রাজু ভাস্কর্যে শিক্ষার্থীরা, শাহবাগে পুলিশ

কোটা সংস্কারের একদফা দাবি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) টিএসসির রাজু ভাস্কর্যের সামনে জড়ো হয়েছে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। এদিকে আন্দোলকারীদের রুখতে শাহবাগসহ আশপাশের সড়কে জলকামানসহ বিপুলসংখ্যক পুলিশ অবস্থান নিয়েছে।

সোমবার রাজু ভাস্কর্যের সামনে বুয়েট, ঢাকা মেডিক্যাল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও অধিভুক্ত ৭ কলেজের শিক্ষার্থীরা সমবেত হচ্ছেন। এ সময় তারা স্লোগান দিচ্ছেন, ‘তুমি নও আমি নই, রাজাকার রাজাকার’, ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’।

শিক্ষার্থীরা জানান, প্রধানমন্ত্রী কোটা আন্দোলনকারীদের রাজাকার বলে আখ্যায়িত করেছে। তার বক্তব্য প্রত্যাহারের প্রতিবাদে ও সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের এক দফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল চলবে। মিছিলটি রাজু ভাস্কর্য থেকে ঢাবির বিভিন্ন হল ও সড়ক পরিদর্শন করবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘অপমানজনক মন্তব্য’র প্রতিবাদ জানাতে গতরাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমে আসেন। গত দুই সপ্তাহ ধরে কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে সারা দেশে বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীরা রাত ১১টার দিকে নিজ নিজ ক্যাম্পাসে মিছিল করেন। গতকাল গণভবনে প্রধানমন্ত্রী র সংবাদ সম্মেলনের কয়েক ঘণ্টা পর এ বিক্ষোভ দেখান তারা।

সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে এত ক্ষোভ কেন? মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-পুতিরাও পাবে না? তাহলে কি রাজাকারের নাতি-পুতিরা পাবে? আমার প্রশ্ন দেশবাসীর কাছে।’

কোটাব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, গতকাল প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন থেকে আসা বক্তব্য আজ দুপুর ১২টার মধ্যে প্রত্যাহার না করলে তারা আন্দোলনে নামবেন।

গতকাল রাতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভকে ঘিরে ছাত্রলীগের একটি অংশ মধুর ক্যানটিনে অবস্থান নিয়েছিল। ছাত্রলীগের ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখার নেতাকর্মীরা মোটরসাইকেলে করে লাঠিসোঁটা নিয়ে মধ্যরাত থেকে জড়ো হন শাহবাগ এলাকায়। ছাত্রলীগ ছাড়াও আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীরাও সেখানে ছিলেন। ক্যাম্পাসের আশপাশে তাদের দেখা গেলেও তারা কোটাবিরোধী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘাতে জড়াননি। কিন্তু সরকার সমর্থক সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীদের এমন অবস্থানে কোটাবিরোধী শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিল।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা চলে যাওয়ার পর টিএসসি এলাকায় তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত, যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খানসহ আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা-কর্মীদের দেখা যায়। পরে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল বের করে ছাত্রলীগ।

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.