গ্রেপ্তারের সময় আনিস ও সালমানের কাছে যা যা পাওয়া গেছে

সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা ও বিতর্কিত ব্যবসায়ী সালমান এফ রহমানকে গ্রেপ্তারের সময় একাধিক পাসপোর্ট ও বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা পেয়েছে পুলিশ। আজ বুধবার আদালতে রিমান্ডের শুনানীর সময় এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এর আগে মঙ্গলবার নৌপথে ‘পালানোর চেষ্টাকালে’ রাজধানী ঢাকার সদরঘাট থেকে তাদেরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। নিউমার্কেট থানায় দায়ের করা একটি হত্যা মামলায় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

আজ ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পক্ষ থেকে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে  আবেদন করা হয়। শুনানীর পর আদালত ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

শুনানীতে আনিসুল হক ও সালমান এফরহমানকে গ্রেপ্তারের সময় কী কী পাওয়া গেছে পুলিশের পক্ষ থেকে তা আদালতকে অবহিত করা হয়।

পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেপ্তারের পর আনিসুল হকের কাছ থেকে তিনটি পাসপোর্ট উদ্ধার করা হয়। আর সালমান এফ রহমানের কাছ থেকে ছয়টি পাসপোর্ট উদ্ধার করা হয়। আনিসুল হকের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় লাল রঙের তিনটি কূটনৈতিক পাসপোর্ট। আর সালমান এফ রহমানের কাছ থেকে উদ্ধার করা পাসপোর্টের মধ্যে লাল রঙের কূটনৈতিক পাসপোর্ট একটি এবং সবুজ রঙের পাঁচটি পাসপোর্ট।

এ ছাড়া গ্রেপ্তারকালে আনিসুল হককে তল্লাশি করে ঘিয়ে রঙের ব্যাগে রক্ষিত বিভিন্ন দেশের মুদ্রা পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ১৭ হাজার ৫৯২ মার্কিন  ডলার (স্থানীয় মুদ্রায় প্রায় ২১ লাখ টাকা) এবং ৭২৬ সিঙ্গাপুরি ডলার ছিল।

অন্যদিকে সালমান এফ রহমানের ব্যাগ তল্লাশি করে পাওয়া যায় ১২ হাজার ৬২৪ মার্কিন ডলার, ৬২০ সুইচ ফ্রাঙ্ক, ৮ হাজার ৫০০ ইউএই দিরহাম, ১৩ লাখ উজবেকিস্তানি সোম, ১১ হাজার ৬৫০ সৌদি রিয়াল, ৭৭৯ সিঙ্গাপুরি ডলার, ১৫০ ব্রিটিশ পাউন্ড, ১ হাজার ৩২১ ইউরো, ৫০ হাজার টাকা, ৬ হাজার ২৩০ ভুটানের মুদ্রা, ২ হাজার ভারতীয় রুপি এবং ৩ হাজার ২২০ থাইল্যান্ডের বাথ।

ডিএমপি জানায়, নিউমার্কেট থানার এক মামলায় গোপন তথ্যের ভিত্তিতে নৌপথে পলায়নরত অবস্থায় রাজধানীর সদরঘাট এলাকা থেকে সালমান এফ রহমান এবং সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে গতকাল মঙ্গলবার গ্রেপ্তার করা হয়।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কোটা সংস্কারের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচি চলাকালে ১৬ জুলাই ঢাকা কলেজের সামনে সংঘর্ষে দুজন নিহত হন। একজন ছাত্র এবং একজন হকার। এ ঘটনায় নিউমার্কেট থানায় দুটি হত্যা মামলা হয়েছে। এসব হত্যার ঘটনায় ইন্ধনদাতা হিসেবে এই দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

ছাত্র-জনতার প্রবল আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে ভারতে চলে যান। এরপর তার মন্ত্রিসভার সদস্য ও আওয়ামী লীগের নেতারা আত্মগোপনে রয়েছেন। কেউ কেউ দেশ ছেড়েছেন বলে খবর এসেছে। এর মধ্যে আনিসুল হক ও সালমান এফ রহমানকে গ্রেফতারের কথা জানায় পুলিশ। পরে তাদের ডিবি হেফাজতে নেওয়া হয়।