রমজানের আগে ভোগ্যপণ্যের আমদানি কমেছে ১৭ শতাংশ

মূল্যস্ফীতি ও বিদেশি ঋণ পরিশোধে চাপে রয়েছে দেশের অর্থনীতি। এরসঙ্গে রয়েছে দীর্ঘদিনের ডলার সংকট। এর ফলে রমজান উপলক্ষে ব্যবসায়ীরা পণ্য আমদানির পর্যাপ্ত ঋণপত্র খুলতে পারছে না। এমন পরিস্থিতির মধ্যে চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে বিভিন্ন ধরনের পণ্য আমদানিতে ঋণপত্র বা এলসি খোলা কমছে। এসময় ভোগ্যপণ্যের এলসি খোলা কমেছে ১৬ দশমিক ৯২ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।

তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) ভোগ্যপণ্যের এলসি খোলা হয়েছে ৩৯৭ কোটি ৯৮ লাখ ডলারের। যা এর আগের অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৮১ কোটি ডলার বা ১৬ দশমিক ৯২ শতাংশ কম। গত অর্থবছরের একই সময়ে ভোগ্যপণ্যের এলসি খোলা হয়েছিলো ৪৭৯ কোটি ডলারের।

সাম্প্রতিক ডলার সংকটের প্রভাবে ভোগ্যপণ্যের এলসি খোলা কমার পাশাপাশি পুরনো এলসির দায় পরিশোধও কমেছে। আলোচ্য জুলাই-জানুয়ারি সময়ে আগের এলসি নিষ্পত্তি কমেছে ২০ দশমিক ১৯ শতাংশ। গত বছরের একই সময়ে এলসি নিষ্পত্তি কমেছিল ১১ দশমিক ৩৭ শতাংশ। এসময় সবচেয়ে বেশি এলসি নিষ্পত্তি কমেছে মূলধনী যন্ত্রপাতির, যা ২৬ দশমিক ৫৫ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, আলোচ্য সময়ে এলসি খোলা কমার তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ইন্টারমিডিয়েট গুডস বা শিল্পের জন্য মধ্যবর্তী পণ্য। এসময় ইন্টারমিডিয়েট গুডসের এলসি খোলা হয় ২৬১ কোটি ১৮ লাখ ডলারের। আগের অর্থবছরের একই সময় এই পণ্য আমদানির জন্য ৩০৫ কোটি ১১ লাখ ডলারের এলসি খোলা হয়। অর্থাৎ পণ্যটির এলসি খোলা কমেছে ১৪ দশমিক ৪০ শতাংশ।

এ তালিকার তৃতীয় স্থানে রয়েছে জ্বালানি পণ্য। জুলাই-জানুয়ারি পর্যন্ত সময়ে পণ্যটির এলসি খোলা হয়েছে ৫৩৮ কোটি ৭৫ লাখ ডলারের। এর আগের বছরের একই সময়ে ৫৮৯ কোটি ৯০ লাখ ডলারের এলসি খোলা হয়। এই সময়ে পণ্যটির এলসি খোলার পরিমাণ কমেছে ৮ দশমিক ৬৭ শতাংশ।

সম্প্রতি বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) জানায়, অর্থপাচারের ৮০ শতাংশ হয় আমদানি-রপ্তানির আড়ালে। ব্যাংকিং চ্যানেলে ‘আন্ডার ও ওভার ইনভয়েসের’ মাধ্যমে এসব অর্থপাচার হয়। ব্যাংক যদি এটি বন্ধে সহযোগিতা না করে তাহলে নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন।

ডলার সংকটের কারণে খারাপ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর মধ্যেও অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটাতে ডলার বিক্রি অব্যাহত রেখেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আমদানি পরিস্থিতি ঠিক রাখার পাশাপাশি অন্যান্য প্রয়োজনে বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে প্রায় ৯০০ কোটি ডলার বিক্রি করা হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, দেশের মোট বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এখন ২ হাজার ৫৩২ কোটি ডলার। যদিও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) বিপিএম-৬ ম্যানুয়াল অনুযায়ী, দেশে রিজার্ভ এখন ২ হাজার ১৯ কোটি ডলার।

অর্থসূচক/এমএইচ/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.