জিম্বাবুয়েকে হোয়াইটওয়াশে ব্যর্থ বাংলাদেশ

জিম্বাবুয়েকে হোয়াইটওয়াশের মিশনে ব্যর্থ নাজমুল হোসেন শান্তর দল। সিরিজের শেষ টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশকে ৯ উইকেটে হারিয়ে সিকান্দার রাজার দল। বাংলাদেশের দেয়া ১৫৮ রানের লক্ষ্য ৯ বল হাতে রেখেই ছুঁয়ে ফেলে জিম্বাবুয়ে।

১৫৮ রানের লক্ষ্যে বাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভালোই করে জিম্বাবুয়ে। ব্যাটিংয়ে নেমে শেখ মেহেদি হাসানের প্রথম ওভারে দুটি চার মারলেন ব্রায়ান বেনেট। অফ স্পিনারের পরের ওভারে দুই চারের সঙ্গে তিনি মারেন ইনিংসের প্রথম ছক্কা। তার ব্যাটে উড়ন্ত শুরু পায় জিম্বাবুয়ে। মাঝে দ্বিতীয় ওভারে ১ রান দেন সাকিব আল হাসান। ৩ ওভারে জিম্বাবুয়ের সংগ্রহ কোনো উইকেট না হারিয়ে ২৭ রান। সব রান বেনেটের একার। অবশ্য পঞ্চম ওভারে উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন সাকিব আল হাসান। হালকা ঝুলিয়ে দেওয়া ডেলিভারি ক্রিজ ছেড়ে মারার চেষ্টায় ব্যাটে লাগাতে পারেননি টাডিওয়ানাশে মারুমানি। উইকেটের পেছনে জাকের আলি শুরুতে ঠিকঠাক ধরতে পারেননি।

তবে মারুমানি ক্রিজে ফেরার আগেই স্টাম্প ভাঙেনবাংলাদেশ উইকেটরক্ষক। ৭ বলে ১ রানে ফেরেন মারুমানি। উইকেট হারালেও সিকান্দার রাজাকে নিয়ে রান তুলতে থাকেন বেনেট। ১০ ওভারে দুজন মিলে রান তুলেন ৬২। এরপর চলতি সফরে জিম্বাবুয়ের প্রথম ফিফটি করেন বেনেট। ১১ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে তার প্রথম ফিফটিও এটি। ৫ চার ও ৩ ছক্কায় ৩৬ বলে পঞ্চাশ পূর্ণ করেন জিম্বাবুয়ের এই ওপেনার। হাফ সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে আরও দ্রুত রান তুলতে থাকেন তিনি। তবে মাথাব্যথার কারণ হয়ে ওঠা জুটি ভেঙে ব্রেক থ্রু দেন সাইফ উদ্দিন। অফ স্টাম্পের বাইরে স্লোয়ার ডেলিভারি ছক্কায় ওড়াতে গিয়ে লং অনে ক্যাচ দিলেন বেনেট।

এরপর জনাথান ক্যাম্ববেলকে নিয়ে রান তুলতে থাকেন রাজা। মুস্তাফিজকে পুল করে বাউন্ডারি মেরে ৪১ বলে ৫০ পূরণ করেন রাজা। শেষ ৩ ওভারে জয়ের জন্য সফরকারী প্রয়োজন ছিল ২৪ রান। সেই ওভারে সাইফউদ্দিনের বিপক্ষে ১৪ রান নিয়ে ব্যবধান কমিয়ে আনেন রাজা। ১৯তম ওভারে সফরকারীদের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ৫ রান। মেহেদির প্রথম বলেই ৪ মেরে দলকে জয়ের কাছে নিয়ে যান ক্যাম্পবেল। তৃতীয় বলে সিঙ্গেল নিয়ে সফরকারীদের জয়ের বন্দরে নিয়ে যান ক্যাম্ববেল। রাজা অপরাজিত থাকেন ৪৬ বলে ৭২ রানে।

