এস আলম মুক্ত হলো ইউনিয়ন ও গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, নতুন পর্ষদ গঠন

এবার এস আলম মুক্ত হলো বেসরকারি খাতের ইউনিয়ন ব্যাংক ও গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক। ব্যাংক দুটির পর্ষদ ভেঙে নতুন পর্ষগ গঠন করে দিয়েছে আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক।

মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) বাংলাদেশ ব্যাংকের এক চিঠিতে পর্ষদ ভেঙে নতুন পর্ষদ গঠন করা হয়েছে।

এর মধ্যে ইউনিয়ন ব্যাংকের পর্ষদ ভেঙে দিয়ে নতুন ৫ পরিচালক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। নিয়োগ পাওয়া পাঁচ পরিচালক হলেন— ইসলামী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুঃ ফরীদ উদ্দীন আহমদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক মো. হুমায়ুন কবীর, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ সাইফুল আলম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপার্টমেন্ট অব ব্যাংকিং এন্ড ইন্স্যুরেন্সের অধ্যাপক ড. শহিদুল ইসলাম জাহীদ এবং চার্টার্ড একাউন্টেন্ট শেখ জাহিদুল ইসলাম।

ইউনিয়ন ব্যাংকে চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন মুঃ ফরীদ উদ্দীন আহমদ।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, নামে-বেনামে ব্যাপক ঋণ দিয়েছে ইউনিয়ন ব্যাংক। বিতরণ করা অধিকাংশ ঋণ খেলাপি হয়ে পড়েছে। আর এসব ঋণের বেশিরভাগ নিয়েছে সমালোচিত এস আলমের গ্রুপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। গ্রুপটি ঋণের টাকা ফেরত না দেওয়ায় সংকটে পড়েছে ইউনিয়ন ব্যাংক।

অপরদিকে গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকে নিয়োগ পাওয়া পাঁচ পরিচালক হলেন— মেঘনা ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ নুরুল আমিন, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক মো. জামাল মোল্লা, ইসলামী ব্যাংকের সাবেক উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুরুল ইসলাম খলিফা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারন্যাশনাল বিজনেসের অধ্যাপক আবু হেনা রেজা হাসান এবং চার্টার্ড একাউন্টেন্ট মুঃ মাহমুদ হোসেন।

গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকে চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন মোহাম্মদ নুরুল আমিন।

জানা গেছে, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকেও রয়েছে নানা ঋণ অনিয়ম। এসব অনিয়মের মাধ্যমে এস আলম গ্রুপ হাজার হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ফজলে কবির ও একটি গোয়েন্দা সংস্থার সহায়তায় ২০১৭ সালে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ ও সোস্যাল ইসলামী ব্যাংকের দখল তুলে দেওয়া হয় এস আলম গ্রুপের কাছে। এই দুই ব্যাংকসহ ৭টি ব্যাংক ছিল গ্রুপটির দখলে। গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর একের পর এক ব্যাংক এস আলমমুক্ত করা হচ্ছে।

গত সপ্তাহে ইসলামী ব্যাংক ও ন্যাশনাল ব্যাংকের পর্ষদ ভেঙ্গে পুনর্গঠন করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ইসলামী ব্যাংকের ৮২ শতাংশ শেয়ার এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে । ব্যাংকটির পর্ষদ গঠিত হয়েছে স্বতন্ত্র পরিচালকদের সমন্বয়ে। আর ন্যাশনাল ব্যাংকের উদ্যোক্তা পরিচালকদের মধ্য থেকে বিএনপি নেতা আব্দুল আউয়াল মিন্টুর নেতৃত্বে পর্ষদ গঠন করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

এরপর আজ এস আলমের নিয়ন্ত্রণে থাকা ইউনিয়ন ব্যাংক পিএলসি ও গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের পর্ষদ ভেঙে দিয়েছে আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানিয়েছে, এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে থাকা ফার্স্টসিকিউরিটি ইসলামী ও বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের পর্ষদও পর্যায়ক্রমে ভেঙ্গে দেওয়া হবে।

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.