কে জানত শেষ মুহূর্তের নাটকীয়তায় নায়ক থেকে খলনায়ক বনে যাবেন এই জার্মান গোলরক্ষক। দারুণ সব সেভে পুরো ম্যাচে রিয়াল মাদ্রিদকে ঠেকিয়ে রাখা নয়ারই কি না অন্তিম মুহুর্তে দলকে ডোবালেন। ঘরের মাঠ সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে ৮৮ মিনিট পর্যন্ত পিছিয়ে ছিল রিয়াল মাদ্রিদ। তাদের কাঁদিয়ে তখন ফাইনাল খেলার স্বপ্ন দেখছিল বায়ার্ন মিউনিখ। কিন্তু হোসেলুর তিন মিনিটের ঝড়ে পাল্টে গেল সব। বদলি হয়ে নামা এই ফরোয়ার্ড জোড়া গোল করে উল্লাসে ভাসিয়ে তোলেন পুরো সান্তিয়াগো বার্নাব্যুকে। তাতে ভর করেই দুই লেগ মিলিয়ে ৪-৩ অগ্রগামিতায় বায়ার্নকে হারিয়ে ফাইনালে নাম লেখায় রিয়াল মাদ্রিদ।
বুধবার (৮ মে) দিনগত রাতে ঘরের মাঠ সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগে ২-১ গোলে জিতে দুই লেগ মিলিয়ে ৪-৩ গোলের অগ্রগামিতায় ওয়েম্বলির টিকিট কাটল রেকর্ড ১৪ বারের চ্যাম্পিয়নরা।
ম্যাচের শুরুতেই আক্রমণ-প্রতি আক্রমণে জমে ওঠে খেলা। যদিও প্রথমার্ধের অনেকটা জুড়ে দাপট দেখায় রিয়াল। ডেডলক ভাঙার খুব কাছ থেকেই বারববার ফিরতে হয় তাদের। ম্যাচের ১৩ মিনিটে দুরূহ কোণ থেকে ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের শট পোস্টে লেগে ফিরে আসে। ফিরতি বলে রদ্রিগো শট নিলেও তা ঠেকিয়ে দেন ম্যানুয়েল নয়্যার। বায়ার্ন গোলরক্ষক এরপর একের পর এক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হন। ৩৮ বছর বয়সেও যে তার ঝাঁজ কমেনি, সেটাই যেন দেখিয়েছেন এই ম্যাচে। ৪০ মিনিটে ভিনিসিয়ুসের বাড়ানো বল কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন নয়্যার। বিরতির আগপর্যন্ত গোলমুখে দুটি শট নেয় বায়ার্ন। কিন্তু জালের দেখা পায়নি।
বিরতির পর দ্বিতীয় মিনিটে আলফোনসো ডেভিসের শট বারের ওপর দিয়ে যায়। ৫৩ মিনিটে কেইনকে রুখে দেন লুনিন। এরপর ম্যাচের ৬৬তম মিনিটে মুসিয়ালাকে প্রতিহত করেন রিয়াল গোলক্ষক লুনিন। দুই মিনিট পর রিয়ালের গ্যালারি নিস্তব্ধ করে দেন ডেভিস। কেইনের বাড়ানো বল পায়ে নিয়ে বাঁ দিক দিয়ে বক্সে ঢুকে জোরালো শটে জাল কাঁপান তিনি।
পরবর্তীতে আরও বেশ কিছু আক্রমণে করেও কিছুতেই গোলের দেখা পাচ্ছিল না রিয়াল। ভক্তরা অনেকেই তখন বার্য়ানকে ফাইনালে দেখছিল। কিন্তু শেষ তিন মিনিটেই বদলে যায় দৃশ্যপট। লম্বা সময় ধরে গোলপোস্ট অক্ষত রাখা নয়ার ভুল করে বসেন ম্যাচের ৮৮তম মিনিটে। ভিনিসিয়ুসের শটে বল তার বুকে লেগে হাত ফসকে বেরিয়ে যায়। সামনেই ছিলেন হোসেলু। এই স্প্যানিশ স্ট্রাইকার আলতো টোকায় জালে বল জড়ান। সমতায় ফেরে মাদ্রিদ ক্লাব।
এরপর যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে অ্যান্টনিও রুডিগারের কাছ থেকে গোলমুখের সামনে বল পেয়ে জালে জড়িয়ে দেন হোসেলু। তবে নাটকীয়তার শেষ হয়নি তখনো। রেফারির চোখে অফসাইডে ছিলেন হোসেলু। তাই গোল দিতে অপরাগতা জানান তিনি। কিন্তু ভিএআর দেখার পর বদলে যায় সিদ্ধান্তে। অফসাইড নয়, বরং অনসাইডেই ছিলেন হোসেলু। তাই গোলটি বৈধ হওয়ার পরই খুলে গেল রিয়ালের ফাইনালের দুয়ার। যা পরে আর বন্ধ করতে পারেনি বায়ার্ন। এগিয়ে থেকেও তাদের ২-১ গোলে হার মানতে হলো রিয়ালের আরও একটি দারুণ প্রত্যাবর্তনের সামনে।
আগামী ১ জুন ১৫তম শিরোপার লক্ষ্যে মাঠে নামবে রিয়াল। সেখানে তাদের জন্য অপেক্ষা করছে পিএসজিকে বিদায় করা বরুসিয়া ডর্টমুন্ড। লন্ডনের ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে দুদলের মধ্যেই হবে শিরোপা লড়াই।
অর্থসূচক/এএইচআর



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.