কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে ঢাকাসহ দেশজুড়ে সহিংসতায়র ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে সাঁড়াশি অভিযান চলাচ্ছে র্যাব-ডিবিসহ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট। সহিংসতার ঘটনায় এ পর্যন্ত রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন থানায় অন্তত ১৫৯টি মামলা হয়েছে।
এর মধ্যে ২৯টি মামলা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর হামলা, রাষ্ট্রীয় সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগে ১৭টি থানায় দায়ের করা মামলায় ৪৯৯ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৭৪ হাজার ৫৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। ২৪টি মামলায় আসামির সংখ্যা উল্লেখ না করে শুধু ‘অনেক অজ্ঞাত আসামি’ উল্লেখ করা হয়েছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) বলছে, নাশকতার ঘটনায় এ পর্যন্ত ৩৮টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় ১ হাজার ১১৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এর মধ্যে সোমবার থেকে গতকাল মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৬০১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের বেশির ভাগ বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মী। এ ছাড়া রাজনৈতিক সম্পৃক্ততাহীন শ্রমজীবী সাধারণ মানুষকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ঢাকার বাইরে আরও অন্তত ১২১টি মামলায় ১ হাজার ৬৩০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ নিয়ে সারাদেশে অন্তত ১৫৯ মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে ২ হাজার ৭৪৭ জনকে।
এদিকে চলমান অভিযানে নিরপরাধ লোকজনকেও গ্রেপ্তার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বিএনপির দাবি, ঢালাওভাবে দলটির নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলছে, হত্যা-নাশকতায় জড়িত ছিল না, এমন কাউকে হয়রানি করা হচ্ছে না। সন্দেহভাজন হিসেবে আটকদের যাচাই-বাছাই করে সংশ্লিষ্টতা না পেলে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে।
পুলিশ সূত্র জানায়, ঢাকায় বিভিন্ন থানা, পুলিশ বক্স, ফাঁড়ি, কর্মকর্তাদের কার্যালয়সহ পুলিশের অনেক স্থাপনায় আগুন দেওয়া হয়েছে। তথ্য বলছে, ঢাকায় ৫৪টি ট্রাফিক বক্স পোড়ানো হয়েছে। ট্রাফিক-গুলশান বিভাগের উপকমিশনার এবং রমনা, রামপুরা, মহাখালী ও উত্তরায় সহকারী কমিশনারের কার্যালয় পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, সহিংসতায় দেশের বিভিন্ন এলাকায় পুলিশের ২৮১টি বিভিন্ন ধরনের গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে বা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে এবং থানা ও ফাঁড়িসহ পুলিশের ২৩৫টি স্থাপনা ভাঙচুর বা পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
অর্থসূচক/এএইচআর



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.