উত্তর কোরিয়াকে দ্বিপাক্ষিক সম্মেলনের প্রস্তাব জাপানের

জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন-এর সঙ্গে বৈঠকের প্রস্তাব দিয়েছেন বলে দাবি করেছে পিয়ং ইয়ং৷

উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম-কেসিএনএ জানিয়েছে, জাপানের প্রধানমন্ত্রী সম্প্রতি দেশটির নেতা কিম জং উন-এর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্মেলনের প্রস্তাব দিয়েছেন৷ কিম জং উন-এর বোন ও সরকারের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা কিম ইও জং এর বিবৃতি দিয়ে এই খবর জানানো হয়েছে৷

বিবৃতি অনুযায়ী, যেকোন পর্যায়ের বৈঠকের জন্য কিম ইউ জং আগে জাপানকে উত্তর কোরিয়ার প্রতি তাদের ‘শত্রুভাবাপন্ন’ নীতি পরিবর্তন করতে বলেছেন৷ (জাপানের) প্রধানমন্ত্রীর জানা উচিত যে তিনি চেয়েছেন এবং সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলেই পারবেন বা আমাদের নেতৃত্ব তার সাথে দেখা করবেন বিষয়টি এমন নয়৷ জাপান যদি ‘পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সম্মানজনক আচরণের ভিত্তিতে সম্পর্ক উন্নয়নের নতুন পথ খোলার রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে’ তবেই ‘দুই দেশ নতুন ভবিষ্যৎ’ গড়তে পারবে বলেও উল্লেখ করেন কিম ইও জং৷

উত্তর কোরিয়ার অস্ত্র কর্মসূচি নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে জাপানের সহযোগিতা ঘিরে টোকিও ও পিয়ং ইয়ংয়ের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলছে৷ ১৯৭০ ও ১৯৮০-এর দশকে জাপানি নাগরিকদের অপহরণ করে উত্তর কোরিয়ায় নিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে৷

এদিকে জাপান ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে আলোচনাকে ‘স্বাগত জানাবে’ বলে এরইমধ্যে উল্লেখ করেছে যুক্তরাষ্ট্র৷ ২০০২ ও ২০০৪ সালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী জুনিচিরো কইজুমি সবশেষ জাপানি কোনো নেতা হিসেবে উত্তর কোরিয়া সফর করেন৷ গোয়েন্দা পাঠিয়ে জাপানের ১৩ নাগরিককে অপহরণের কথা ২০০২ সালের সম্মেলনে উত্তর কোরিয়া স্বীকার করেছিল৷ গোয়েন্দাদেরকে জাপানি ভাষা ও সংস্কৃতি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিতে অপহৃতদেরকে উত্তর কোরিয়া ব্যবহার করে৷

তবে জাপানের দাবি অপহৃত নাগরিকের প্রকৃত সংখ্যা ১০০ জনের বেশি৷ ২০০২ সালের বৈঠকের পর উত্তর কোরিয়া তাদের পাঁচজনকে জাপানে ফেরার অনুমতি দেয়৷ বাকিরাও এখনও জীবিত থাকতে পরে বলে আশা অনেক জাপানির৷ এই ইস্যুটি কিশিদা সরকারের জন্যেও রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ৷

সোমবার প্রধানমন্ত্রী কিশিদা দেশটির পার্লামেন্টে বলেছেন, ‘অপহরণ সমস্যা সমাধানে’ দুই দেশের মধ্যে উচ্চ পর্যায়ের আলোচনা গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন তিনি৷ এজন্য উত্তর কোরিয়ার কাছে তিনি আগে থেকেই বিভিন্ন প্রস্তাব পাঠিয়ে আসছেন বলেও জানান৷

তবে কিশিদা বলেছেন, উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমে কী বলেছে সে বিষয় তিনি অবগত নন এবং এর বিষয়বস্তু নিয়ে সরাসরি কোনো মন্তব্য করতে চান না৷

এদিকে কিম ইও জং বিবৃতিতে বলেছেন, উত্তর কোরিয়াও জাপানের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতিতে আগ্রহী৷ তবে কিশিদা সরকার যদি জাপানি নাগরিকদের উত্তর কোরিয়ায় অপহরণ করে নিয়ে যাওয়ার ঘটনার বিষয়টির উত্থাপন অব্যাহত রাখে তাহলে সেখান থেকে যুগান্তকারী কোনো ফল আসবে না বলেও সতর্ক করেন৷ সূত্র: ডিডাব্লিউ, এএফপি, এপি, রয়টার্স

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.