আপিল বিভাগে প্রথমবারের মতো ক্যামেরা নিয়ে প্রবেশ করলেন সাংবাদিকরা

আদালতের এজলাসের ছবি তোলা যায় না। রেকর্ড করা যায় না কোনো শুনানি বা রায়–আদেশ। তবে আজ সোমবার ছিল ব্যতিক্রম। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের প্রধান বিচারপতির এজলাস কক্ষে ক্যামেরা নিয়ে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয় গণমাধ্যমকর্মীদের।

প্রধান বিচারপতির এজলাস কক্ষ সংস্কারের মাধ্যমে আধুনিকীকরণের পর বিচারকাজ শুরু করার আগে আজ বিকেলে বিশেষ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। এতে সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচারপতি, অবসরে যাওয়া পাঁচজন প্রধান বিচারপতি, হাইকোর্ট ও আপিল বিভাগ থেকে অবসরে যাওয়া বিচারপতি ও আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।

অনেক আইনজীবী এ সময় এজলাসে সেলফি তোলেন। যদিও এজলাসের কোনো ছবি প্রতিবেদন ছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার না করতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি। আর আজকের পর কোনো প্রতিবেদনেও এসব ছবি এবং ভিডিও প্রকাশ না করতে বলা হয়েছে। আর এমনটি করলে তা হবে আদালত অবমাননার শামিল।

অধিবেশনের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। তিনি আয়োজনের জন্য প্রধান বিচারপতিকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘দুর্নীতি আমাদের অর্জন ও অগ্রগতিকে নস্যাৎ করে দিচ্ছে। সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রের মতো বিচার বিভাগেও দুর্নীতি ডানা মেলার চেষ্টা করছে। কার্যকর মনিটরিং, বিচার বিভাগের আধুনিকায়ন ও জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করে বিচার বিভাগকে রক্ষা করতে হবে। সুপ্রিম কোর্ট মানুষের বিচারের সব শেষ আশ্রয় স্থল। জাতির বিভিন্ন ক্রান্তিকালে এই সর্বোচ্চ বিচারালয় সংবিধানের অভিভাবক হিসেবে আইনের ব্যাখ্যা প্রদান করেছে। ভবিষ্যতেও সর্বোচ্চ আদালত মানুষের অধিকার রক্ষায় একইভাবে দায়িত্ব পালন করবে বলে আমি বিশ্বাস করি।’

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন তাঁর বক্তব্যে উচ্চ আদালতে বিচারক নিয়োগে আইন ও নীতিমালা তৈরি করতে প্রধান বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তিনি বলেন, ‘বিচার বিভাগ যত শক্তিশালী হবে আইনজীবীরাও তত শক্তিশালী হবে। দেশের মানুষের নিকট বিচার বিভাগ নিয়ে আস্থার সৃষ্টি হবে। জনগণ চায় মেধা সম্পন্ন, ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন, সৎ বিচারপতি। সর্বোচ্চ আদালতে নিয়োগের জন্য একটি স্ট্যান্ডার্ড মেনটেইন করা হলে বিচার বিভাগ আরও শক্তিশালী হবে।’

প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান তাঁর বক্তব্যে দেশের উচ্চ আদালতের ইতিহাস তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভার্চুয়াল কোর্টের মাধ্যমে বিচারকার্য পরিচালনা করতে এ আদালত এখন সম্পূর্ণ সক্ষম। বিচার বিভাগীয় পরিকল্পনার একটি উল্লেখযোগ্য স্থান দখল করে আছে দেশের আদালতগুলোর ভৌত অবকাঠামোর সংস্কার, সংরক্ষণ এবং উন্নয়ন। আমি বিশ্বাস করি, এই আয়োজন নতুন দিনের সূচনা মাত্র।’ এ সময় তিনি অধস্তন আদালতের স্থাপনাগুলোর আধুনিকায়ন এবং উন্নয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করেন।

অর্থসূচক/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.