সোশ্যাল মিডিয়া এখন বিপদের কারবার: প্রধান বিচারপতি

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম (সোশ্যাল মিডিয়া) এখন এক বিপদের কারবার বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) বিএনপির আইনজীবীদের আদালত অবমাননার বিষয়ে শুনানিতে প্রধান বিচারপতি এই মন্তব্য করেন। পরে এ সংক্রান্ত আদেশের দিন পিছিয়ে আগামী ২২ আগস্ট পরবর্তী দিন নির্ধারণ করেছেন আপিল বিভাগ।

আদালতে আজ বিএনপি নেতা ও আইনজীবীদের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন ও ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল।

প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘সোশ্যাল মিডিয়া এখন এক বিপদের কারবার। ঘরের ভেতরের বিষয়গুলো এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় চলে আসে। সোশ্যাল মিডিয়া নিয়ে কিছু বললে আবার রাইট টু ফ্রিডম নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।’

পরে, আপিল বিভাগের দুই বিচারপতির বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন ও মিছিল-সমাবেশ করার ঘটনায় বিএনপিপন্থি ছয় আইনজীবীর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার আবেদনের ওপর আদেশের দিন পিছিয়ে ২২ আগস্ট পরবর্তী দিন নির্ধারণ করেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।

এর আগে গত ১২ জুন আপিল বিভাগের দুই বিচারপতির বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন ও মিছিল সমাবেশ করার ঘটনায় আদালত অবমাননার মামলায় বিএনপির ছয় শীর্ষ আইনজীবী নেতাকে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দিয়েছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে আদালত অবমাননার অভিযোগের বিষয়ে ২৫ জুলাইয়ের মধ্যে তাদের লিখিত ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়। তারই ধারাবাহিকতায় ছয় আইনজীবী তাদের পক্ষ থেকে ব্যাখ্যা দাখিল করেন।

আদালত অবমাননায় অভিযুক্ত ছিলেন সাত জন। তাদের মধ্যে সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট এ জে মোহাম্মদ আলী গত ২ মে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। তাই তার বিরুদ্ধে আসা অভিযোগ বাদ দেওয়া হয়েছে বলেও জানান আইনজীবী মাকসুদ উল্লাহ।

জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলী ছাড়া আদালত অবমাননার অভিযোগ ওঠা বিএনপিপন্থি ছয় আইনজীবী হলেন- জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের মহাসচিব ও বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট ফাহিমা নাসরিন মুন্নি, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম সুপ্রিম কোর্ট শাখার সভাপতি অ্যাডভোকেট আব্দুল জব্বার ভূঁইয়া, সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সহ-সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান খান ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সুপ্রিম কোর্ট শাখার সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট গাজী মো. কামরুল ইসলাম সজল।

আপিল বিভাগের দুজন বিচারপতি সম্পর্কে এক সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্যের সূত্র ধরে এই আইনজীবীদের বিরুদ্ধে গত বছরের ২৯ আগস্ট আদালত অবমাননার অভিযোগে আবেদন করা হয়। আবেদনটি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. নাজমুল হুদা।

আবেদনে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনে গত বছরের ২৭ আগস্ট সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্যের কয়েকটি লাইন উদ্ধৃত করা হয়। বিচারপতিদের নিয়ে ব্যানার-লিফলেটসহ বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের মিছিল-অবস্থানের ছবিও আবেদনে যুক্ত করা হয়। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের দুই বিচারকের পদত্যাগ দাবি করে সংবাদ সম্মেলন ও মিছিল-সমাবেশ করায় বিএনপিপন্থি সাত আইনজীবীকে আদালত অবমাননার ব্যাখ্যা দিতে বলেন আপিল বিভাগ। গত বছরের ১৫ নভেম্বর প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বিভাগের বেঞ্চ এ আদেশ দেন। একইসঙ্গে আদালত প্রাঙ্গণে মিছিল-সমাবেশের বিষয়েও রায় মেনে চলার নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ।

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.