সাড়ে ১৫ হাজার মানুষের চোখ পরীক্ষা করবে ভিশনস্প্রিং ও ব্র্যাক ব্যাংক

মানুষের দৃষ্টিশক্তির উন্নয়নে কাজ করতে ভিশনস্প্রিংয়ের সাথে চুক্তি করেছে ব্র্যাক ব্যাংক ‘অপরাজেয় আমি’। ‘অপরাজেয় আমি’ হলো স্বাস্থ্যখাতে ব্র্যাক ব্যাংকের একটি বিশেষ কর্পোরেট সোশ্যাল রেসপনসিবিলিটি (সিএসআর) উদ্যোগ, যা প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সক্ষমতা এবং অন্তর্ভুক্তি নিয়ে সমাজে সচেতনতা সৃষ্টিতে কাজ করে।

৩১ জুলাই ঢাকায় ব্র্যাক ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে এই দুটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে চুক্তি-স্বাক্ষর অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় ব্র্যাক ব্যাংকের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিওও মো. সাব্বির হোসেন এবং ভিশনস্প্রিংয়ের কান্ট্রি ডিরেক্টর মাইশা মাহজাবীন নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।

ভিশনস্প্রিংয়ের সাথে চুক্তির মাধ্যমে ব্র্যাক ব্যাংকের লক্ষ্য হলো, এই বছর নিজেদের কর্পোরেট এবং ইমার্জিং কর্পোরেট ক্লায়েন্টের ফ্যাক্টরির ১৫ হাজার কর্মী এবং ৫০০ নন-এক্সিকিউটিভ কর্মীকে বিনামূল্যে আই-স্ক্রিনিং সেবা দেওয়া।

ব্র্যাক ব্যাংক ‘অপরাজেয় আমি’র আওতায় এই উদ্যোগটি এমনভাবে সাজানো করা হয়েছে, যেখানে সমাজের এমন সব মানুষদের চক্ষুসেবা দেওয়া হবে, যারা সামাজিক কুসংস্কার কিংবা সংকীর্ণতার ভয়ে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা থেকে প্রায়শই বঞ্চিত থাকেন। এই উদ্যোগটি বাস্তবায়িত হলে মানুষের কর্মক্ষমতা দীর্ঘায়িত হবে। এর ফলে একদিকে যেমন কর্মীদের উত্পাদনশীলতা বৃদ্ধি পাবে, তেমনি প্রতিষ্ঠানগুলোও দীর্ঘমেয়াদে তাঁদের কাছ থেকে সার্ভিস পাবে।

ভিশনস্প্রিং হলো যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একটি সামাজিক উদ্যোগ, যা ক্লিয়ার ভিশন ওয়ার্কপ্লেস (সিভিডব্লিউ) কর্মসূচির আওতায় সল্যুশন তৈরির মাধ্যমে মানুষের দৃষ্টিশক্তির উন্নয়নে বিশেষভাবে পারদর্শী। ভিশনস্প্রিং আই-স্ক্রিনিং সেবা দেওয়ার পাশাপাশি সেসব শ্রমজীবীদের সাশ্রয়ী মূল্যে চশমা দিয়ে থাকে, যাদের দৈনিক আয় ৪ ডলারেরও কম। একটি সাধারণ কিন্তু সঠিক চশমা মানুষের জীবনে নিয়ে আসতে পারে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন। তবুও প্রায় ২ কোটি বাংলাদেশিদের প্রয়োজন থাকা সত্ত্বেও এই অতিপ্রয়োজনীয় বস্তুটির সুবিধার বাইরে আছেন তাঁরা।

২০০৬ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ভিশনস্প্রিং প্রায় ২৫ লাখ স্বল্প আয়ের বাংলাদেশিদের প্রয়োজনীয় চশমা দেওয়ার মাধ্যমে তাঁদের দৃষ্টিশক্তির উন্নয়নে সাহায্য করেছে। এবারই প্রথমবারের মতো ভিশনস্প্রিং যুক্ত হয়েছে ব্র্যাক ব্যাংকের সাথে, যাতে আরও বেশি সংখ্যক মানুষ এই সেবার আওতায় আসতে পারে।

ব্র্যাক ব্যাংকের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিওও মো. সাব্বির হোসেন এই চুক্তির তাৎপর্য তুলে ধরে বলেন, “ভিশনস্প্রিংয়ের সাথে আমাদের এই উদ্যোগটি আমাদের গ্রাহকদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে বড় একটি পদক্ষেপ। আমাদের সহকর্মী এবং গ্রাহকদের প্রয়োজনীয় চক্ষুসেবা দেওয়ার মাধ্যমে আমরা তাঁদের জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন নিশ্চিত করতে চাই।”

এই উদ্যোগ সম্পর্কে ভিশনস্প্রিংয়ের কান্ট্রি ডিরেক্টর মাইশা মাহজাবীন নিজের উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেন, “সকলের জন্য চক্ষুসেবা সহজলভ্য করার লক্ষ্য নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংকের সাথে এই দারুণ উদ্যোগে যুক্ত হতে পেরে আমরা সত্যিই অনেক আনন্দিত। আমরা বিশ্বাস করি, আমাদের এই যৌথ উদ্যোগ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে দেশের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোও এগিয়ে আসবে এবং সামাজিক সংকীর্ণতার বেড়াজাল ভেঙে নিজেদের প্রতিষ্ঠানের কর্মী এবং গ্রাহকদের দৃষ্টিশক্তি উন্নয়নের মাধ্যমে তাঁদের জীবনে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন নিয়ে আসবে।”

‘অপরাজেয় আমি’ উদ্যোগটি সামাজিক উন্নয়ন এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গঠনে ব্র্যাক ব্যাংকের অবিচল প্রতিশ্রুতিরই প্রতিফলন।

একটি মূল্যবোধভিত্তিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে ব্র্যাক ব্যাংক নিজেদের সিএসআর উদ্যোগগুলোকে এমনভাবে ডিজাইন করে, যা সামাজিক সংকীর্ণতা এবং আর্থিক বাধা দূর করে সমাজের মানুষের জন্য নতুন নতুন সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে তাঁদের সম্ভাবনার সঠিক বিকাশ ঘটিয়ে মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে ব্যাপকভাবে ভূমিকা রাখে।

অর্থসূচক/ এইচআই

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.