ইতালির ভিসাসহ পাসপোর্ট ফেরতের দাবিতে বিক্ষোভ

ইতালির ভিসাসহ জরুরি ভিত্তিতে পাসপোর্ট ফেরতের দাবিতে রাজধানীর গুলশানের বিচারপতির শাহাবুদ্দিন আহমেদ পার্কে গণ-অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন আবেদনকারীরা। এ সময় বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ করেন তারা।

সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে দ্রুত ভিসাসহ পাসপোর্ট ফেরত পাওয়ার দাবিতে এই গণঅবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন ভুক্তভোগীরা। পরে মিছিল নিয়ে বের হওয়ার চেষ্টা করলে নিরাপত্তা বাহিনীর বাধার মুখে পড়েন তারা।

আবেদনকারীদের অভিযোগ, কৃষি ভিসা আবেদনের সময় ৯০ দিন প্রসেসিং সময় দিয়েছিল দূতাবাস। কিন্তু আবেদনকারীদের অনেকেরই দুই থেকে আড়াই বছর পর্যন্ত পাসপোর্ট ফেরত দেয়নি। অন্যদিকে, পাসপোর্ট হাতে না পাওয়ায় বিকল্প দেশেও যেতে পারছেন না তারা।

বাংলাদেশ প্রবাসী উন্নয়ন সমিতি বলছে, ইতালি গমনেচ্ছু লাখেরও বেশি বাংলাদেশি নাগরিকের পাসপোর্ট আটকে আছে দেশটির দূতাবাসে। আবেদনের এক বছর বা তার বেশি সময় পরও ভিসা না পাওয়ায় তারা দেশেও কোনো কাজ করতে পারছেন না। তাই বিষয়টি দ্রুত সমাধানে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তারা।

এদিকে এক বিজ্ঞপ্তিতে ইতালি দূতাবাস জানিয়েছে, দাবির প্রেক্ষিতে আবেদনকারীদের কয়েকজন প্রতিনিধিকে নিয়ে দূতাবাসের ডেপুটি হেড অব মিশন বৈঠক করেন। বৈঠকে দূতাবাস ইতালিতে কাজের ভিসা প্রক্রিয়াকরণে বিদ্যমান বিলম্বের জন্য আইনি, প্রযুক্তিগত ও লজিস্টিক ব্যাখ্যা দেয়। আবেদনকারীদের সতর্ক করা হয়েছিল যে কোনও মধ্যস্থতাকারী বা মধ্যস্থতাকারীকে অর্থ প্রদান বা বিশ্বাস করবেন না, যারা বর্তমান বিলম্বের প্রধান কারণ।

এর আগে আবেদনকারীদের জাল বা মিথ্যা নথি উপস্থাপন না করার জন্যও সতর্ক করা হয়েছিল। জাল নথি বা আর্থিক বিবৃতি তৈরি করা, ইতালি ও বাংলাদেশি উভয় আইনের অধীনে গুরুতর অপরাধ। এই দুঃখজনক কাজে ইতালিতেও যথাযথ তদন্ত চলছে।

দূতাবাস জানায়, প্রক্রিয়া করা আবেদনের আউটপুট বাড়ানোর জন্য তার অঙ্গীকারের আশ্বাস দিয়েছে এবং একটি ডেডিকেটেড টাস্কফোর্স গঠনসহ রোমে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে গৃহীত কিছু উদ্যোগ উপস্থাপন করেছে। আবেদনকারীদের আশ্বস্ত করা হয়েছিল যে তাদের “নুল্লা ওস্তা” (ওয়ার্ক পারমিট) একবার তারা আবেদন জমা দিলে বা এটি করার জন্য একটি অ্যাপয়েন্টমেন্টের অনুরোধ করলে সেটির মেয়াদ শেষ হবে না।

বৈঠকে দূতাবাসের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ভিসা প্রক্রিয়াকরণের সঙ্গে ভিএফএস গ্লোবালের কিংবা তাদের কর্মচারী কারও সম্পৃক্ততা নেই। ঢাকা ও বিশ্বের অন্যান্য স্থানে ভিএফএস গ্লোবাল ভিসা অনুমোদন বা প্রত্যাখ্যান বা তার সময়-সংক্রান্ত কোনও সিদ্ধান্তে অংশ না নিয়ে এবং ভিসার আবেদনপত্র ফাইল করার অ্যাপয়েন্টমেন্ট সময়সূচিতে অংশ না নিয়ে ইতালীয় দূতাবাসের পক্ষে এবং কঠোর নির্দেশের অধীনে কাজ করে। ভিএফএস গ্লোবাল বা এর কর্মীদের কোনো সম্পৃক্ততা ছাড়াই আবেদনকারীদের জমা দেওয়া তথ্যের ওপর যথাযথ চেক ও নিয়ন্ত্রণের পর দূতাবাস দ্বারা অ্যাপয়েন্টমেন্ট দেওয়া হয়।

দূতাবাস আরও জানায়, ভিসা ইস্যু করা রাষ্ট্রের একচেটিয়া ক্ষমতার আওতায় পড়ে। অতএব বাংলাদেশি নাগরিকদের ইতালীয় কাজের ভিসা দেওয়া-না দেওয়া-সংক্রান্ত সব সিদ্ধান্ত, সেই সঙ্গে তাদের সময়, পদ্ধতি, নিয়ন্ত্রণ ও সময়সীমা ইতালীয় আইন দ্বারা একচেটিয়াভাবে নিয়ন্ত্রিত হয়।

দূতাবাসের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অভিযোগ ও আপিল প্রযোজ্য ইতালির আইন ও প্রবিধান অনুসারে ইতালিতে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে উপস্থাপন করা যেতে পারে বলে জানায় দূতাবাস।

অর্থসূচক/ এইচএআই

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.