নির্বাচন ঘিরে শেয়ারবাজারে কারসাজি: তদন্ত চাইবে ইনডিয়া

ভারতে জাতীয় নির্বাচনকে (লোকসভা) কেন্দ্র করে নরেন্দ্র মোদির বিজেপির বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছিলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী ও পশ্চিমবঙ্গের মূখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। এবার বিষয়টি তদন্ত চেয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থা সেবির কাছে দাবি জানানোর উদ্যোগ নিয়েছে বিরোধী দলীয় জোট ইনডিয়া। এর অংশ হিসেবে জোটের অন্যতম নেতা শরদ পাওয়ারের বাসভবনে একাধিক দলের প্রতিনিধিরা বৈঠক করেছেন।

খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।

ভারতে লোকসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার তিনদিনের মাথায় ৬ জুন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী অইভযোগ তুলেন, নির্বাচন ঘিরে এযাবৎকালের ‘সবচেয়ে বড় শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারির’ ঘটনা ঘটেছে। তার দাবি, এই কেলেঙ্কারীতে ভারতের বিনিয়োগকারীরা ৩০ লাখ কোটি রুপি হারিয়েছেন । আর এর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জড়িত বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন। একই সঙ্গে বিষয়টি তদন্তে একটি যৌথ পার্লামেন্টারি কমিটি (জেপিসি) গঠনের দাবি জানিয়েছেন রাহুল।

খবর অনুসারে, মুম্বইয়ে শরদ পওয়ারের বাড়িতে মঙ্গলবার সকালে বৈঠক করলেন তৃণমূলের তিন সাংসদ। বাংলার শাসকদলের তরফে পওয়ারের বাড়ি ‘সিলভার ওক’-এ ওই বৈঠকে ছিলেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, সাকেত গোখলে এবং সাগরিকা ঘোষ। শরদ-কন্যা সুপ্রিয়া সুলেও ছিলেন বৈঠকে। যোগ দিয়েছিলেন উদ্ধব ঠাকরের শিবসেনার অন্যতম নেতা অরবিন্দ সবন্তও।

পরে শরদ তাঁর এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে পোস্ট করেছেন, ‘‘তৃণমূলের সাংসদেরা এসেছিলেন। বুথফেরত সমীক্ষার পর্বে শেয়ার বাজারকে যে ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছিল তা নিয়ে তদন্তের জন্য সেবির কাছে দাবি জানানো হবে। তৃণমূল যে দাবি তুলেছে তার সঙ্গে আমি একমত।’’ তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ অবশ্য এখনই ওই বিষয়ে খোলাখুলি কিছু বলতে চাননি। তাঁর বক্তব্য, তাঁরা পওয়ারের বাড়িতে গিয়েছিলেন ‘সৌজন্য সাক্ষাৎ’ করতে। তবে তৃণমূল সূত্রের খবর, ওই বৈঠকের বিষয়ে তিন সাংসদ দলের সর্বোচ্চ নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে রিপোর্ট দেবেন। তার আগে দলীয় শৃঙ্খলা মেনেই তাঁরা প্রকাশ্যে কিছু বলতে চাইছেন না।

তৃণমূল তথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুথফেরত সমীক্ষার পর থেকেই শেয়ার বাজার দুর্নীতি নিয়ে সরব। তৃণমূলের অভিযোগ, ফাটকা বাজারে বিনিয়োগে উস্কানি দিয়েছেন স্বয়ং নরেন্দ্র মোদী এবং অমিত শাহ। এ নিয়েই সেবির তদন্ত চায় বাংলার শাসকদল। তৃণমূলের দাবি, সেই তদন্তের আওতায় রাখা হোক মোদী-শাহকেও।

উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, ‘ইন্ডিয়া’-ভুক্ত দলগুলি পওয়ারের বাড়ির বৈঠকে থাকলেও কংগ্রেসের কাউকে সেখানে দেখা যায়নি। নির্বাচনের ফলঘোষণার পরে বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র বৈঠকে যোগ দিতে দিল্লি গিয়েছিলেন তৃণমূলের সেনাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘ইন্ডিয়া’র বৈঠকের পরে তিনি দিল্লিতে পৃথক ভাবে বৈঠক করেছিলেন সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদব, আম আদমি পার্টির নেতা রাঘব চড্ডা এবং সঞ্জয় সিংহদের সঙ্গে। তার পরে দিল্লি থেকে মুম্বই গিয়ে উদ্ধবের সঙ্গেও দেখা করেছিলেন অভিষেক। সেই বৈঠকে ছিলেন উদ্ধবের পুত্র আদিত্য ঠাকরেও। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের সেই ‘দৌত্য’কে জাতীয় রাজনীতিতে অনেকেই ‘ইন্ডিয়া’র সমান্তরাল গোষ্ঠী তৈরির প্রয়াস হিসেবে বর্ণনা করেছিলেন। দেখা গেল, মঙ্গলবার পওয়ারের সঙ্গে বৈঠকেও কংগ্রেসের কেউ রইলেন না।

সূত্রের খবর, সেবি দফতরে স্মারকলিপি দিতে যাওয়ার প্রতিনিধিদলে তৃণমূল পাশে পেতে চায় পওয়ার এবং উদ্ধবদের। মঙ্গল-সকালে তারই সূচনা হয়ে গেল ‘সিলভার ওক’-এ।

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.