এদিন টস হেরে শুরুটা ভালো হয়নি বাংলাদেশের। দ্বিতীয় ওভারে প্রথম উইকেট হারায় স্বাগতিকরা। ব্লেসিং মুজারাবানির অফ স্টাম্পের বাইরের লেংথ ডেলিভারি পুল করার চেষ্টায় টাইমিং পাননি তানজিদ হাসান। শর্ট কভারে সহজ ক্যাচ নেন ওয়েলিংটন মাসাকাদজা। ৫ বলে ২ রান করে ফেরেন তানজিদ হাসান। এরপরের ওভারে ড্রেসিং রুমের পথ ধরেন সৌম্য সরকার। ব্রায়ান বেনেটের লাফানো ডেলিভারি কাট করতে গিয়ে সৌম্যর ব্যাটের ওপরের কানায় লাগে। ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে সহজ ক্যাচ নেন শন উইলিয়ামসন। ৭ বলে ৭ রান করেন সৌম্য।

দুই ওপেনারকে হারানোর খানিক পরই তাওহিদ হৃদয়কেও হারিয়ে বসে বাংলাদেশ। বেনেটের অফ স্টাম্পের বাইরের ডেলিভারি কাট করার চেষ্টায় ব্যাটের বাইরের কানায় লেগে কট বিহাইন্ড হন ৬ বলে ১ রান করা হৃদয়। ৩ ব্যাটারকে হারালেও মাহমুদউল্লাহ’র সঙ্গে জুটি গড়েন নাজমুল হোসেন শান্ত। এই দুই ব্যাটারের দৃঢ়তায় পাওয়ার প্লে’তে ৩ উইকেট হারিয়ে ৩৩ রানের পুঁজি পায় বাংলাদেশ। সেখান থেকে দলকে ৫০’র ঘরে নিয়ে যান দুজন। বিপর্যয় সামাল দিয়ে নিজেদের মাঝে ৫০ রানের জুটিও গড়েন তারা। অবশ্য দশম ওভারে অল্পের জন্য বেঁচে যান শান্ত। ওয়েলিংটন মাসাকাদজার বলে ক্রিজ ছেড়ে মারার চেষ্টায় তার ব্যাটের বাইরের কানায় লাগে।

থার্ড ম্যাচে ক্যাচের সুযোগ এলেও পেছন দিকে দৌড়ে নিতে পারেননি লুক জঙ্গুয়ে। ১০ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৩ উইকেটে ৭০ রান। তবে দলীয় রান ১০০ হওয়ার আগেই সাজঘরে ফেরেন শান্ত। মাসাকাদজার বল লং অন দিয়ে ছক্কায় উড়িয়ে পরের বলেই ড্রেসিং রুমের পথ ধরেন শান্ত। ডিপ স্কয়ার লেগে দাঁড়ানো রায়ান বার্লের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন শান্ত। ৫ চার ও ১ ছক্কায় ২৮ বলে ৩৬ রান করেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। তার বিদায়ে ভাঙে ৬৯ রানের চতুর্থ উইকেট জুটি। এরপর ক্রিজে আসা সাকিব আল হাসানকে নিয়ে দলকে ১০০’র ঘরে নিয়ে যান মাহমুদউল্লাহ।

৩৬ বলে এই ব্যাটার তুলে নেন হাফ সেঞ্চুরি। তবে সঙ্গীর হাফ সেঞ্চুরির পর লুক জঙ্গিয়েকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ১৬ বলে ২১ রান করে আউট হন সাকিব। ১২৩ রানে পঞ্চম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। খানিক পর মুজারাবানিকে উইকেট দিয়ে ৪৪ বলে ৫৪ রান করে ফেরেন মাহমুদউল্লাহও। শেষ দুই ওভারে দায়িত্বটা ছিল সাইফউদ্দিন ও জাকের আলি অনিকের কাঁধে। শেষ ওভারের প্রথম বলে মুজারাবানিকে ৬ হাঁকিয়ে দলকে ১৫০’র ঘরে নিয়ে যান জাকের। এই দুজন মিলে প্রথম ৪ বলে যোগ করেন ১০ রান। তবে শেষ পর্যন্ত ৬ উইকেটে ১৫৭ রানের পুঁজি নিয়ে ইনিংস শেষ করে বাংলাদেশ।

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.