মসজিদ ভেঙে দিলেও আল্লাহর পথ বন্ধ হবে না: ফারুক আবদুল্লাহ

ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও ন্যাশনাল কনফারেন্সের প্রধান ডা. ফারুক আবদুল্লাহ বলেছেন, আপনি যত মন্দির তৈরি করতে পারেন- করুন, যত মসজিদ ভেঙে ফেলতে যান ভাঙুন, কিন্তু তাতে আল্লাহর পথ বন্ধ হবে না।

উত্তর প্রদেশের অযোধ্যায় বহুলালোচিত রাম মন্দির নির্মাণের পর এবার মথুরা-কাশী নিয়ে যে দাবি তোলা হচ্ছে, সে বিষয়ে তিনি গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এভাবে তার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।

আজ কুরআন ও সংবিধান প্রসঙ্গে প্রশ্নের জবাবে ফারুক আবদুল্লাহ বলেন, সংবিধান পরিবর্তন করতে পারবেন, কিন্তু কুরআন পরিবর্তন করতে পারবেন না। এতে একটা অধ্যায়, একটা আয়াত, এমনকি একটা কমাও পরিবর্তন করা যায় না।

কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা অপসারণের ফলে কিছু পরিবর্তন হয়েছে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে জম্মু-কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আব্দুল্লাহ বলেন, এ বিষয়ে এখন কী বলব? যদি পরিবর্তনই হতো, তাহলে এখানে নির্বাচন হলো না কেন? কেন্দ্রীয় সরকারকে টার্গেট করে তিনি বলেন, তারা নির্বাচনের ঘোষণা দিলেও তা হয়নি তার কারণ কী? আমি বুঝতে পারছি না কেন তারা ৩৭০ এর গুণগান গাইছে। তারা এটিকে একটি ইস্যু করেছে। কংগ্রেস আগেই এটিকে সংক্ষিপ্ত (কাটছাঁট) করেছে (৩৭০ ধারা)। তাতে আর কিছুই অবশিষ্ট ছিল না।

বিজেপির পক্ষ থেকে কাশ্মীরে শান্তির দাবি প্রসঙ্গে ডা. ফারুক আবদুল্লাহ প্রশ্ন করেন সন্ত্রাস কী শেষ হয়েছে? এত সেনার উপর হামলা হয়েছে। আমাদের সেনা কর্মকর্তারা শহীদ হয়েছেন। সন্ত্রাসী হামলায় আমাদের পুলিশ সদস্য ও কর্মকর্তারা শহীদ হচ্ছেন। তারা কোথায়? এটি একটি রাজনৈতিক বিষয়। এতে জনগণ ভোট দেবে বলে তারা (বিজেপি) মনে করে। কিন্তু বলুন তো, এই দাবিতে আমি কী করতে পারি।

বহুলালোচিত ‘অভিন্ন দেওয়ানি বিধি’ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ভারতে অনেক ধর্ম আছে। আদিবাসীদের নিজস্ব স্বতন্ত্র পদ্ধতি রয়েছে। ‘অভিন্ন দেওয়ানি বিধি’ এলে তখনই জানা যাবে মানুষের প্রতিক্রিয়া কেমন বলেও মন্তব্য করেন জম্মু-কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও ন্যাশনাল কনফারেন্সের প্রধান ডা. ফারুক আবদুল্লাহ।

প্রসঙ্গত, ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর উত্তর প্রদেশের অযোধ্যায় কয়েক শ’ বছরের পুরোনো বাবরি মসজিদ প্রকাশ্য দিবালোকে গুঁড়িয়ে দিয়েছিল ‘করসেবক’ নামধারী উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা। তাদের বিশ্বাস সেটি তাদের ভগবান রামের জন্মভূমি। ওই ইস্যুতে দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের শেষে আদালতের রায়ে সেখানে গড়ে উঠেছে বিশাল রাম মন্দির। এবার কাশীর জ্ঞানবাপী মসজিদ এবং মথুরার শাহী ঈদগাহ মসজিদের বিষয়টি আলোচনায় রয়েছে।

তাদের দাবি- এসব জায়গায় আগে মন্দির ছিল। বিষয় দুটি আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। শ্রী রাম জন্মভূমি ট্রাস্টের কোষাধ্যক্ষ, গোবিন্দ দেব গিরি মহারাজ বলেছেন, মুসলিম পক্ষ যদি জ্ঞানবাপী এবং (শাহী ঈদগাহ মসজিদ) কৃষ্ণ জন্মভূমি হিন্দুদের কাছে হস্তান্তর করে, তবে অন্য সমস্ত স্থানগুলো ভুলে যাবে।

সুপ্রিম কোর্টে উপাসনার স্থান আইনের বিরুদ্ধে আবেদনকারী অশ্বিনী উপাধ্যায়ের দাবি- দেশে এমন ৯০০ মন্দির রয়েছে যেগুলো ১১৯২ থেকে ১৯৪৭ সালের মধ্যে ভেঙে ফেলা হয়েছিল এবং তারপরে তাদের জমি দখল করা হয়েছিল এবং সেখানে মসজিদ বা গির্জা তৈরি করা হয়েছিল। খবর- পার্সটুডে

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.