‘ব্যাংকিং খাতের প্রযুক্তিগত পরিবর্তন আনা দরকার’

স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে ব্যাংকিং খাতের প্রযুক্তিগত পরিবর্তন অত্যাবশ্যক। ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোর জন্য অনেক সুযোগ এনেছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) প্রযুক্তিবান্ধব বাংলাদেশী ব্যাংকারদের জন্য ইন্টেলেক্টস থট লিডারশিপের ‘ডিজাইন থিংকিং ফর ডিজিটাল এন্টারপ্রাইজ’ শীর্ষক এক বিশেষ অনুষ্ঠানে বিশেষজ্ঞদের এমন মতামতই উঠে আসে।

শীর্ষস্থানীয় আর্থিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ইন্টেলেক্ট ডিজাইন এরিনা লিমিটেড এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক দেবদুলাল রায় অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সোনালী ব্যাংকের এমডি ও সিইও আফজাল করিম, সোনালী ব্যাংকের উপ ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুভাষ চন্দ্র দাস, সিআইটিও মোহাম্মদ রেজওয়ান আল বখতিয়ার, রূপালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর, নগদের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থপনা পরিচালক তানভীর এ মিশুক, ওরাকলের কান্ট্রি ম্যানেজিং ডিরেক্টর রুবাবা দৌলা, ঠাকরল ইনফরমেশন সিস্টেম প্রাইভেট লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বাসব বাগচি, সোনালী ইন্টেলেক্ট লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম জাহাঙ্গীর আক্তার ও ইভিপি ইন্টেলেক্ট ডিজাইন এরিনার রাজু দারিয়ানি।

এছাড়া বাংলাদেশের ব্যাংকিং সেক্টরের ৫০ টিরও বেশি শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠানের নেতৃবৃন্দ এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহন করেন।

আলোচকরা জানান, ডিজিটাল এন্টারপ্রাইজের রূপান্তর কেবলমাত্র ক্লাউডে স্থানান্তর বা মোবাইল-বান্ধব ইন্টারফেস তৈরি করা ছাড়াও আরও বেশিকিছু বোঝায়। তারা প্রযুক্তির মাধ্যমে ব্যাংকের ডিজিটাল এন্টারপ্রাইজের যাত্রা, সার্বিক বিষয়ের পুনরায় ডিজাইন করাসহ সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। তাদের মতে, ব্যাংকিং সেক্টরের ব্যবহৃত বিভিন্ন ডিভাইস এবং সেন্ট্রালাইজড প্লাটফর্মের সমস্ত কার্যক্রম সহজ করা সম্ভব।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বাংলাদেশের ব্যাংকিং এবং বীমা শিল্প খাত স্মার্ট বাংলাদেশের ভিশন ২০৪১ অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এবং ভবিষ্যতমুখী দেশ গড়বে। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক্সের ২০২৩ সালের জুলাই মাসের রিপোর্টে দেখা যায়, এশিয়া-প্যাসিফিক (এপিএসি) অঞ্চলে এবং সমস্ত ফ্রন্টিয়ার মার্কেটে ১০ বছরে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) চক্রবৃদ্ধিতে বার্ষিক প্রবৃদ্ধির হার (সিএজিআর) ৯.১ শতাংশ।

গ্লোবাল সিস্টেম ফর মোবাইল কমিউনিকেশনস অ্যাসোসিয়েশনের (জিএসএমএ) ২০২২ সালের এক প্রতিবেদনে অনুমান করা হয়েছে, ২০২৫ সাল নাগাদ বাংলাদেশের স্মার্টফোনের অনুপ্রবেশ ৬৩ শতাংশে উন্নীত হবে এবং ডিজিটাল ঋণদাতারা আশা করতে পারে যে আগামী বছরগুলোতে টোটাল অ্যাড্রেসেবল মার্কেটে (টিএএম) তাদের সেবা বাড়বে। এই দ্রুত বৃদ্ধির সাথে ব্যাংকিং ও আর্থিক শিল্পের গ্রাহকরা আরও বেশি চাহিদাসম্পন্ন হয়ে উঠবে। এই পরিবর্তনশীল গ্রাহকদের চাহিদা পূরণে ব্যাংকগুলোর যে প্রযুক্তি প্রয়োজন তা কেবলমাত্র একটি ডিজিটাল রূপান্তরের মাধ্যমে করা সম্ভব। এটি ব্যাংকগুলোর জন্য অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার ও অংশীদারিত্বে আরো বেশি বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি করবে।

বাংলাদেশের ব্যাংকগুলো উদীয়মান জেনারেটিভ এআই এবং সময়োপযোগী প্রযুক্তির মাধ্যমে টেকসই, অর্ন্তভুক্তিমূলক এবং উদ্ভাবনী উপায়ে ব্যাংকিং খাতকে পরিচালিত করতে চায়। একটি ডিজিটাল এন্টারপ্রাইজ তৈরি করা এই উদ্যোগের প্রথম ধাপ। ইন্টেলেক্ট এই গুরুত্বপূর্ণ রূপান্তরের পর্যায়ে-ব্যাংকটেক (ব্যাংকিং প্রযুক্তি) ওয়েভ-৫ এর মাধ্যমে ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ডিজিটাল এন্টারপ্রাইজে রূপান্তরের সুযোগ দিয়ে থাকে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক দেবদুলাল রায় বলেন, “ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোর জন্য অনেক সুযোগ এনেছে। ডিজিটাল প্রযুক্তির শক্তিকে কাজে লাগানোর মাধ্যমে ব্যাংকগুলো শুধু গ্রাহকদের অভিজ্ঞতাই বাড়ায় না, বিভিন্ন ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনায় দক্ষও করে তোলে। যেখানে স্থানীয় পর্যায়ের লোকজন প্রচলিত ব্যাংকের শাখাগুলোতে যাওয়ার সুযোগ কম পান সেখানে ডিজিটাল প্লাটফর্ম মানুষকে সুবিধাজনকভাবে তাদের আর্থিক লেনদেন পরিচালনা করার এবং এ বিষয়ে অভিজ্ঞ হয়ে উঠার সুযোগ দেয়।”

অর্থসূচক/এমএইচ/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.