টানা ভারী বর্ষণে কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলায় ৬ হাজারের বেশি মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তলিয়ে গেছে ফসলি জমি-চিংড়িঘেরও। প্রাণহানি রোধে পাহাড়ে বসবাসকারীদের সরে যেতে মাইকিং করছে উপজেলা প্রশাসন।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে আজ বুধবার (১৯ জুন) পর্যন্ত ভারী বর্ষণের কারণে পাহাড়ধসের ঝুঁকিপূর্ণ বাড়ায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হচ্ছে।
জানা গেছে, উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের মৌলভী বাজার, ওয়াব্রাং, চৌধুরী পাড়া, রঙ্গিখালী লামার পাড়া, চৌধুরীপাড়া, সাবরাং ইউনিয়নের পতে আলীপাড়া, বাহারছাড়াপাড়া, কুড়া বুইজ্জ্যাপাড়া, মুন্ডার ডেইলপাড়া গ্রামে বসবাসকারী আড়াই হাজার পরিবারের পাঁচ হাজারের বেশি মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। পাশাপাশি টেকনাফ পৌরসভার ১২টি ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ে ধসের ঝুঁকিতে রয়েছে ২০ হাজার মানুষ। ভারী বৃষ্টিতে পাহাড়ধসে নতুন করে প্রাণহানির আশঙ্কা করা হচ্ছে।
পুরাতন পল্লানপাড়া পাহাড়ের তীরে বসবাসকারী মো. জোবাইর বলেন, ‘টানা বৃষ্টির কারণে ভয়ে আছি। এ সময়ে নির্ঘুম রাত কাটে। অন্য সময় তেমন একটা ভয় কাজ করে না। তাছাড়া আজ দুপুর থেকে এখান থেকে সরে যেতে মাইকিং করা হচ্ছে।’
ভারী বর্ষণের পারিবন্দি হয়ে পড়েছেন রঙ্গিখালী লামার পাড়ার বাসিন্দার নুর বাহার। তিনি বলেন, ‘বাড়িতে পানি ঢুকেছে, ফলে ঘরের সবকিছু পানিতে তলিয়ে গেছে। সকাল থেকে শুধু মুড়ি খেয়ে দিন পার করছি। কেউ আমাদের খোঁজ নিতে আসেনি। আমাদের আশপাশের ৩৫টি পরিবার রয়েছে। সবার ঘরবাড়ি ডুবে গেছে। মূলত সুইচ গেটের কারণে আমরা সবাই পানিবন্দি।’
হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান রাশেদ মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘ভারী বর্ষণে আমার এলাকার চারটি গ্রামের তিন হাজারের বেশি মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। মূলত সীমান্ত সড়কের সুইচ গেইট থেকে বৃষ্টির পানি পর্যাপ্ত পরিমাণে বের হতে না পারায় এসব এলাকা মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে। আমরা তাদের খোঁজ-খবর নিচ্ছি।’
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বলেন, ‘ভারী বর্ষণে কয়েকটি গ্রামে মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। আমরা তাদের খোঁজ-খবর নিচ্ছি। পাশাপাশি অতিভারী বৃষ্টির কারণে পাহাড় ধসের সম্ভাবনা রয়েছে। তাই সকাল থেকে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীদের অন্যত্রে সরে যেতে বলা হচ্ছে। তারা আশ্রয়কেন্দ্র চলে গেলে পাহাড় ধসে প্রাণহানি থেকে রক্ষা পাবে। পাশাপাশি আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে।’
অর্থসূচক/



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.