হ্যাটট্রিক ফাইনালে কুমিল্লা

হৃদয়ের ঝড়ো হাফ সেঞ্চুরি ও লিটনের ৮৩ রানের ওপর ভর করে ৬ উইকেটের জয়ে টানা তৃতীয় ফাইনাল নিশ্চিত করে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। যদিও ১৮৬ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে ইনিংসের প্রথম বলেই হোঁচট খায় কুমিল্লা। ফজলহক ফারুকির বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে রানের খাতা খোলার আগেই সাজঘরে ফেরেন সুনিল নারিন। তবে নারিনের ধাক্কা কুমিল্লার ওপর বোঝা হতে দেননি লিটন-হৃদয়।

উল্টো আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করে রংপুরকে চাপে ফেলে দেন হৃদয়। ইনিংসের পঞ্চম ওভারে ছক্কা-চারের সুবাদে হাসান মাহমুদের বিপক্ষে ২২ রান নেন হৃদয়। অপরপ্রান্তে থাকা লিটনও স্কোরবোর্ডে রান যোগ করতে থাকেন। এই দুজনের ব্যাটে পাওয়ার প্লে’তে ১০ রান রেটে ৬১ রানের পুঁজি পায় কুমিল্লা। পাওয়ার প্লে’তে দলকে ভালো অবস্থানে রেখে অবশ্য থামেননি দুজন। রংপুরের বোলারদের বেধড়ক পিটিয়ে ৩১ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন হৃদয়। এই জুটিতে রংপুরকে চাপে ফেলে ১১তম ওভারে দলীয় রান ১০০ পূরণ করে কুমিল্লা।

খানিক পর লিটনও পৌঁছে যান হাফ সেঞ্চুরিতে। ৩৮ বলে লিটন পৌঁছে যান মাইলফলকে। বড় লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নামা কুমিল্লার শেষ ৬ ওভারে প্রয়োজন ছিল ৫৩ রান, হাতে ছিল ৯ উইকেট। তবে ১৫তম ওভারে এসে আবু হায়দার রনির ওপর চড়াও হতে গিয়ে স্লোয়ার ডেলিভারিতে সাকিব আল হাসানের হাতে ক্যাচ দিয়ে বসেন হৃদয়। বাড়তি আক্রমণাত্মক হতে গিয়ে উইকেট ছুঁড়ে দেন এই ব্যাটার। ৪৩ বলে ৬৪ রানের ইনিংস খেলে ফেরেন হৃদয়। শেষ ৫ ওভারে কুমিল্লার জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ৪৩ রান। এরপর জনসন চার্লসকে নিয়ে দলকে জয়ের দিকে টেনে নিতে থাকেন লিটন। এক পর্যায়ে ২৪ বলে মাত্র ৩০ রানের প্রয়োজন দাঁড়ায় কুমিল্লার।

এই অবস্থায় ১৭তম ওভার চলাকালীন ৩ বলে ১০ রান করে ফজলহক ফারুকির দ্বিতীয় শিকার হয়ে বিদায় নেন চার্লস। এরপর মঈন আলীকে নিয়ে দলকে জয়ের পথে নিতে থাকেন লিটন। কিন্তু শেষের দিকে এসে শেখ মাহেদিকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ৫৭ বলে ৮৩ রান করে ফেরেন লিটন। সেসময় কুমিল্লা জয় থেকে মাত্র অল্প রান দূরে। মঈন আলী ও আন্দ্রে রাসেল মিলে হেসে-খেলে কুমিল্লার জয় নিশ্চিত করেন। ৬ উইকেটের জয়ে নিজেদের পঞ্চম ও টানা তৃতীয় ফাইনাল নিশ্চিত করে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স।

এদিকে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভালোই করে রংপুর। ব্যাটিং অর্ডারে প্রমোশন দেওয়া হয়েছিল শামিম হোসেনকে। ইনিংস ওপেন করতে নেমে পুরোপুরি ফ্লপ এই তরুণ ব্যাটার। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারের দ্বিতীয় বলে তানভির ইসলামকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে সহজ ক্যাচ দিয়েছেন আন্দ্রে রাসেলের হাতে। ২ বল খেলে ০ রানে ফেরেন শামিম।

সুবিধা করতে পারেননি আরেক ওপেনার রনি তালুকদারও। ১১ বলে ১৩ রান করেছেন তিনি। দ্রুত দুই ওপেনার ফেরার পর একই পথে হেটেছেন সাকিব আল হাসান। তিনে নেমে ৯ বল খেলে মাত্র ৫ রান করেছেন এই অভিজ্ঞ ব্যাটার। ২৭ রানে টপ অর্ডারের তিন ব্যাটারকে হারিয়ে যখন ধুঁকছিল দল তখন হাল ধরেন জিমি নিশাম। চতুর্থ উইকেটে শেখ মেহেদিকে সঙ্গে নিয়ে ৩৯ রানের জুটি গড়েন এই কিউই। ২২ রান করে মেহেদি ফেরার পর ভাঙে সেই জুটি। আসরে প্রথম খেলতে নেমে ভালোই শুরু করেছিলেন নিকোলাস পুরাণ। তবে ইনিংস বড় করতে পারেননি।

এই ক্যারিবিয়ান হার্ডহিটারের ব্যাট থেকে ৯ বলে এসেছে ১৪ রান। আর শেষদিকে ২৪ বলে ৩০ রানের ইনিংসে নিশামকে সঙ্গে দিয়েছেন নুরুল হাসান সোহান। নিশাম এদিন তার বিপিএল সেরা ইনিংস খেলেছেন। শেষ ওভারে মুশফিক হাসানের ওপর তান্ডব চালিয়েও ছুঁতে পারেননি শতক। শেষ পর্যন্ত ৪৯ বলে ৯৭ রান করে অপরাজিত ছিলেন এই কিউই। ১৮৫ রানে থামে রংপুরের ইনিংস।

 

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.