ইসরায়েল ফের হামলা চালালে কঠোর পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি ইরানের

ইসরায়েলে নজিরবিহীন ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান। দুদিনে তিন শতাধিক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে। সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে অবস্থিত ইরানি কনস্যুলেটে হামলা ও ১৩ জনের নিহতের বদলা হিসেবে ইসরায়েলি ভূখণ্ড লক্ষ্য করে এ হামলা চালায় তেহরানের রেভল্যুশনারি গার্ডস কোর (আইআরজিসি)।

ইসরাইল এই হামলার কী প্রতিক্রিয়া দেখায় সেটি অপেক্ষা চলছে। তার আগেই তেলআবিব ফের কঠোর পদক্ষেপ নেবে বলে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছে তেহরান। খবর আলজাজিরার।

শনিবার শেষরাতে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে হামলার কথা জানায়। এরপর হামলা শেষে তা ‘সফল’ হয়েছে বলেও দাবি করে তারা। তারপর এই হামলার দিনটি উদযাপন করা হয় ইরানে।

কাতার ভিত্তিক গণমাধ্যমটি জানায়, ইরান বলেছে, ইসরায়েলের ওপর তাদের প্রথম সরাসরি হামলা এটি। ইরানি কর্মীদের লক্ষ্য করে ইসরায়েলের হামলার প্রতিশোধ নিয়েছে তারা। তেহরান বলেছে, তাদের প্রতিশোধ নেওয়া শেষ হয়েছে। তবে, ইসরায়েল আবার হামলা চালালে পরবর্তী সময়ে কঠোর প্রতিক্রিয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে তেহরান।

ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি রোববার এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘যদি ইহুদিবাদী শাসক (ইসরাইল) বা তার সমর্থকরা বেপরোয়া আচরণ করে, তাহলে তারা কঠোর ও শক্তিশালী প্রতিক্রিয়া দেখতে পাবে।

রোববার ভোর থেকেই ইরানের মিত্র ও পরোক্ষ যুদ্ধের সহযোগীরা ইসরায়েলের বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা চালায়। হামলার কারণে দেশটির বিভিন্ন স্থানে নাগরিকদের সতর্ক করতে সাইরেন বেজে ওঠে। জেরুজালেমের আকাশে শোনা যায় বিস্ফোরণের শব্দ।

গত ১ এপ্রিল সিরিয়ার দামেস্কে তেহরানের দূতাবাসে ইসরায়েলের বিমান হামলার পর থেকেই উত্তেজনা চরম আকার ধারণ করে। প্রতিশোধ নিতে ইসরাইলে হামলার বিষয়ে হুমকি দিয়ে আসছিল ইরান। এরপর থেকেই যুক্তরাষ্ট্র সতর্ক করে আসছিল, এর প্রতিশোধ নিতে ইরান পাল্টা হামলা চালাতে পারে। এর পরপরই হামলার ঘটনা ঘটলো।

তবে যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে অন্ধ সমর্থন দেবে না। ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েল প্রতিশোধমূলক কোনো হামলা করলে যুক্তরাষ্ট্র তাতে অংশ নেবে না। বাইডেন প্রশাসনের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা এ কথা জানিয়ে দিয়েছেন।

ইরানের এই হামলার কী জবাব দেওয়া হবে ইসরায়েলকে তা সাবধানে বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। রোববার হোয়াইট হাউসের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে জানান, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে কীভাবে ইরানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যায় তা নিয়ে সাবধানে ও কৌশলী হয়ে কাজ করার অনুরোধ জানিয়েছেন।

ওই কর্মকর্তা বলেন, সিরিয়ায় ইসরায়েলের বিমান হামলায় ইরানের সামরিক কমান্ডার নিহত হওয়ার ঘটনার বিনিময়ে ইসরায়েল সবচেয়ে সেরা জবাবটিই পেয়েছে বলে মনে করে বাইডেন প্রশাসন। এছাড়া ৯৯ শতাংশ ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন গুলি করে নামিয়ে আনা ও প্রতিরোধ করার মাধ্যমে ইসরায়েল ইরানের তুলনায় তার সামরিক শ্রেষ্ঠতা বজায় রাখতে পেরেছে বলেও মনে করে যুক্তরাষ্ট্র।

ইরানের হামলার পরপরই নেতানিয়াহুর সঙ্গে কথা হয় প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের। টেলিফোন আলোচনায় দুই নেতা কীভাবে সব কিছু শ্লথ করা যায় ও একটির পর আরেকটি বিষয় নিয়ে এগোনো যায় তা নিয়ে কথা বলেন। তবে হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তারা ইসরায়েলের পক্ষে উল্লেখযোগ্যভাবে যুক্তরাষ্ট্রের সাড়া দেওয়ার বিষয়ে কোনোকিছু জানাতে অস্বীকৃতি প্রকাশ করে শুধু এটাই বলেন যে, বিষয়টির হিসাব ইসরাইলকেই করতে হবে।

তবে টেলিভিশনের প্রচারিত বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক মুখপাত্র জন কিরবি বারবার এই কথা বলেন যে, তার দেশ যে আরও বড় আকারের সংঘাতে জড়িয়ে পড়বে না এই বিষয়টি এখন পরিষ্কার।

অর্থসূচক/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.