ইউরোপ থেকে আরও সহায়তা পাচ্ছে ইউক্রেন

ইউক্রেনের জন্য সামরিক সহায়তার পথ আরো সুগম করতে ইইউ বিশেষ তহবিলে বাড়তি অর্থ জমা করছে৷ ফলে যুদ্ধক্ষেত্রে দেশটির অস্ত্র ও গোলাবারুদের ঘাটতি কিছুটা পূরণ হবে বলে আশা করা হচ্ছে৷

জানা গেছে, মার্কিন প্রশসান ইউক্রেনের জন্য অবশেষে ৩০ কোটি ডলার অংকের সামরিক সহায়তা পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়ার ঠিক পরেই ইউরোপীয় ইউনিয়নও নতুন সহায়তার সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ ২০২২ সালে রাশিয়ার হামলা শুরু হওয়ার পর ইইউ ইউক্রেনের জন্য অস্ত্র কেনার লক্ষ্য যে বিশেষ তহবিল গঠন করেছিল, এবার তার জন্য আরো ৫০০ কোটি ইউরো ধার্য করলো সদস্য দেশগুলি৷ ফলে যুদ্ধক্ষেত্রে কোণঠাসা ইউক্রেনের সেনাবাহিনী কিছু অস্ত্র ও গোলাবারুদ হাতে পাবে বলে আশা করা হচ্ছে৷

রাষ্ট্রজোট হিসেবে ইইউ সরাসরি প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় করতে পারে না৷ কিন্তু দুই বছর আগে ইউরোপে রাশিয়ার আগ্রাসনের মুখে নিজস্ব বাজেটের বাইরে নীতিগতভাবে ‘ইউরোপিয়ান পিস ফেসিলিটি’ বা ইপিএফ নামের এক তহবিল কাজে লাগানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ইইউ৷ ইউক্রেন যুদ্ধের আগে আফ্রিকার কিছু দেশের জন্য সেই তহবিল থেকে সহায়তা করা হয়েছিল৷ যুদ্ধের শুরু থেকে এই তহবিলের মাধ্যমে ‘পরোক্ষভাবে’ ইউক্রেনের জন্য প্রায় ৬১০ কোটি ইউরো অংকের সামরিক সহায়তা পাঠানো হয়েছে৷ সদস্য দেশগুলি ইউক্রেনকে যে অস্ত্র ও গোলাবারুদ পাঠিয়েছে, সেই ব্যয়ের কিছু অংশ ইপিএফ তহবিল থেকে ফেরত দেওয়া হয়েছে৷

উল্লেখ্য, ২০২২ সালে রাশিয়ার হামলা শুরুর পর থেকে ইইউ দেশগুলি ইউক্রেনকে প্রায় ২,৮০০ কোটি ইউরো অংকের সামরিক সহায়তা দিয়েছে৷

ইউরোপীয় ইউনিয়নের অনেক বিষয়ের মতো ইপিএফ তহবিল নিয়েও সদস্য দেশগুলির মধ্যে ঐকমত্যের অভাব দেখা দিয়েছিল৷ বিশেষ করে ফ্রান্স ও জার্মানির সংঘাতের কারণে বেশ কিছুকাল সেই তহবিল কার্যত অকেজো হয়ে ছিল৷ রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ দেশ হিসেবে হাঙ্গেরিও নানা বাধা সৃষ্টি করছিল৷ সে দেশ ইউক্রেনকে আদৌ কোনো সামরিক সহায়তা পাঠাতে রাজি নয়৷ জার্মানি ইউক্রেনের জন্য দ্বিপাক্ষিক সামরিক সাহায্যের স্বীকৃতির দাবি করলেও ফ্রান্স শুধু ইউরোপে তৈরি অস্ত্রের জন্য সেই তহবিল ব্যবহারের উপর চাপ দিচ্ছিলো৷ অবশেষে দুই দেশই আপোশ মীমাংসা মেনে নেওয়ায় তহবিলের অংক বাড়ানো সম্ভব হয়েছে৷

ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী ডেনিস স্মিহাল ইউরোপ বাড়তি অর্থ ধার্য করায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন৷ তিনি ইইউ-র পররাষ্ট্র বিষয়ক প্রধান জোসেপ বরেলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন৷ তবে তহবিলে বাড়তি অর্থ সত্ত্বেও ইউক্রেন কার্যক্ষেত্রে ইউরোপ থেকে কত দ্রুত অস্ত্র ও গোলাবারুদ হাতে পাবে, সে বিষয়ে সংশয় থেকে যাচ্ছে৷ এক বছর আগে ইইউ চলতি মাসের মধ্যে দশ লাখ গোলাবারুদের প্রতিশ্রুতি দিলেও উৎপাদনের ক্ষেত্রে ঘাটতির কারণে তা পালন করা সম্ভব হয়নি৷

চেক প্রজাতন্ত্রের নেতৃত্বে ১৮টি দেশ ইইউ-র বাইরে থেকে গোলাবারুদ কেনার যে উদ্যোগ নিয়েছে, তার আওতায় তিন লাখ কামানের গোলা কেনা হচ্ছে৷ কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ইউক্রেন সেগুলি হাতে পাবে বলে চেক প্রশাসন আশা করছে৷ আগামী সপ্তাহে ইইউ শীর্ষ নেতারা ইউরোপের নিজস্ব প্রতিরক্ষা শিল্পক্ষেত্রকে চাঙ্গা করা ও ইউক্রেনের জন্য আরো সহায়তার বিষয়ে ব্রাসেলসে আলোচনা করবেন৷ সূত্র: ডিডাব্লিউ, এএফপি, ডিপিএ

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.