ইফতার অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নেতা-কর্মীদের উজ্জীবিত করার চেষ্টা বিএনপির

মাসব্যাপী গণ–ইফতারের মাধ্যমে কার্যত নেতা-কর্মীদের সংগঠিত করার পরিকল্পনা নিয়েছিল বিএনপি। মাস শেষে দলটির নীতিনির্ধারকেরা মনে করছেন, তাদের এই কর্মসূচি একদিকে ধর্মীয়, অন্যদিকে রাজনৈতিক—দুই দিক থেকেই সফল এবং কার্যকর হয়েছে। সারা দেশে ইফতার অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে সংযোগ বৃদ্ধি এবং তাদের সক্রিয় করা গেছে।

বিএনপির সূত্র গণমাধ্যমে বলছেন, পুরো রমজানে সব মহানগর, জেলা, উপজেলাসহ একবারে ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত ১১০০ ইফতার অনুষ্ঠান হয়েছে। নেতা-কর্মী ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের অনুদানে বেশির ভাগ ইফতারের আয়োজন হয়েছে খোলা মাঠে। এতে সক্রিয় নেতা-কর্মী ছাড়াও সাধারণ সমর্থক এবং নিম্ন আয়ের মানুষেরও অংশগ্রহণ দেখা যায়। ফলে নেতা-কর্মীদের ঘরোয়া ইফতার অনুষ্ঠান অনেক জায়গায় গণ–ইফতারে রূপ নেয়।

এতে ময়মনসিংহ মহানগরসহ বিভিন্ন স্থানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বাধার সম্মুখীনও হতে হয়। জেলা ও মহানগরসহ ৫০টির মতো ইফতার অনুষ্ঠানে যুক্তরাজ্য থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চ্যুয়ালি বক্তব্য দেন। মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামসহ জ্যেষ্ঠ নেতারাও অংশ নেন।

সংশ্লিষ্ট নেতারা জানান, কার্যত মাঠের রাজনৈতিক কর্মসূচিহীন রমজানের মাসটিতে মামলার ভারে ক্লান্ত ও কারামুক্ত নেতা-কর্মীদের পাশে দাঁড়ানোর লক্ষ্য থেকে এই কর্মসূচি নেওয়া হয়। এর লক্ষ্য, দীর্ঘ আন্দোলনে জেল-জুলুমে হতাশ হয়ে পড়া মাঠ পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের মধ্যে একটা আস্থার পরিবেশ তৈরি করা। এ কারণে দলের কারামুক্ত নেতা-কর্মীদের বাসায় গিয়ে নীতিনির্ধারণী নেতারা তাঁদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।

পাশাপাশি বিগত আন্দোলনে গুম, খুন এবং অঙ্গহানির শিকার নেতা-কর্মীদের পরিবার ও স্বজনদের অর্থসহায়তা ও ঈদসামগ্রীও দেওয়া হয়। রমজানে পরিকল্পিত এই কর্মসূচির মাধ্যমে কার্যত নেতা-কর্মীদের আবার সংগঠিত এবং সক্রিয় করাই এর লক্ষ্য। সারা দেশে ইফতার অনুষ্ঠানগুলোতে বিপুল অংশগ্রহণে নীতিনির্ধারকেরা সন্তুষ্ট।

এর মধ্যে ময়মনসিংহ, বগুড়া, রংপুর, ঠাকুরগাঁও, সিলেট, ঝিনাইদহ, যশোর, নওগাঁ, চট্টগ্রামের কক্সবাজারসহ বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় খোলা মাঠে ইফতারের আয়োজন ছিল উল্লেখযোগ্য।

যদিও রমজানে ঘটা করে বিএনপির ইফতার অনুষ্ঠানের আয়োজন করা এবং গরিব মানুষের পাশে না দাঁড়ানোর অভিযোগ করে সরকারের একাধিক মন্ত্রী দলটির সমালোচনা করেছেন।

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, তারা (বিএনপি) একজন গরিব মানুষকেও এই কষ্টের দিনে রোজার মাসে কোনো প্রকার সাহায্য করেনি। ইফতারসামগ্রী বিতরণ করেনি। তারা বড়লোকদের নিয়ে বড় বড় হোটেলে ইফতার পার্টি করেছে। আর বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নির্দেশে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা সারা দেশে ইফতারসামগ্রী বিতরণ করছেন।

অর্থসূচক/

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.