ইউসিবির অর্থায়নে তামাকের পরিবর্তে গম চাষের বিশেষ প্রকল্প পরিদর্শন

ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি) পিএলসির ‘ভরসার নতুন জানালা’ শীর্ষক কৃষি সহায়তামূলক প্রকল্প পরিদর্শন করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু ফরাহ মো. নাছের।

শুক্রবার (৯ অক্টোবর) ইউসিবির অর্থায়নে লালমনিরহাটের পূর্ব হরিণচড়ায় পল্লী উন্নয়ন একাডেমি, বগুড়ার চর উন্নয়ন গবেষণা কেন্দ্র (সিডিআরসি) কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পের অগ্রগতি পরিদর্শনে যান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ইউসিবি’র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ। প্রকল্প পরিদর্শনে গিয়ে প্রধান অতিথি হিসেবে ডেপুটি গভর্নর প্রকল্প এলাকায় নতুন সৌর সেচ পাম্প ও কৃষকদের জন্য বিশ্রাম ছাউনি উদ্বোধন করেন।

দেশে খাদ্য নিরাপত্তা ও উন্নত পুষ্টিমান নিশ্চিত করার পাশাপাশি জলবায়ু-সহিষ্ণু টেকসই কৃষির প্রসার ঘটাতে সক্রিয় ভূমিকা রাখার লক্ষ্য নিয়ে গত বছরের শুরুতে ‘ভরসার নতুন জানালা’ শীর্ষক উদ্যোগ গ্রহণ করে ইউসিবি পিএলসি। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী নিজেদের করপোরেট সামাজিক দায়িত্বের (সিএসআর) অংশ হিসেবে এ উদ্যোগ নেয় প্রতিষ্ঠানটি।

মাঠ পরিদর্শনকালে স্থানীয় উপকারভোগী কৃষকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু ফরাহ মো. নাছের বলেন, “টেকসই উপায়ে কৃষি উৎপাদন ব্যবস্থা একইসাথে যেমন পরিবেশ সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে, তেমনি খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রেও উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবে। তামাক চাষ অধ্যুষিত এ অঞ্চলে কৃষকরা এখন গম ও ভুট্টা চাষ করছে। এটা অত্যন্ত ইতিবাচক একটি বিষয়। ইউসিবি গৃহীত এ উদ্যোগের মাধ্যমে আমাদের কৃষকরা যেমন নানাভাবে লাভবান হচ্ছেন, তেমনি এ উদ্যোগ কৃষিখাতের উন্নয়নের মাধ্যমে স্বনির্ভর বাংলাদেশ গঠনে অবদান রাখছে। দেশে কৃষিখাতের প্রবৃদ্ধিতে বেসরকারি খাতের এগিয়ে আসার ক্ষেত্রে অন্যান্যদের জন্য উদাহরণ তৈরি করছে ইউসিবি। তাদের উদ্যোগকে আমি সাধুবাদ জানাই।”

মতবিনিময় সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মো: আনোয়ারুল ইসলাম, ইউসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও আরিফ কাদরী, অতিরিক্তি ব্যবস্থাপনা পরিচালক এটিএম তাহমিদুজ্জামান, আরডিএর যুগ্ম পরিচালক ড. আবদুল মজিদ প্রামাণিক, বাংলাদেশ টেলিভিশনের মাটি ও মানুষ অনুষ্ঠানের উপস্থাপক ও কৃষি তথ্য বিশ্লেষক রেজাউল করিম সিদ্দিকসহ ইউসিবি ও আরডিএ’র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।

ইউসিবি ও আরডিএ কর্তৃক যৌথভাবে বাস্তবায়নাধীন এ প্রকল্পের অধীনে তামাক চাষ অধ্যুষিত এ এলাকার একশ একর জমিতে গম উৎপাদন শুরু করেন কৃষকরা। দেশের উত্তরাঞ্চলের জলবায়ু ঝুঁকিতে থাকা কৃষক পরিবারদের গম ও ভুট্টা উৎপাদন কর্মসূচির মাধ্যমে সার ও সেচসহ উৎপাদন-সংশ্লিষ্ট উপকরণ সহায়তা দান, কৃষকদের তামাক চাষে নিরুৎসাহিত করা এবং তাদের কারিগরি প্রশিক্ষণ প্রদান ও পরিবারের সদস্যদের জীবনমান উন্নয়নের উদ্দেশ্যে এ প্রকল্পের বাস্তবায়ন শুরু হয়।

উল্লেখ্য, লালমনিরহাট ছাড়াও রংপুর ও গাইবান্ধায় এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে ইউসিবি। প্রকল্পে কৃষকদের বীজ, সার, কীটনাশক, ড্রাইং ম্যাট এবং মাড়াই যন্ত্রসহ প্রয়োজনীয় কৃষিযন্ত্রের পাশাপাশি প্রশিক্ষণ ও বুকলেট দেয়া হয়। এ প্রকল্পের প্রাথমিক প্রাক্কলন অনুযায়ী, এ কর্মসূচি বাস্তবায়নের ফলে প্রায় চারশ মেট্রিক টনেরও বেশি গম এবং প্রায় আড়াই শ মেট্রিক টন ভুট্টা উৎপাদিত হবে, যার মাধ্যমে কৃষকদের সম্ভাব্য আয় হবে ২ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।

অর্থসূচক/ এইচএআই

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.