি আমলে নেননি আদালত। এর জবাবে আদালত বলেন, ‘বেআইনিভাবে ভেঙে ফেলার একটি নজির থাকলেও তা সাংবিধানিক নীতির পরিপন্থি হবে।’
‘ওই বয়ান আমাদের প্রভাবিত করছে না। আমরা এটি পরিষ্কার করেছি, আমরা অবৈধ নির্মাণ উচ্ছেদ (বন্ধ) করছি না, কিন্তু (কী অবৈধ) সেই বিচার নির্বাহীরা করতে পারবে না।’

যাদের বাড়ি বুলডোজার দিয়ে গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে তাদের পিটিশনের বিরুদ্ধে শুনানির সময় আদালত জানান, তাদের আদেশ রাস্তা, রেল লাইন বা জলাশয়ের মতো জনগণের সম্পত্তি দখলের বিরুদ্ধে উচ্ছেদ অভিযানের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না।

হিন্দু নন এমন সম্প্রদায়ের সদস্যদের, বিশেষভাবে মুসলিমদের ঘরবাড়ি বুলডোজার দিয়ে ধ্বংস করা হচ্ছে, আদালতে এমন অভিযোগের বিরোধিতা করে মেহতা বলেন, হিন্দুদের ঘরবাড়িও ধ্বংস করা হচ্ছে।

এর আগে আদালত বলেছে, ব্যক্তির সম্পত্তি গুড়িয়ে দেওয়ার যুক্তি তার বিরুদ্ধে অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগ হতে পারে না, এ ধরনের পদক্ষেপ দেশের আইনের ওপর ‘বুলডোজার চালানোর মতো’।

অর্থসূচক এএকে

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.