বিষাক্ত মদপান করে ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য তামিলনাড়ুতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫৬ জনে পৌঁছেছে। এ ঘটনায় চিকিৎসাধীন আছেন আরও ১১৭ জন। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর বরাত দিয়ে সোমবার (২৪ জুন) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে এএফপি।
গত সপ্তাহে কাল্লাকুরিচি জেলার কয়েকশ মানুষ স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত মদ ‘আরক’ পান করেন। সেই মদের সঙ্গে রাসায়নিক উপকরণ মিথানল মেশানো হয়েছিল।
প্রতি বছরই ভারতে শত শত মানুষ অবৈধ বা অনানুষ্ঠানিক চোলাইখানায় উৎপাদিত সস্তা মদপান করে মারা যান। তবে এবারের বিষক্রিয়ার ঘটনাটি সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সবচেয়ে ভয়াবহ। ভারতে মদকে আরও কড়া করে তোলার জন্য প্রায়ই এর সঙ্গে মিথানল মেশানো হয়।
জানা গেছে, আরও অন্তত ১১৭ জন মানুষ বিষাক্ত মদপানজনিত কারণে সৃষ্ট বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, অসুস্থদের সবাই জ্বর অত্যধিক ডায়রিয়া, ক্লান্তি, ঘন ঘন বমি ও বমি বমি ভাব, পাকস্থলিতে ব্যথা চোখে জ্বালাপোড়াসহ বিভিন্ন শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন। তাদেরমধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর।
বিষাক্ত মদ বিক্রির অভিযোগে ইতোমধ্যে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে তামিলনাড়ু পুলিশ। সেই সঙ্গে কাল্লাকুরুচি পুলিশের যে শাখা রাজ্যের মদের বাণিজ্য নজরদারিতে রাখার দায়িত্বে ছিল— সেই শাখার একজন জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা ও ১০ পুলিশ সদস্যকে চাকরি থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
মদবিক্রির লাইসেন্স বা বৈধতাপত্র নেই— এমন বিক্রেতারা প্রায় সময়েই তাদের পণ্যের তেজ বাড়ানোর জন্য মিথানল নামের একটি রাসায়নিক মেশান। এটি খুবই উচ্চমাত্রার বিষাক্ত অ্যালকোহল। বিশুদ্ধ মিথানল সামান্যমাত্রায় গ্রহণ করলেও তা অন্ধত্ব, যকৃৎ অকার্যকর এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত ঘটাতে পারে।
লাইসেন্সবিহীন মদ বিক্রেতারা অনেক কম দামে তাদের পণ্য বিক্রি করেন। ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে প্রতি বছর বিষাক্ত মদপানে বহু মানুষের মৃত্যু হয়। এই মৃতদের অধিকাংশই হতদরিদ্র।
তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিন প্রত্যেক মৃতের পরিবারকে ১০ লাখ রুপি এবং প্রত্যেক অসুস্থের পরিবারকে ৫০ হাজার রুপি ক্ষতিপূরণ প্রদানের ঘোষণা দিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক বার্তায় এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যার অবৈধ মদ ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত, তাদের পুরো চক্রকে শিগগিরই গ্রেপ্তার করা হবে।
অর্থসূচক/এমএস
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.