সৌদি আরবে এ বছর পবিত্র হজ পালন করতে গিয়ে মারা গেছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ১ হাজার ৩০১ জন নাগরিক। তাদের বেশিরভাগই ছিলেন অননুমোদিত হজযাত্রী যারা প্রচণ্ড গরমে দীর্ঘ পথ পায়ে হেঁটে এসেছিলেন।
সৌদি আরবের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এই তথ্য জানিয়েছে।
সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী ফাহাদ আল-জালাজেল বলেছেন, এবারের হজ মৌসুমে মারা যাওয়া হাজীদের মধ্যে ৮৩ শতাংশই ছিলেন অনিবন্ধিত। তাঁরা পর্যাপ্ত আশ্রয় বা আরাম ছাড়াই সরাসরি কড়া রোদের মধ্যে দীর্ঘ পথ হেঁটেছিলেন।
সৌদি বার্তাসংস্থা এসপিএ জানিয়েছে, যারা মারা গেছে তাদের চার ভাগের তিন ভাগের সেখানে থাকার অনুমতি ছিল না। এছাড়া যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে কয়েকজন বয়স্ক ছিলেন।
সৌদি আরবে তাপমাত্রা এবার ৫১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত উঠেছিল। এ পরিস্থিতিকেই একটা বড় কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। সৌদি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় উচ্চতাপ ও পানিশূন্যতা এড়াতে সতর্কতা জারি করলেও অনেক হাজি তীব্র গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা এবং হিটস্ট্রোকের শিকার হয়েছেন। ১০টি দেশ থেকে হজ পালন করতে আসা মানুষের মধ্যে সর্বাধিক মৃত্যু হয়েছে মিসরীয়দের।
প্রচণ্ড গরমের মধ্যেই হাজিরা প্রায়ই দীর্ঘ পথ হাঁটতে বাধ্য হয়েছেন। এ জন্য অনেকে বিভিন্ন জায়গায় রাস্তা আটকে দেওয়া এবং খারাপ পরিবহন ব্যবস্থাপনাকে দায়ী করছেন।
এ ছাড়া অনেক হাজিই পর্যাপ্ত চিকিৎসাসেবা পাননি বলে জানা গেছে। অনেকে বলছেন, যারা তীব্র গরমে ক্লান্তি বা অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগেছেন, তাদের জন্য অ্যাম্বুলেন্স বা প্রাথমিক চিকিৎসা সহজে পাওয়ার উপায় ছিল না।
এদিকে হজ করতে একজন হাজিকে একটি বিশেষ হজ ভিসার জন্য আবেদন করতে হয়। কিন্তু কিছু ব্যক্তি অবৈধভাবে সৌদিতে প্রবেশ করেন। এই ‘অনুমোদনহীন হজ’ সমস্যা অতিরিক্ত মৃত্যুর জন্য দায়ী বলে মনে করা হয়। এ ছাড়া অনেক হাজি জীবনের শেষের দিকে হজে যান। তারা আশা করেন যে, হজে গেলে সেখানেই যেন তাঁর মৃত্যু হয়। কারণ হজ পালনের সময় মৃত্যু সৌভাগ্যের বিষয় মনে করেন তারা।
অর্থসূচক/এএইচআর



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.