ক্রান্তিকাল পেরিয়ে সম্ভাবনার পথে শেয়ারবাজারঃ ডিএসই’র চেয়ারম্যান

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হাফিজ মুহম্মদ হাসান বাবু বলেছেন, ক্রান্তিকাল পেরিয়ে দেশের শেয়ারবাজার এখন সম্ভাবনার পথে। পুঁজিবাজারকে আরও ভালো অবস্থানে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে আমরা সম্মিলিতভাবে কাজ করবো।

সোমবার (১৩ মে) রাজধানীর নিকুঞ্জে ডিএসই টাওয়ারে সিইও ফোরামের প্রতিনিধি দলের সাথে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন। ফোরামের প্রেসিডেন্ট মোঃ ছায়েদুর রহমান প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ডিএসই’র প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা সাত্বিক আহমেদ শাহ, প্রধান রেগুলেটরী কর্মকর্তা খায়রুল বাসার আবু তাহের মোহাম্মদ সহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ৷

বৈঠকে ডিএসই’র চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হাফিজ মুহম্মদ হাসান বাবু বলেন,  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুঁজিবাজারের মাধ্যমে অর্থনীতিকে গতিশীল করতে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো তালিকাভুক্তির জন্য নির্দেশনা প্রদান করেছেন৷ প্রধানমন্ত্রীর এই দুরদশী নির্দেশনা পুঁজিবাজারের জন্য অত্যন্ত ইতিবাচক ও সময়োপযোগী৷ তিনি পুঁজিবাজারের প্রতি অত্যন্ত আন্তরিক বিধায় তার দীর্ঘদিনের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে সরকারী লাভজনক কোম্পানিগুলোকে তালিকাভুক্ত করার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করতে বলেন। তার এ নির্দেশনা যাতে ভালভাবে কাজে লাগানো যায়, সে লক্ষ্যে সবাইকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।

ড. হাসান বাবু বলেন, তালিকাভুক্ত ও অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানির মধ্যে অবশ্যই ট্যাক্স-এর একটা উল্লেখযোগ্য পার্থক্য থাকতে হবে। এবিষয়ে আমরা ইতোমধ্যে এনবিআর-কে চিঠি দিয়েছি। এ বিষয়ে যদি আমরা যদি এনবিআর এবং বাংলাদেশ ব্যাংক-এর সাথে আলোচনার মাধ্যমে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি, তাহলে আমরা কিছুটা সমাধান পাব বলে আশা করি। আর একটা বিষয় হলো দ্বৈতকর। দ্বৈতকর একজন বিনিয়োগকারীকে পুঁজিবাজারে আসতে নিরুত্‌সাহিত করে। আর একটি বিষয় হলো পলিসি সম্পর্কিত বিষয়। তাই রেগুলেটর-এর সাথে আমরা এই বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো।

তিনি আরও বলেন, বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সংরক্ষিত করে যে কোন পলিসি তৈরি করতে হবে। স্বার্থ সংরক্ষণ মানে এই না যে, মার্কেটকে উন্মুক্ত করে দেয়া। এটা হলো মার্কেটকে সিকিউর করা। আবার সিকিউর করতে গিয়ে যেন ভালো বিনিয়োগকারীরা নিরুৎসাহিত না হয়, সে বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে। বহুজাতিক কোম্পানি, ভালো ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানি, আরএমজি সেক্টরের গ্রীন ফ্যাক্টরি কোম্পানিগুলো ও ইন্সুরেন্স খাতসহ অনেক ভালো খাত রয়েছে যাদের বাজার আনার জন্য সুযোগ রয়েছে। শুধু ভালো কোম্পানিকে বাজারে আনতে একটি রিসার্স সেল তৈরি করে কাজ করতে হবে। পুঁজিবাজারকে ক্রান্তিকাল পেরিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে ।সেজন্য বাজার সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে মিলে একটি পরিকল্পনা তৈরি করা হচ্ছে।

সিইও ফোরামের প্রেসিডেন্টসহ প্রতিনিধিবৃন্দ বলেন, বাজারের উন্নয়নে এর আগে আমরা অনেক উদ্যোগ নিয়েছি। এরআগে আমরা যেসব প্রস্তাব দিয়েছি সেগুলো নিয়ে আপনারও কাজ করেছেন। কিন্তু আমরা আমাদের লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারিনি। আমার মনে হয় সবার কাছে আমরা পৌঁছাতে পারিনি আমাদের বিষয়গুলো। অনেক আগে থেকে আমরা তালিকাভুক্ত ও অতালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর মধ্যে করের ব্যাবধান বৃদ্ধি করতে বলে আসছি। কিন্তু এর কোনো প্রতিফলন আমরা দেখতে পায়নি। যদি করের ব্যবধান বাড়ানো না হয়, তাহলে আমরা আমাদের কাঙ্খিত কোম্পানিগুলোকে বাজারে আনতে পারব না। এছাড়া দীর্ঘদিন ধরে আমাদের বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বাজারের লভ্যাংশের উপর আকৃষ্ট হচ্ছেন না এর অন্যতম কারণ হল দ্বৈত কর। লভ্যাংশে একবার কর্পোরেট ট্যাক্স দেওয়া হচ্ছে এরপর আবার বিনিয়োগকারীদেরকে পুনরায় কর দিতে হয়। বাংলাদেশে ব্যাংক ঋণ অত্যন্ত সহজলভ্য হবার কারণে ভালোভালো কোম্পানিগুলো পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হচ্ছে না। এছাড়া আমাদের বাজার ইকুইটি কেন্দ্রিক হওয়ায় এখানে উত্থান-পতন বেশি দেখা যায়। তাই বাজারে কিভাবে পণ্য বৈচিত্র্যতা বাড়ানো যায় সে বিষয়ে আলোচনা হয়। এছাড়া বাজারে ভালো কোম্পানি তালিকাভুক্ত করতে ডিএসইর সঙ্গে এক সাথে কাজ করার কথা জানান।

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.