বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে সংযুক্ত আরব আমিরাতে (ইউএই) বিক্ষোভ করা সেই ৫৭ বাংলাদেশির মধ্যে আরও ১০ শ্রমিক দেশে ফিরেছেন। এ নিয়ে চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে মোট ২২ শ্রমিক দেশে ফিরেছেন।
বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন শেখ আবদুল্লাহ আলমগীর বলেন, বিমানবন্দরে আসা শ্রমিকদের ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের কর্মকর্তারা অভ্যর্থনা জানান।
এই ১০ শ্রমিকের মধ্যে তিন জন ইউএস-বাংলা ও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পৃথক ফ্লাইটে এবং অপর সাত জন এয়ার এরাবিয়া আবুধাবির একটি ফ্লাইটে দেশে ফিরেছেন।
এর আগে গত শনিবার রাতে ১৪ জন দেশে ফিরেন। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সমর্থনে ও শেখ হাসিনার সরকারের দুঃশাসনের প্রতিবাদে দুবাই, শারজাহ, আজমানের বিভিন্ন এলাকার সড়কে বিক্ষোভ করেছিলেন বাংলাদেশিরা। রাজতন্ত্রের দেশটিতে সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ থাকায় বিক্ষোভ থেকে আটক করা হয় অনেককে। তাদের মধ্যে তিনজনকে যাবজ্জীবন, একজনকে ১১ বছর এবং ৫৩ জনকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেন দেশটির আদালত।
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা এই রায়কে মানবাধিকার লঙ্ঘন বললেও হাসিনা সরকার স্পষ্ট করে জানিয়েছিল, দণ্ডিতদের মুক্ত করতে পদক্ষেপ নেওয়া হবে না। তৎকালীন প্রবাসীকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী বলেছিলেন, যুদ্ধাপরাধী জামায়াত-বিএনপির প্রেতাত্মারা কৃতকর্মের শাস্তি পেয়েছে। দুবাইয়ে আন্দোলন করে তারা বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছে। এ জন্য তাদের শাস্তি হয়েছে।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে গত ৫ আগস্ট ভারতে পালিয়ে যান। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ প্রথম সভাতেই দণ্ডিত বাংলাদেশিদের মুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেয়। আইনজীবী নিয়োগ করে আপিল প্রক্রিয়া শুরু হয়। প্রধান উপদেষ্টা কথা বলেন আমিরাতের সরকারপ্রধানের সঙ্গে। পরে ৫৭ বন্দি ক্ষমা পান।
এর আগে দুবাইভিত্তিক ইংরেজি দৈনিক খালিজ টাইমস জানিয়েছিল, আমিরাতের অ্যাটর্নি জেনারেল চ্যান্সেলর ড. হামাদ আল শামসি বাংলাদেশিদের সাজা কার্যকর বন্ধ এবং তাদের ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরুর আদেশ জারি করেছেন।
অর্থসূচক/এএইচআর



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.