সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওপর গুলি চালানোর ঘটনার পরে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে চাঙ্গাভাব বিরাজ করছে। বিনিয়োগকারীরা মনে করছেন, আসন্ন নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট হিসেবে তাঁর জয়ের বিষয়ে বাজি ধরার মানুষ আরও বাড়বে। এমন পরিস্থিতির মধ্যে আগামী সপ্তাহগুলোতে বাজার আরও চাঙা হতে পারে বলে মনে করছেন সিঙ্গাপুরের বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইস্টস্প্রিং ইনভেস্টমেন্টসের পোর্টফোলিও ম্যানেজার রং রেন গোহ।
শনিবার (১৩ জুলাই) পেনসিলভানিয়ায় এক নির্বাচনী জনসভায় ট্রাম্পের ওপর গুলি চালানো হলে গুলি তাঁর কানে লাগে।
কর্তৃপক্ষ বলছে, এই হামলা ট্রাম্পকে হত্যার উদ্দেশ্যে চালানো হয়েছিল বলে তারা মনে করছে। হামলার কয়েক মুহূর্ত পর রক্তে রঞ্জিত ডোনাল্ড ট্রাম্প শূন্যে হাত ছোড়েন। তাঁর প্রচারণা শিবির বলছে, সাবেক প্রেসিডেন্ট ঠিক আছেন।
এই ঘটনার আগেই ট্রাম্পের জয়ের সম্ভাবনায় ডলারের দাম বেড়েছিল। এদিকে ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হতে পারেন, এমন সম্ভাবনায় মার্কিন ট্রেজারি বন্ডের সুদ বাড়ছে।
অপরদিকে শেয়ারের দামও বাড়ছে। শুক্রবারে এসঅ্যান্ডপি ৫০০ এবং ডাউ জোনস ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাভারেজ শেয়ার সূচক নতুন রেকর্ড করেছে। এর মধ্যে এসঅ্যান্ডপি ৫০০ চলতি বছরে ১৮ শতাংশ বেড়েছে।
নিক ফেরেস বলেন, ‘ট্রাম্প সব সময়ই বাজারপন্থী মানুষ। মূল বিষয় হবে এটা দেখা যে রাজস্ব নীতি দায়িত্বজ্ঞানহীনভাবে শিথিল থাকবে কি না। সেটা হলে আবার মূল্যস্ফীতি হবে এবং তাতে সুদের হার বেড়ে যাবে।’
বিনিয়োগ ব্যাংক গোল্ডম্যান স্যাকসের বিশ্লেষকেরা লিখেছেন, ‘গত ২০ বছরের পাঁচটি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সিইওদের আস্থা, ভোক্তা মনোভাব এবং বিশেষ করে ছোট ব্যবসার আশাবাদ ডেমোক্র্যাট জয়ের চেয়ে রিপাবলিকান জয়ের দিকে বেশি ঝুঁকেছে। বড় ধরনের নীতি পরিবর্তন ছাড়াই কিছু কোম্পানির আয়ের সম্ভাবনা আরও বাড়তে পারে, যদি ট্রাম্প নির্বাচনে জেতেন।’
রয়টার্স, ইপসস জরিপে দেখা গেছে, এবারের নির্বাচনে মূল্য ইস্যু অভিবাসন ও অর্থনীতি। সে কারণে ভোটারদের অনেকেই মনে করেন, অর্থনীতি বিবেচনায় ট্রাম্প তুলনামূলক ভালো প্রার্থী। যদিও অর্থনীতি শক্তিশালী আছে, মূল্যস্ফীতি কমছে এবং বেকারের সংখ্যাও কম। বাইডেন এসব দেখিয়ে নির্বাচনে জেতার চেষ্টা করছেন।
ট্রাম্পের অধীনে আরও কঠোর বাণিজ্য নীতি হবে, কম নিয়ন্ত্রণ থাকবে এবং জলবায়ু পরিবর্তন-সংক্রান্ত নীতিমালা শিথিল থাকবে—বাজার বিশ্লেষকেরা এমনটাই প্রত্যাশা করছেন। একই সঙ্গে করপোরেট ও ব্যক্তিগত কর কমানোর কারণে ট্রাম্পের অধীনে বাজেট-ঘাটতি বাড়বে বলেও মনে করেন বিনিয়োগকারীরা।
গত ফেব্রুয়ারিতে ট্রাম্প বলেছিলেন যে তিনি কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েলকে পুনরায় নিয়োগ দেবেন না। তাঁর দ্বিতীয় চার বছরের মেয়াদ ২০২৬ সালে শেষ হবে।
অর্থসূচক/এমএস



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.