‘আরাফাত ফ্রান্স দূতাবাসে আশ্রয় নেয়নি’

পতিত আওয়ামীলীগ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত ঢাকায় অবস্থিত ফ্রান্সের দূতাবাসে নেই। তিনি এই দূতাবাসে আশ্রয় নেননি। দূতাবাস কর্তৃপক্ষ বুধবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স এ (সাবেক টুইটার) দেওয়া এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানিয়েছেন।

দূতাবাস সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট আওয়ামীলীগ সরকারের পতন ঘটে। এদিন আওয়ামীলীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারত পালিয়ে যান। সরকার পতনের আগেই সাবেক আওয়ামীলীগ সরকারের অনেক মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপদেষ্টা ও এমপি দেশ থেকে পালিয়ে যান। তবে তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত তখনো দেশেই ছিলেন।

সরকারের পুলিশ, র‍্যাব, বিজিবি ও আওয়ামী সন্ত্রাসীরা ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নির্বাচারে গুলি চালিয়ে পাখির মতো মানুষ হত্যা করার পরও সরকার এসব ঘটনার জন্য আন্দোলনকারীদের দোষারুপ করেছে। পতনের একদিন আগেও সরকার আন্দোলন থামাতে আরও বল প্রয়োগের হুমকী দিয়েছে। তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত তখন আওয়ামীলীগ সরকারের অন্যান্য মন্ত্রীদের সঙ্গে সুর মিলিয়ে আন্দোলনকারী ছাত্রদেরকে সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়েছেন। তিনি দাবি করেন, আন্দোলনে কোনো ছাত্র নেই। বিএনপি, ছাত্রদল, জামায়াত ও শিবিরের ক্যাডাররা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীল করছে।

শেখ হাসিনা সরকারের পতনের সঙ্গে সঙ্গে সরকারের মন্ত্রী-এমপি ও আওয়ামীলীগ নেতারা আত্মগোপনে চলে যান। এদের কেউ কেউ নানা কৌশলে দেশ থেকে পালিয়ে যেতেও সক্ষম হয়েছেন। ওই সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব ছড়িয়ে পড়ে যে, সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত ঢাকায় ফ্রান্সের দূতাবাসে আশ্রয় নিয়েছেন। সেখান থেকে তিনি বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।

এর প্রেক্ষিতে আজ ফরাসি দূতাবাস বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, আরাফাতের ফ্রান্স দূতাবাসে আশ্রয় নেওয়ার বিষয়টি সম্পূর্ণ গুজব ও মিথ্যা।

ফ্রান্স দূতাবাসের বিবৃতির পর আবার নতুনভাবে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, আরাফাত কী দেশের কোথাও আত্মগোপনে আছেন, নাকি বিদেশে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছেন।

এদিকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার বিমানে করেই ভারত পালিয়ে গেছে মর্মে দাবি করেছিল আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বিবিসি। তবে পরে প্রমাণ হয়েছে, তিনি পালাতে পারেননি, দেশেই আছেন। গতকাল মঙ্গলবার পুলিশ তাকে এবং সাবেক আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হককে রাজধানীর সদরঘাট থেকে গ্রেপ্তার করেছে। তাতে মনে হচ্ছে, আরাফাতেরও দেশে আত্মগোপন করে থাকার সম্ভাবনা বেশি।

অন্যদিকে গতকাল মঙ্গলবার সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেছেন, সাবেক মন্ত্রী, এমপিসহ যাদের জীবনের নিরাপত্তার ঝুঁকি আছে, এমন অনেককে তারা আশ্রয় দিয়েছেন। তাই সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাতের সেনা হেফাজতে থাকার সম্ভাবনাও আছে।

 

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.