নগদ টাকার তীব্র সংকটে সাধারণ মানুষ

রাজনৈতিক পট-পরিবর্তনের পর দেশজুড়ে নিরাপত্তার অভাবে বেশির ভাগ ব্যাংকের এটিএম বুথ বন্ধ রয়েছে। কিছু ব্যাংকের বুথ খোলা থাকলেও তাতে কোন টাকা নেই। পাশাপাশি নিরাপত্তা ঝুঁকি বিবেচনায় ব্যাংকগুলোর সব শাখা এখনো খুলেনি। এর ফলে সাধারণ মানুষ ব্যাংকের টাকা তুলতে পারছেন না। আর এতেই নগদ টাকার তীব্র সংকটে পড়েছেন মানুষ।

ব্যাংক খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশের বেশির ভাগ এটিএমে অর্থ সরবরাহের কাজটি করা হয় তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তৃতীয় পক্ষের এ সেবা বন্ধ রয়েছে। এ কারণে বেশির ভাগ এটিএমে টাকার সংকট দেখা দিয়েছে। তাই বন্ধ হয়ে গেছে দেশজুড়ে বেশির ভাগ ব্যাংকের এটিএম সেবা।

গত কয়েকদিন ধরে মতিঝিল, দিলকুশা ও পল্টন এলকার এবি ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক, মার্কেন্টাইল ব্যাংক ও ইসলামী ব্যাংকের একাধিক এটিএম বুথ থেকে টাকা তুলতে পারেননি সাধারণ মানুষ। বুথে টাকা না থাকায় এমন সংকট তৈরি হয়েছে।

পল্টনে এবি ব্যাংকের এটিএম বুথে টাকা তুলতে এসেছিলেন জাবের হোসেন। তিনি বলেন, জরুরী প্রয়োজনে কিছু টাকা তুলতে এসেছিলাম। তবে এবি ব্যাংক ছাড়াও আশেপাশের কোনো ব্যাংকের বুথ থেকে টাকা উত্তোলন করা সম্ভব হচ্ছে না। একদিন আগেও টাকা তুলতে পারিনি। তাই আজকেও আবার খালি হাতেই চলে যেতে হচ্ছে।

এছাড়া কয়েকটি ব্যাংকের বুথ বন্ধ থাকয় বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ নগদ টাকা উত্তোলন করতে গিয়ে কয়েক দিন ধরে সংকটে পড়েছেন।

ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, যতটা না টাকার সংকট তার চেয়ে বেশি নিরাপত্তার শঙ্কায় ব্যাংকগুলো তাদের এটিএম কার্যক্রম কমিয়ে দিয়েছে। চলমান পরিস্থিতিতে টাকা পরিবহনের ঝুঁকি নিতে চাচ্ছে না অনেক ব্যাংক ও এটিএমে অর্থ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান। আবার বাংলাদেশ ব্যাংক থেকেও চাহিদা অনুযায়ী নগদ টাকা পাওয়া যাচ্ছে না।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত মে মাস শেষে দেশে বিভিন্ন ব্যাংকের মোট এটিএমের সংখ্যা ছিল ১৩ হাজার ৪২৮। এর মধ্যে শহরাঞ্চলে ৯ হাজার ৪০৯টি আর গ্রামাঞ্চলে ৪ হাজার ১৯টি। এটিএম ছাড়া সিআরএমের (ক্যাশ রিস্লাইকিং মেশিন) মাধ্যমেও নগদ টাকা উত্তোলন করা যায়।

জানা যায়, দেশের বেসরকারি খাতের ব্র্যাক, সিটি, ঢাকা ব্যাংকসহ অনেক ব্যাংক এখন এটিএমের বদলে সিআরএমের প্রতি ঝুঁকছে। সিআরএমে টাকার উত্তোলনের পাশাপাশি নগদ জমারও সুযোগ রয়েছে। এ কারণে ধীরে ধীরে সিআরএমের সংখ্যা বাড়ছে। গত মে মাস শেষে দেশে সিআরএমের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৪৫০। এসব সিআরএমের সিংহভাগই শহরাঞ্চলে, যা ৩ হাজার ৯৮৫টি।

অর্থসূচক/এমএইচ

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.