প্রায় আড়াই বছর ধরেরাশিয়ার হামলা মোকাবিলা করে চলেছে ইউক্রেন৷ দেশটির সরকার যুদ্ধ-পরবর্তী ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করতে আগে থেকেই পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে সমন্বয় করে চলেছে৷ সামরিক জোট ন্যাটোর পাশাপাশি ইউরোপীয় ইউনিয়নের পূর্ণ সদস্যও হওয়ার লক্ষ্য স্থির করেছে ইউক্রেন৷ নিজস্ব ভূখণ্ডের একটা উল্লেখযোগ্য অংশ রাশিয়ার দখলে থাকায় এখনই ন্যাটো সদস্য হওয়ার কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না৷ তবে ইইউ সদস্য হওয়ার পথে যথেষ্ট দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে সে দেশ৷
মঙ্গলবার ইইউ কমিশন ইউক্রেন ও মলদোভার সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে আলোচনা শুরু করলো৷ সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের তিন দেশ লাটভিয়া, লিথুয়েনিয়া ও এস্টোনিয়া আগেই ইইউ-তে যোগ দিয়েছে৷ এবার আরো দুটি দেশের সেই আবেদনের ভিত্তিতে জটিল প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে৷ ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে জর্জিয়াও প্রার্থী হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে৷ ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী ডেনিস স্মিগাল বলেন, ইউক্রেন ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে সম্পর্কের নতুন এক অধ্যায় শুরু হতে চলেছে৷
প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি দিনটিকে ‘ঐতিহাসিক’ হিসেবে বর্ণনা করেন৷ তিনি বলেন, ঐক্যবদ্ধ ইউরোপ ও সব ইউরোপীয় দেশের সাধারণ বাসার পথ থেকে ইউক্রেন কখনো বিচ্যুত হবে না৷ ইইউ কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডেয়ার লাইয়েন এই সিদ্ধান্তকে ইউক্রেন, মলদোভা ও ইইউ-র মানুষের জন্য অত্যন্ত ভালো খবর হিসেবে বর্ণনা করেন৷ তাঁর মতে, চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও সেই প্রক্রিয়া সুযোগে ভরা৷
আবেদন থেকে শুরু করে ইইউ-তে যোগদানের লক্ষ্যে আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরুর প্রক্রিয়া যথেষ্ট দ্রুত গতিতে এগোলেও মূল আলোচনা বহু বছর ধরে চলবে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে৷ ইইউ-র মানদণ্ডের দিকে এগোতে ইউক্রেনকে এখনো অনেক সংস্কার চালাতে হবে৷ কঠিন সেই প্রক্রিয়ার সাফল্যের উপর পূর্ণ সদস্যপদ নির্ভর করবে৷ তাছাড়া হাঙ্গেরির মতো রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ সরকার ইউক্রেনের সদস্যপদের বিরোধিতা করে যেতে পারে৷ তবে যুদ্ধের মাঝেও ইউক্রেন বেশ কিছু ‘সাহসি’ সংস্কার শুরু করে প্রশংসা কুড়িয়েছে৷ ইউক্রেনের প্রধান মধ্যস্থতাকারী হিসেবে উপ প্রধানমন্ত্রী ওলগা স্টেফানিশনা ২০৩০ সালের মধ্যে সব পূর্বশর্ত পূরণ করে ইইউ সদস্য হওয়ার অঙ্গীকার করেন৷ তাঁর আশা, গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারের শেষে ২০২৫ সালেই সদস্য হওয়ার পূর্বশর্ত হিসেবে ৩৫টি সুনির্দিষ্ট বিষয়ে আলোচনা শুরু হবে৷
বেশ কিছু বছর ধরে ইউরোপীয় ইউনিয়নে নতুন সদস্য গ্রহণ করার প্রক্রিয়া কার্যত থেকে থাকলেও ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার হামলার পর বিষয়টি বাড়তি গুরুত্ব পাচ্ছে৷ বিশেষ করে বলকান অঞ্চলের পশ্চিমের দেশগুলির সঙ্গে আলোচনায় অগ্রগতি হচ্ছে৷ ফলে সার্বিয়া, মন্টেনেগ্রো, আলবেনিয়া ও উত্তর ম্যাসিডোনিয়াও কোনো এক সময়ে পূর্ণ সদস্য হয়ে উঠবে বলে আশা দেখা দিচ্ছে৷
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে রাশিয়ার হামলা শুরুর পরেই ইউক্রেন ইইউ-তে যোগদানের আবেদন করেছিল৷ সূত্র: ডিডাব্লিউ, এএফপি, ডিপিএ
🇺🇦🇪🇺A historic moment for Ukraine and Europe. Today we officially begin negotiations on Ukraine's accession to the EU. For our country, this means values and hope. Thousands of Ukrainians have given their lives for an independent, European #Ukraine. And we will do everything in… pic.twitter.com/wOt2dBYu2T
— Denys Shmyhal (@Denys_Shmyhal) June 25, 2024
অর্থসূচক/এএইচআর



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.