ভারতের সঙ্গে যুদ্ধ-বিগ্রহের সম্ভাবনা দেখছে না বাংলাদেশ। ভারতের সশস্ত্র বাহিনীকে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকতে বলেছেন দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। তার বক্তব্যে কেন বাংলাদেশ প্রসঙ্গ এলো তা নিয়ে উদ্বেগের চাইতে ঢাকা বেশি অবাক হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।
রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সমসাময়িক বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন ।
বাংলাদেশের পরিস্থিতি পর্যাবেক্ষণ এবং শান্তি রক্ষার জন্য ভারতের সশস্ত্র বাহিনীকে যে কোন পরিস্থিতি মোকাবেলায় যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকতে বলা বাংলাদেশের জন্য উদ্বেগের কিনা-জানতে চেয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে।
জবাবে তিনি বলেন, আমি যতটা উদ্বিগ্ন তার চেয়ে বেশি অবাক। ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী এ ধরনের কথা কেন বললেন? আমি এটার কোনো কারণ খুঁজে পাই না। আমি কোনোভাবে মনে করি না, ভারতের সঙ্গে আমাদের যুদ্ধ-বিগ্রহ হওয়ার আশঙ্কা আছে।
তৌহিদ হোসেন বলেন, তিনি এটা কী তার নিজের দেশের কনজামশানের জন্য বলেছিলেন কিনা-সেটা আমাদের বুঝতে হবে। আর তিনি যেভাবে বলেছেন, ‘বিটিং অ্যারাউন্ড দ্যা বুশ’ অনেকটা। কারণ, ইউক্রেনের যুদ্ধের কারণে তো ভারতে যুদ্ধ প্রস্তুতির কোনো প্রয়োজন দেখি না বা হামাসের সঙ্গে যে সমস্যা হয়েছে তাতে করে ভারতের এখানে কী সম্পর্ক?
শেখ হাসিনাকে ভারতে আশ্রয় দেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, স্বাভাবিকভাবে যেকোনও দেশ যে কাউকে রাজনৈতিক আশ্রয় দিতে পারে। দেওয়া উচিত কিনা এক্ষেত্রে সেটি দেখার বিষয় এবং আমরা সেটি দেখবো।
মিয়ানমার সীমান্ত দিয়ে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘রোহিঙ্গা বিষয়ে আমাদের অবস্থান হচ্ছে আমরা স্পষ্টভাবে বলেছি যে একজন রোহিঙ্গাকেও আমরা আশ্রয় দিতে রাজি না। কিন্তু কিছু ঢুকে যাচ্ছে, সেটি আমরা জানি। সেটি আমরা যতদূর পারা যায় আটকানোর চেষ্টা করছি। বিজিবি প্রতিদিন পুশব্যাক করছে, যাদের আমরা ধরতে পারছি। কিন্তু একটি বড় এলাকা নিয়ে, বিভিন্ন জায়গা দিয়ে তারা ঢুকছে। সবক্ষেত্রে ধরতে পারছি না। সামর্থ্যের কিছু সীমাবদ্ধতা আছে।’
জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থা চায় তাদের আমরা আশ্রয় দেই। কিন্তু তাদের কাছে আমরা স্পষ্ট করেছি যে ১২ লাখ রোহিঙ্গাকে আমরা আশ্রয় দিয়েছি। আমরা আমাদের ভূমিকা যতটুকু হওয়ার দরকার তার থেকে বেশি করেছি। আমাদের পক্ষে আর সম্ভব নয়। যারা আমাদের উপদেশ দিতে আসে, তারা বরং তাদের নিয়ে যাক বলেও তিনি জানান।
অর্থসূচক/এএকে/এএইচআর



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.