ফুল কখনো লোভী হয় না, মানুষ যেমন হয়। ফুলকে ভালোবাসে না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া খুব কঠিন। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার, তিনিওতো একজন মানুষ। ফলে সবার মতো তিনিও ফুলকে ভীষণ ভালোবাসেন।
ফুলের প্রতি গভর্নরের ভালোবাসার বড় উদাহরণ বাংলাদেশ ব্যাংকের আঙ্গিনা। বাংলাদেশ ব্যাংকের আঙ্গিনার চারদিকে রয়েছে ফুল ও ফল গাছের বিশাল সমাহার। প্রকৃতির সঙ্গে তালমিলেয়ে এসব গাছে ফুটে হরেক রঙয়ের ফুল। নির্দেশনা অনুযায়ী, গাছগুলোর পরিচর্যাও করা হচ্ছে নিয়মিত।

দেশের আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে কাজ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তাই এর আঙ্গিনায় ব্যাংক কর্মকর্তারা, ব্যবসায়ীরা, ঋণ খেলাপিরাসহ অনেকেই আসেন। তবে বেশ কয়েক মাস ধরে শুধু সাংবাদিকরাই ফুলে ভরা বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রবেশ করতে পারছেন না। আর এখানে সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন ‘প্রকৃতিপ্রেমী’ গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার।

এখনো বাংলাদেশ ব্যাংকে নিয়মিত প্রবেশ করছেন ঋণ খেলাপি ও বড় দুর্নীতিবাজেরা। দীর্ঘদিনের সখ্যতার কারণে তারাও হয়তো এখন জানেন, ফুলকে কতটা ভালোবাসেন গভর্নর। আর এজন্য তারাও নানা উপঢৌকনের সঙ্গে অবশ্যই একটি ‘ফুলের তোড়া’ নিয়ে আসেন। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরও সেটি হাসি মুখে গ্রহণ করেন। এর কাহিনী কি শুধুই প্রকৃতির প্রতি ‘প্রেম’, নাকি ফুলের পাপড়ির নিচে কাটা আছে?
সাম্প্রতিক সময়ে ছাগল কাণ্ডে ব্যাপক আলোচিত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তা ড. মো. মতিউর রহমান। বিতর্কিত এই ব্যক্তির সঙ্গে বেশ সখ্যতা রয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের, সম্প্রতি এমন তথ্য প্রকাশ পায়।

আলোচিত মতিউর রহমানও গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের সঙ্গে দেখা করতে আসার সময় ‘ফুলের তোড়া’ নিয়ে আসতেন। বাংলাদেশ ব্যাংকে ফুল হাতে হাস্যোজ্জ্বল গভর্নর ও ছাগল কাণ্ডের মতিউর ছবিও তুলেছেন। আজ এমনই একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
সম্প্রতি গণমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে, ২০২২ সালে মতিউর রহমানকে সোনালী ব্যাংকের পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার জন্য তদবির করেছিলেন তৎকালীন অর্থসচিব আবদুর রউফ তালুকদার।
মতিউর রহমান কিছুদিন ধরে আলোচনায় আসেন তাঁর ছেলের কারণে। কোরবানির ঈদে সাদিক অ্যাগ্রো নামের একটি খামার থেকে মতিউর রহমানের ছেলে মুশফিকুর রহমান ১৫ লাখ টাকায় একটি ছাগল কেনা ছাড়াও ঢাকার বিভিন্ন খামার থেকে ৭০ লাখ টাকার গরু কিনেছেন বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়।
এর পর থেকে মতিউর রহমানের ছেলের দামি ঘড়ি, গাড়ি, আলিশান জীবনযাপন; মতিউর রহমান ও পরিবারের সদস্যদের নামে রিসোর্ট, শুটিং স্পট, বাংলো বাড়ি, জমিসহ নামে-বেনামে সম্পত্তি থাকার বিষয়ে একের পর এক খবর প্রকাশিত হতে থাকে।
ছাগল কাণ্ডের জের ধরে মঙ্গলবার (২৫ জুন) মতিউর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের বিও (বেনিফিশিয়ারি) হিসাব স্থগিত করার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। একইদিনে তাদের সব ব্যাংক হিসাব স্থগিত করার নির্দেশ দেয় বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।
অর্থসূচক/



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.