কোটা সংস্কারের দাবিতে চলমান আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের মৃত্যু এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের হামলার ঘটনায় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন ও সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতের কক্ষ ভাঙচুর করা হয়েছে।
বুধবার ভোর থেকে হলপাড়ায় মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলে প্রথম ঝামেলা শুরু হয়। হলের শিক্ষার্থীরা নিচে জড়ো হতে থাকেন। এরপর নেতাদের কক্ষ ভাঙচুর করা হয়। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীরা প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক বিল্লাল হোসেনের থেকে ‘হল রাজনীতিমুক্ত’ লিখিত নেন। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে সকাল সাতটা থেকে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু হলে বিক্ষোভ শুরু করেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। তারা হলে অবস্থানরত ছাত্রলীগ নেতাদের কক্ষ ছাড়তে বাধ্য করেন।
এ ছাড়া কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা, হল ছাত্রলীগের শীর্ষ পদপ্রত্যাশী নেতারা হলের পেছনের দিক দিয়ে পালিয়ে যান। শিক্ষার্থীরা নেতাদের কক্ষের সব জিনিসপত্র ভাঙচুর করেন এবং বাইরে ফেলে দেন। এ সময় সূর্যসেন হল শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শামিমুল ইসলামের (২০১৭-১৮ সেশন-ভাষাবিজ্ঞান) কক্ষ থেকে একটি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়। এটি বর্তমানে হল অফিসে আছে।
পরে সকাল আটটা থেকে কবি জসিম উদ্দীন হল, বিজয় একাত্তর হল, মাস্টার দা সূর্যসেন হলেও শিক্ষার্থীরা হল দখলে নিয়ে ছাত্রলীগ নেতাদের বের করে দেন এবং তাদের কক্ষ ভাঙচুর করে জিনিসপত্র বাইরে ফেলে দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেন। তবে বিজয় একাত্তর হল ছাত্রলীগ নেতারা ঘটনা আঁচ করতে পেরে নিজ থেকে বের হয়ে যান।
এ এফ রহমান হলে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের ৩১৮ নম্বর কক্ষ ভাঙচুর করা হয়। এ সময় তার কক্ষে সবকিছু নিচে ফেলে দেওয়া হয়। এ ছাড়া হলে সব নেতাদের কক্ষ ভাঙচুর করা হয়।
কবি জসিম উদ্দীন হলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতের কক্ষ, বিজয় একাত্তর হলে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানের পদ্মা-৭০১০ কক্ষ ও সূর্যসেন হলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবীর শয়নের ৩৪৪ নম্বর ভাঙচুর করা হয়। বর্তমানে এসব হল শিক্ষার্থীরা দখলে নিয়েছেন।
এর আগে মঙ্গলবার রাত থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে ছাত্রলীগ ‘তাড়ানো’ শুরু হয়। মেয়েদের হলগুলোতে রাতের মধ্যে ছাত্রলীগ নেতাদের বের করে দিয়ে হল ‘রাজনীতিমুক্ত’ থাকবে মর্মে প্রাধ্যক্ষের কাছ থেকে লিখিত নিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
অর্থসূচক/এএইচআর



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.