দশ ব্যাংকের ট্রেজারি প্রধানের ডলার কারচুপির জরিমানা ‘মাফ’

বাংলাদেশ ব্যাংকের পর্ষদ সভায় সিদ্ধান্ত

গত বছর মার্কিন ডলারের দর কারচুপির অভিযোগে ১০ ব্যাংকের ট্রেজারি প্রধানকে জরিমানা করেছিলো বাংলাদেশ ব্যাংক। এরপর ওই ট্রেজারি প্রধানরা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে জরিমানা মওকুফের আবেদন করে। অবশেষে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোর ট্রেজারি বিভাগের প্রধানদের জরিমানা মওকূফ করেছে আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা।

মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালকদারের সভাপতিত্বে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের ৪৩৩ তম সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এদিন বৈঠকে উপস্থিত একাধিক সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

একই সঙ্গে পরবর্তিতে একই ধরণের অপরাধ না করার শর্ত উল্লেখ পূর্বক তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সতর্কতাও জারি করা হয়েছে।

এবিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানতে পারেননি তিনি।

সূত্র জানায়, চলতি অর্থ বছরের পঞম সভায় এ বিষয়ে প্রস্তাব উপস্থান করলে গভর্নরের সম্মতিতে ১০ ব্যাংকের প্রত্যেক ট্রেজারিপ্রধানকে এক লাখ টাকা করে জরিমানা মওকূফ করা হয়। তবে কেউ যেন এমন অপরাধের পুনরাবৃত্তি না ঘটায় এবং ডলার বাজারকে অস্থিতিশীল না করে সে বিষয়ে কড়া সতর্কতা জারির কথা জানায় সভার সদসবৃন্দ। এর আগেরও ছয় বাংকের ট্রেজারি বিভাগের প্রধানকে মাফ করে দিয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

সূত্র আরও জানায়, শাস্তি মওকূফ পাওয়া ব্যাংকের মধ্যে রয়েছে ব্র্যাক ব্যাংক, মধুমতি ব্যাংক, মার্কেন্টাইল ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক, মিডল্যান্ড ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক ও ট্রাস্ট ব্যাংক।

এর আগে গত ৩ সেপ্টেম্বর অভিযোগ জানিয়ে প্রথম চিঠি পাঠায় বাংলাদেশ ব্যাংক। মূলত বেশি দামে ডলার বেচাকেনার দায় ট্রেজারিপ্রধানেরা এড়াতে পারেন এবং ব্যাংকগুলোর ‘ব্যাখ্যা সন্তোষজনক হয়নি বলে প্রত্যেক ব্যাংকের ১০ জন ট্রেজারি প্রধানকে জরিমানা করার সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

এর আগেও ব্রাক ব্যাংক, ডাচ্- বাংলা ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, স্টান্ডার্ড চার্টার্ড, প্রাইম ব্যাংকের ট্রেজারি বিভাগের প্রধানদেরকে জারমিনা মওকূফ করা হয়েছিল।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরামর্শে গত বছরের শেষ প্রান্তিক থেকে বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনকারী ব্যাংকগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা) এবং ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীদের সংগঠন এবিবি ডলারের দাম নির্ধারণ করছে। খাদ্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে ভোগ্যপণ্য আমদানিকারক একটি গ্রুপ সম্প্রতি সরকারের উচ্চপর্যায়ে আমদানি ব্যয় উল্লেখ করে একগুচ্ছ নথিপত্র জমা দেয়। এসব নথি পরে বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠিয়ে এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়। এরপর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একাধিক দল অভিযুক্ত ব্যাংকগুলোর শাখা ও প্রধান কার্যালয় পরিদর্শন করে।

জানা গেছে, ব্যাংক কোম্পানি আইনের ১০৯ (৭) ধারা অনুযায়ী জরিমানা করেছে বাংলাদেশ বাংক। জরিমানার অর্থ শাস্তি ঘোষনার ১৪ দিনের মধ্যে র্থ পরিশোধ করতে বলা হয়েছিল। দশটি ব্যাংকের ট্রেজারিপ্রধানের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হলেও ব্যাংকগুলোর বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ব্যাংক অবশ্য কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।

অর্থসূচক/ মো. সুলাইমান

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.