বাংলাদেশ ও অন্যান্য স্বল্পোন্নত (এলডিসি) দেশকে শতভাগ শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধা দেবে চীন।
বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন সম্প্রতি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্র সচিব জসিম উদ্দিনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে এ কথা জানান।
পররাষ্ট্র সচিব জসিম উদ্দিন জানান, ‘চীনের রাষ্ট্রদূত আমাদের জানিয়েছেন, কয়েকদিন আগে সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে সিনো-আফ্রিকান যে শীর্ষ সম্মেলন হয়েছে সেখানে একটি সিদ্ধান্ত হয়েছে যে বাংলাদেশসহ স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে শতভাগ শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধা দেবে চীন’।
জসিম জানান, অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর চীন থেকেই সবচেয়ে বেশি সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ এসেছে, যার পরিমাণ আট মিলিয়ন ডলার।
তিনি বলনে, ‘আমরা আশা করছি চীনে রপ্তানির পরিমাণ আরও বাড়বে। দেশ থেকে চীনে আম রপ্তানির প্রক্রিয়া মোটামুটি চূড়ান্ত হয়েছে। আগামী বছর থেকেই চীনে আম রপ্তানি শুরু হবে। কাঁঠাল ও পেয়ারার মতো অন্যান্য ফলও রপ্তানি করা হবে’।
জসিম আরও বলেন, ‘আমরা আঞ্চলিক ও বহুপাক্ষিক বিষয়গুলো নিয়েও আলোচনা করেছি। একে অপরকে আন্তর্জাতিক ফোরামে সহায়তার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। ইয়াও ওয়েন বাংলাদেশকে বন্যা ব্যবস্থাপনায় সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছেন।’
২০২২ সালে চীন ৯৮ শতাংশ বাংলাদেশি পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা দেয়, যার মধ্যে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যসহ ৩৮৩টি নতুন পণ্য ছিল। ২০২০ সালে ৯৭ শতাংশ বাংলাদেশি পণ্য এই সুবিধা পেতো।
বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার চীন। ২০২২-২৩ অর্থ বছরে চীন থেকে ১৮ দশমিক ছয় বিলিয়ন ডলার মূল্যমানের পণ্য আমদানি করে বাংলাদেশ। অপরদিকে, বাংলাদেশ থেকে চীনে রপ্তানি হয় ৬৭৬ মিলিয়ন ডলারের পণ্য।
২০২০ অর্থবছরে চীন দুই দশমিক চার ট্রিলিয়ন মূল্যমানের পণ্য আমদানি করে, যার মধ্যে বাংলাদেশের অংশ মাত্র শুন্য দশমিক শুন্য পাঁচ শতাংশ। এই তথ্য এটাই নির্দেশ করছে যে চীনের সঙ্গে বাণিজ্য সম্প্রসারণের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে।
রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্টের চেয়ারম্যান এমএ রাজ্জাক একটি গবেষণাপত্রে উল্লেখ করেন, চীনের আমদানি বাজেটের এক শতাংশও যদি বাংলাদেশ থেকে যায়, তাহলেও আমরা বছরে ২৫ বিলিয়ন ডলার উপার্জন করতে পারব।
তবে অর্থনীতিবিদরা মন্তব্য করেন, চীনের বাজারে বড় আকারে প্রবেশ করতে হলে বাংলাদেশকে তাদের রপ্তানি পণ্যে আরও বৈচিত্র্য আনতে হবে। এ মুহুর্তে এটি বড় আকারে তৈরি পোশাকের ওপর নির্ভরশীল।
আগামী বছর চীন-বাংলাদেশ কূটনীতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন করা হবে। এ বিষয়টিও আলোচনায় উঠে আসে।
অর্থসূচক/ এইচএআই



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.