কাশিমপুর কারাগারে উত্তেজনা, সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে নিয়ন্ত্রণে

গাজীপুরের কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতরে বন্দিদের মুক্তির দাবিতে উত্তেজনা শুরু হয়েছে। পরে বিপুল সংখ্যক সেনাবাহিনীর সদস্যরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। এ ছাড়া কিছুক্ষণ পরপর সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টার টহল দিচ্ছে।

মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। আকাশে হেলিকপ্টার চক্কর দিতে দেখা গেছে। এ সময় কারাগারের ভেতরে কারারক্ষীদের সঙ্গে সংঘর্ষের দাবি করছে ফটকে থাকা তাদের স্বজনরা।

জানা গেছে, বেলা ১১টার দিকে কিছু বন্দি কারাগারের অভ্যন্তরে থাকা কারারক্ষীদের জিম্মি করে মুক্তির দাবিতে বিদ্রোহ শুরু করে। পরে কারারক্ষীরা তাদের শান্ত করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। এ সময় আগে থেকেই সেখানে অল্প সংখ্যক সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাদের নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেন। এর মধ্যে উত্তেজনা আরও বেড়ে গেলে দুপুর দেড়টার দিকে অতিরিক্ত আরও সেনা সদস্য হেলিকপ্টার যোগে কারা অভ্যন্তরে এসে বন্দিদের নিয়ন্ত্রণ করেন।

সরকারি ঘোষণার পর কোটা সংস্কার আন্দোলনে গ্রেফতার আসা‌মিদের ছে‌ড়ে দেওয়ার আশায় স্বজনদের কেন্দ্রীয় কারাগারের সামনে অবস্থান করতে দেখা যায়। একপর্যায়ে তা‌রা কারা‌ফটক ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করার চেষ্টা ক‌রে। প‌রে সেনাসদস‌্যরা এসে প‌রি‌স্থি‌তি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এ সময় ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক, কোনাবাড়ি জেলখানা সড়কের আশপাশে হাজার হাজার উৎসুক জনতার উপস্থিতি লক্ষ করা গেছে।

জানা গেছে, গাজীপুরের কাশিমপুর কারা কমপ্লেক্সে পৃথক চারটি কারগার রয়েছে। এর মধ্যে হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে বিডিআর বিদ্রোহ মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি, জঙ্গি, ফাঁসি ও যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত দুর্ধর্ষ সব বন্দিরা রয়েছে। এছাড়া রাজনৈতিক মামলায় গ্রেপ্তার অনেক নেতাকর্মীও ওই কারগারে রয়েছে। কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-১, কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ ও কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারেও গুরুত্বপূর্ণ মামলার আসামি ও ফাঁসির আসামি রয়েছে।

এদিকে মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় রাষ্ট্রপতি কার্যালয়ের জনবিভাগের উপ-প্রেসসচিব মো. শিপলু জামানের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন এবং বিভিন্ন মামলায় আটককৃতদের মুক্তি দেওয়া শুরু হয়েছে এবং ইতোমধ্যে অনেকে মুক্তি পেয়েছেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচির দিনে গতকাল (৫ আগস্ট) লাখো ছাত্র-জনতার দখলে ছিল রাজধানী ঢাকা। এদিন পদত্যাগ করে দেশ থেকে ভারতে পালিয়ে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর উদ্ভুত পরিস্থিতিতে সংকট সমাধানে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে বিকেলে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। রাতে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা বৈঠক করেন।

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.